চিনের সঙ্গে দর কষতে চায় দিল্লি

সম্পর্কের পিচে একাধিক ক্ষত। সীমান্তে চিনা ড্রাগনের উপস্থিতি ক্রমশই উদ্বেগ বাড়াচ্ছে দিল্লির। পাকিস্তানের জঙ্গি কার্যকলাপে চিনা মদতের অভিযোগও বাড়ছে। রুগ্‌ণ হচ্ছে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে ভারতের ভূমিকা। সব মিলিয়ে গ্রহণ লেগেছে ভারত-চিন সম্পর্কে। তাই দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে কিছুটা হলেও সহজ করতে চাইছে নরেন্দ্র মোদী সরকার।

Advertisement

অগ্নি রায়

গুয়ানঝাও শেষ আপডেট: ২৫ মে ২০১৬ ০৩:০৫
Share:

পার্ল নদীতে নৌবিহার। সঙ্গে মেয়ে শর্মিষ্ঠা। নিজস্ব চিত্র

সম্পর্কের পিচে একাধিক ক্ষত। সীমান্তে চিনা ড্রাগনের উপস্থিতি ক্রমশই উদ্বেগ বাড়াচ্ছে দিল্লির। পাকিস্তানের জঙ্গি কার্যকলাপে চিনা মদতের অভিযোগও বাড়ছে। রুগ্‌ণ হচ্ছে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে ভারতের ভূমিকা। সব মিলিয়ে গ্রহণ লেগেছে ভারত-চিন সম্পর্কে। তাই দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে কিছুটা হলেও সহজ করতে চাইছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। সেই সঙ্গে চতুর্দিক থেকে ভারতকে ঘিরে ফেলতে মরিয়া এশিয়ার এই প্রবল শক্তিধর দেশটিকে কিছুটা পাল্টা বার্তা দেওয়ারও চেষ্টা করছে সাউথ ব্লক। সেই লক্ষ্যেই আজ সন্ধ্যার মুখে দক্ষিণ চিনের প্রাচীন বাণিজ্যনগরী গুয়ানঝাও-এর টারম্যাক ছুঁল রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের বিমান।

Advertisement

“সম্পর্ক ভাল চলছে না একদমই”, বিমানের আওয়াজে ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকের শীর্ষ কর্তার উদ্বেগ ঢাকা পড়ছে না। বলছেন “সমস্যা হল বেজিংয়ের সঙ্গে আমাদের সংঘাত প্রকাশ্যে চলে এলে আশপাশের দেশগুলিও তার সুযোগ নিতে চেষ্টা করে। প্রতিবেশী দেশ থেকে উস্কানি বেড়ে যায়।” এক দিকে নানা ক্ষেত্রে চিন ভারতীয় বিনিয়োগ ঢুকতে দেয়নি তার বাজারে। অন্য দিকে পঠানকোট হামলার মূল চক্রী মাসুদ আজহারকে মদত দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বেজিংয়ের বিরুদ্ধে।

এই দমবন্ধ করা পরিবেশে কতটা স্বস্তির হাওয়া বইয়ে দিতে পারবেন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়? বিদেশ মন্ত্রকের শীর্ষ কর্তার কথায়, “প্রণব মুখোপাধ্যায় নিছক এক জন রাষ্ট্রপতি নন। তাঁর রাজনৈতিক এবং প্রশাসনিক ইতিহাস দীর্ঘ।” বিদেশ, প্রতিরক্ষা মন্ত্রক ও যোজনা কমিশনের দায়িত্বে থাকার সময় চিন সফরে এসেছেন প্রণববাবু। এ বারে তাঁর সফর শুরু হচ্ছে এমন একটি শহর দিয়ে যা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন কূটনীতিকরা। দক্ষিণ চিন সাগরে ভারতীয় নৌসেনার উপস্থিতি নিয়ে চোখ লাল করেছে বেজিং। সেখানে উপকূলবর্তী গুয়াংদং রাজ্যের গুয়ানঝাও-কে বেছে নেওয়া হয়েছে সফরের প্রথম গন্তব্য হিসেবে। প্রায় ৫ হাজার ভারতীয় ব্যবসায়ীর ঠিকানা পার্ল নদীর তীরের এই শহর। ষষ্ঠ শতকে ভারত থেকে এখানে বুদ্ধধর্ম এসেছিল। আর আজ এখান থেকে বিনিয়োগ ভারতে টেনে নিয়ে যাওয়াই লক্ষ্য দিল্লির। প্রবাসী ভারতীয়দের সঙ্গে বৈঠকে এ দিন সেই ডাকই দেন প্রণববাবু। সফরের আগামী তিন দিনে সন্ত্রাসবাদ নিয়ে স্বর তুলবেন ভারতীয় নেতৃত্ব। পাশাপাশি দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে কঙ্কালসার ভারতীয় চেহারাটাও দেখানো হবে। পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, গুজরাত, মহারাষ্ট্র-সহ গোটা দেশের বাজার থইথই করছে চিনা পণ্যে। চিনা মোবাইল, খেলনা এবং নানা ভোগ্যপণ্যের বান ডাকছে। কিন্তু উল্টো দিকে ভারতের রফতানির ছবিটা খুবই রুগ্‌ণ।

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন