একই দিনে জো়ড়া তোপ। নিশানা— মোদী সরকারের অর্থনীতি। আক্রমণে— অটলবিহারী বাজপেয়ীর মন্ত্রিসভার প্রাক্তন সদস্য অরুণ শৌরি এবং এনসিপি প্রধান শরদ পওয়ার।
ক’দিন আগেই মুখ খুলেছিলেন বাজপেয়ী জমানার অর্থমন্ত্রী যশবন্ত সিন্হা। তাঁর প্রাক্তন সতীর্থ শৌরি আজ নোট বাতিলকে ‘বৃহত্তম আর্থিক কেলেঙ্কারি’ আখ্যা দিয়েছেন। তাঁর যুক্তি, এই নোট বাতিল প্রকল্পে যার কাছে যত কালো টাকা ছিল, তার সবটাই তারা ব্যাঙ্কে গিয়ে সাদা করে ফেলেছে।
মুম্বইয়ে পওয়ার আজ বলেছেন, ‘‘নতুন লগ্নি আসছে না। ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ স্লোগান প্রথমে শুনতে খুব আকর্ষণীয় মনে হলেও গোটা বিষয়টা যে অন্তঃসারশূন্য, তা এখন বোঝা যাচ্ছে।’’ পওয়ার মনে করেন, নোট বাতিল এবং জিএসটি চালুর সিদ্ধান্ত নরেন্দ্র মোদী কোনও আগাম প্রস্তুতি ছাড়াই নিয়েছিলেন। তার জন্যই অর্থনীতি এ ভাবে ধাক্কা খেয়েছে।
শৌরি সরাসরি নোট বাতিলকে ‘বোকামি’ বলেছেন। জিএসটি-কে বলেছেন ‘সরকারের ব্যর্থতা’। তাঁর যুক্তি, জিএসটি যে ঠিক ভাবে রূপায়ণ হচ্ছে না তার প্রমাণ হল, তিন মাসে সাত বার নিয়ম বদল। সংসদের সেন্ট্রাল হল-এর অনুষ্ঠানকে কটাক্ষ করে শৌরি বলেন, ‘‘সব থেকে খারাপ হল, ঘটা করে একটা কর সংস্কারকে প্রায় দেশের স্বাধীনতার মর্যাদা দিয়ে ফেলা।’’
অর্থনীতির দুরবস্থার জন্য মোদী এবং অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলিকে দায়ী করেছিলেন যশবন্ত সিন্হা। সেই আক্রমণকে ‘হতাশা’ বলেছিল কেন্দ্র। শৌরির দাবি, ‘‘যে কোনও ভিন্ন মতকেই হতাশা বলে উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। হতাশাগ্রস্ত লোকেদের একটা তালিকা প্রকাশ করা উচিত ওঁদের।’’ বাস্তবে বিজেপিতে অনেকেই তাঁর ও যশবন্তের মতো চিন্তাগ্রস্ত বলে শৌরির দাবি। মোদীকে মহম্মদ বিন তুঘলকের সঙ্গে তুলনা করে আজ শৌরি বলেছেন, ‘‘গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত নিশ্ছিদ্র ঘরে বসে নেওয়া হচ্ছে। আড়াই জন লোক সরকার চালাচ্ছে— নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ ও ঘরের আইনজীবী।’’ ‘ঘরের আইনজীবী’ কটাক্ষের লক্ষ্য যে জেটলি, তা-ও বুঝিয়ে দিয়েছেন শৌরি। বলেছেন, ওঁকে সকাল থেকে কোনও সিদ্ধান্তের পক্ষে দাঁড়ানো, কোনও বিষয় থেকে নজর ঘোরানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়। সারাদিন তা নিয়েই ব্যস্ত থাকেন।’’
ও দিকে, পওয়ার আজ বলেছেন, কাশ্মীর সমস্যার সমাধানে সরকারের উচিত আলোচনায় গুরুত্ব দেওয়া। মুম্বই-অমদাবাদ বুলেট ট্রেন চালুর ঘোষণাও অবাস্তব বলে দাবি করেন তিনি। বলেন, মুম্বইয়ের সঙ্গে দিল্লি, চেন্নাই বা কলকাতার মতো শহরের বুলেট ট্রেনের প্রয়োজন।