ধর্ষণের মিথ্যা মামলার বিষয়ে সতর্ক করল দিল্লি হাই কোর্ট। —প্রতীকী চিত্র।
ধর্ষণের মিথ্যা মামলা দায়ের হওয়ার প্রবণতা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে মনে করছে দিল্লি হাই কোর্ট। এই ধরনের ভুয়ো মামলা এবং সমাজে তার বিরূপ প্রভাব নিয়ে সম্প্রতি উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আদালত। হাই কোর্টের বিচারপতি গিরিশ কাঠপলিয়ার পর্যবেক্ষণ, এই ধরনের ভুয়ো মামলার বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করা প্রয়োজন। আদালত মনে করছে, এই ভুয়ো মামলাগুলি শুধুমাত্র অভিযুক্তেরই ক্ষতি করে না, যিনি সত্যিই যৌন নিগ্রহের শিকার হয়েছেন, তাঁর পক্ষেও ক্ষতিকর।
আইনি খবর পরিবেশনকারী ওয়েবসাইট ‘বার অ্যান্ড বেঞ্চ’ অনুসারে, দিল্লির এক উঠতি অভিনেত্রী প্রথমে এক পরিচালকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ তুলেছিলেন। ওই সময় অভিযুক্তের আগাম জামিনের আর্জি খারিজ করে দিয়েছিল হাই কোর্ট। তার পরে গ্রেফতারও হন অভিযুক্ত। কিন্তু পরে অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেন ওই মহিলা। সম্প্রতি ওই মামলায় অভিযুক্তকে জামিন দিয়েছে হাই কোর্ট।
মিথ্যা মামলার প্রবণতা নিয়ে উদ্বিগ্ন হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণ, “সম্প্রতি যৌন নির্যাতনের অভিযোগের মিথ্যা মামলা দায়েরের প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। এটি আরও একটি ঘটনা, যা এই প্রবণতাকে প্রতিফলিত করে। যৌন নিগ্রহের মিথ্যা মামলা শুধুমাত্র অভিযুক্ত ব্যক্তিরই ক্ষতি করে না, বরং সমাজেও নিন্দা এবং অবিশ্বাসের পরিস্থিতি তৈরি করে। এর ফলে যাঁরা সত্যিই যৌন নিগ্রহের শিকার হয়েছেন, তাঁরাও ক্ষতিগ্রস্ত হন। কারণ, তাঁদের অভিযোগকেও মিথ্যা বলে সন্দেহ করা হয়। এই ধরনের মিথ্যা অভিযোগকে কড়া ভাবে মোকাবিলা করতে হবে।”
দিল্লির এই মামলার ক্ষেত্রে প্রথমে অভিযোগকারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে দাবি করেছিলেন। পরে তদন্ত চলাকালীন মহিলা স্বীকার করেন, তাঁকে ধর্ষণ করা হয়নি। অভিযুক্তের সঙ্গে পাঁচ বছর ধরে সম্পর্কে ছিলেন তিনি। অভিযুক্তের বিপক্ষ গোষ্ঠীর কিছু মানুষের প্ররোচনায় তিনি ভুয়ো অভিযোগ জানিয়েছিলেন বলেও পুলিশকে জানান তিনি। আগের অভিযোগ যে মিথ্যা ছিল, সেই মর্মে হাই কোর্টে একটি হলফনামাও জমা দেন তিনি। এই অবস্থায় অভিযুক্তের জামিন মঞ্জুর করেছে আদালত। হাই কোর্টে পুলিশ জানিয়েছে, মিথ্যা মামলা দায়ের করার অভিযোগে ওই মহিলা এবং বাকিদের বিরুদ্ধেও তদন্ত শুরু করেছে তারা।