Sitaram Yechury

সীতারাম ইয়েচুরির বাড়িতে দিল্লি পুলিশের তল্লাশি, বাজেয়াপ্ত ‘নিউজ়ক্লিক’-এর সাংবাদিকের ল্যাপটপ, ফোন

পণ্ডিত রবিশঙ্কর শুক্ল লেনের এই বাড়িটি দলের তরফে সাধারণ সম্পাদকের জন্য বরাদ্দ। সীতারামের সঙ্গেই এই বাড়ির একটি তলায় থাকেন নিউজ়ক্লিক-এর এক সাংবাদিক।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০২৩ ১৩:২৭
Share:

সীতারাম ইয়েচুরি। ফাইল চিত্র।

‘নিউজ়ক্লিক’কাণ্ডে মঙ্গলবার সকালে সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির বাড়িতে তল্লাশি চালাল দিল্লি পুলিশ। যে বাড়িতে পুলিশ তল্লাশি চালিয়েছে, সেটি ৩৬ নম্বর পণ্ডিত রবিশঙ্কর শুক্ল লেন। যেটি আগে ক্যানিং লেন নামেই পরিচিত ছিল।

Advertisement

পণ্ডিত রবিশঙ্কর শুক্ল লেনের এই বাড়িটি দলের তরফে সাধারণ সম্পাদকের জন্য বরাদ্দ। ওই বাড়ি সাধারণত কৃষকসভা এবং এসএফআইয়ের কর্মীদের থাকার জন্যও ব্যবহার করা হয়। এই বাড়ির একটি তলে থাকেন নিউজ়ক্লিক-এর এক সাংবাদিক। ঘটনাচক্রে, সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির দফতরে কাজ করেন যুবকের বাবা শ্রীনারায়ণ। আর সেই সুবাদেই ওই যুবক পণ্ডিত রবিশঙ্কর লেনের এই বাড়িতে থাকেন। যে হেতু নিউজ়ক্লিককাণ্ড নিয়ে রাজধানীর বেশ কিছু জায়গায় তল্লাশি চালাচ্ছে দিল্লি পুলিশ, ইয়েচুরির বাড়িতে ওই যুবকের খোঁজেও তল্লাশিতে এসেছিল পুলিশ। যুবকের ল্যাপটপ এবং মোবাইল বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।

এই তল্লাশি প্রসঙ্গে ইয়েচুরি বলেন, “পুলিশ আমার বাড়িতে তল্লাশি করতে এসেছিল। কারণ ওই বাড়িতে দলীয় এক কর্মী থাকেন। যাঁর পুত্র আবার নিউজ়ক্লিক-এ কাজ করেন। পুলিশ ওঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে এসেছিল। ওই কর্মীর পুত্রের ল্যাপটপ এবং ফোন বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। ওরা কিসের তল্লাশি চালাচ্ছে, কেন চালাচ্ছে, কেউ জানে না। যদি সংবাদমাধ্যমকে দাবিয়ে রাখার চেষ্টা হয়, তা হলে দেশের মানুষের জানা উচিত, এর পিছনে কী কারণ রয়েছে।”

Advertisement

ইয়েচুরির বাড়িতে এই তল্লাশি প্রসঙ্গে আবার সিপিএমের পলিটব্যুরোর সদস্য নীলোৎপল বসু আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, “বিভিন্ন মানুষের বাড়িতে তল্লাশি চালাচ্ছে ওরা। সাংবাদিক, স্ট্যান্ডআপ কমেডিয়ানদের বাড়িতেও তল্লাশি চালানো হয়েছে। কী অভিযোগে তল্লাশি চালানো হচ্ছে স্পষ্ট নয়।”

নিউজ়ক্লিক-এর সঙ্গে যুক্ত এমন অনেক সাংবাদিকের বাড়িতেই তল্লাশি অভিযান শুরু করেছে দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেল। আর্থিক তছরুপ এবং চিনকে সমর্থন করে এমন কিছু লেখা প্রকাশ করার অভিযোগে নিউজ়ক্লিক-এর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছিল এনফোর্সমেন্ট ডায়েরক্টরেট (ইডি)। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে মঙ্গলবার সকাল থেকে এই সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে জড়িত বহু সাংবাদিক এবং কর্মীর বাড়িতে তল্লাশি চালায় দিল্লি পুলিশ।

‘দ্য ওয়্যার’-এ প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ বছরের ১৭ অগস্টে ভারতীয় দণ্ডবিধির ইউএপিএ আইনের একাধিক ধারায় মামলা রুজু হয়। দিল্লি ছাড়াও উত্তরপ্রদেশের নয়ডা এবং গাজ়িয়াবাদেও ৩০টিরও বেশি জায়গায় এ দিন তল্লাশি অভিযান চালিয়েছে দিল্লি পুলিশ। ইডির কাছ থেকে তথ্য পেয়েই এই অভিযান চালিয়ে বেশ কিছু বৈদ্যুতিন গ্যাজেট, ফোন, হার্ড ডিস্ক বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বলে দিল্লি পুলিশ সূত্রে খবর। বেশ কিছু সাংবাদিককে লোধি রোডের স্পেশাল সেলের দফতরেও নিয়ে আসা হয় বলে পুলিশ সূত্রে খবর।

নিউজ়ক্লিক-এর বর্তমান এবং প্রাক্তন সাংবাদিক, কর্মী এবং এই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত অনেকের বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয় বলে ‘দ্য ওয়্যার’-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন, অনুরাধা রমন, সত্যম তিওয়ারি, অদিতি নিগম, সুমেধা পাল-সহ আরও অনেকে।

দিল্লি পুলিশের এক সূত্রের খবর, সোমবার এই তল্লাশি নিয়ে স্পেশাল সেলের শীর্ষ আধিকারিকরা বৈঠকে বসেছিলেন। কী ভাবে, কোথায়, কখন অভিযান চালানো হবে, তা নিয়ে আলোচনা হয় ওই বৈঠকে। পরিকল্পনামতো মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকেই দিল্লি, নয়ডা, গাজ়িয়াবাদ, গুরুগ্রাম এবং মুম্বইয়ে একশোটিরও বেশি জায়গায় তল্লাশি চালানো হয়। এই তল্লাশি অভিযানে মোতায়েন করা হয়েছিল ৫০০ পুলিশকর্মীকে। ওই সূত্রের খবর, যাঁদের বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়েছে তাঁদের তিনটি ক্যাটেগরিতে (এ, বি, সি) ভাগ করা হয়েছিল। ‘এ’ ক্যাটেগরি তালিকায় থাকাদের আটক করা হয়েছে। নিউজ়ক্লিক-এর প্রতিষ্ঠাতা-সম্পাদক প্রবীর পুরকায়স্থকে দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেলের দফতরে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে আসা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন