ডেরা প্রধানের রায় ঘিরে চূড়ান্ত সতর্কতা দুই রাজ্যে

হরিয়ানা ও পঞ্জাবে ডেরা প্রধানের অনুগামীর সংখ্যা প্রচুর। তাঁর ডাকে রাস্তায় নামেন লক্ষ লক্ষ মানুষ। অনুগামীরা ইতিমধ্যেই দলে দলে পাঁচকুলায় ভিড় করতে শুরু করেছেন। আদালতের রায় বাবা-র বিপক্ষে গেলে দুই রাজ্যেই আগুন জ্বলতে পারে বলে আশঙ্কা।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

চণ্ডীগড় শেষ আপডেট: ২৫ অগস্ট ২০১৭ ০৩:৫৯
Share:

গুরমিত রাম রহিম সিংহ। নিজের বিরুদ্ধে ওঠা ধর্ষণের অভিযোগ অস্বীকার করছেন তিনি। কিন্তু আদালত কী মনে করছে, তা শুক্রবারই স্পষ্ট হবে। —ফাইল চিত্র।

ধর্মীয় সংগঠন ডেরা সাচা সৌদার প্রধান গুরমিত রাম রহিমের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলার রায় আগামিকাল। তার আগে টানটান পঞ্জাব ও হরিয়ানা। অতীতে ডেরা অনুগামীদের হিংসায় জড়িয়ে পড়ার বহু নজির রয়েছে। তাই এ বার আর কোনও ঝুঁকি নিতে রাজি নয় কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকার।

Advertisement

ডেরা প্রধান অবশ্য আজ টুইট করে জানিয়েছেন, সিবিআই-এর নির্দেশ অনুযায়ী তিনি শুক্রবার হরিয়ানার পাঁচকুলায় বিশেষ আদালতে হাজিরা দেবেন। বাবা রাম রহিমের বিরুদ্ধে ১৯৯৯ সালে দুই শিষ্যাকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছিল। বার বার বেনামি চিঠিতে অভিযোগ পেয়ে ২০০২ সালে সিবিআই ডেরা-প্রধানের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা রুজু করে। ১৫ বছর পর, শুক্রবার সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে সেই মামলারই রায় ঘোষণা হওয়ার কথা। বাবা রাম রহিম আগেই এই অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেছিলেন। অনুগামীদের শান্তি বজায় রাখতে বলে ডেরা প্রধানের আবেদন, তাঁরা যেন বাড়ি ফিরে যান।

হরিয়ানা ও পঞ্জাবে ডেরা প্রধানের অনুগামীর সংখ্যা প্রচুর। তাঁর ডাকে রাস্তায় নামেন লক্ষ লক্ষ মানুষ। অনুগামীরা ইতিমধ্যেই দলে দলে পাঁচকুলায় ভিড় করতে শুরু করেছেন। আদালতের রায় বাবা-র বিপক্ষে গেলে দুই রাজ্যেই আগুন জ্বলতে পারে বলে আশঙ্কা।

Advertisement

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে দুই রাজ্যের পুলিশকে সব রকম সাহায্য করবে কেন্দ্র। পাঁচকুলা, সিরসা, হিসার ও অন্যান্য কিছু অঞ্চলে নিরাপত্তা বাহিনী টহল দিচ্ছে। পুলিশ সোশ্যাল মিডিয়ার উপরে কড়া নজর রাখছে। কোনও গুজব না ছড়ানোর জন্য জনতাকে অনুরোধ করা হয়েছে। হাসপাতালগুলিতেও কড়া সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

হরিয়ানার অতিরিক্ত মুখ্যসচিব (স্বরাষ্ট্র) রাম নিবাস জানিয়েছেন, হরিয়ানা, পঞ্জাব ও চণ্ডীগড় প্রশাসনের যৌথ কমিটির সিদ্ধান্তে ওই তিনটি রাজ্য ও একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ৭২ ঘণ্টার জন্য মোবাইল ইন্টারনেট ও ডেটা পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে। দু’দিন চণ্ডীগড়গামী সকল ট্রেন বাতিল করার জন্য রেল মন্ত্রককে অনুরোধ করা হয়েছে। আগেই চণ্ডীগড় ও পাঁচকুলাগামী সব বাস পরিষেবা দু’দিনের জন্য বন্ধ হয়েছে। চণ্ডীগড়ের সেক্টর ৯-এ পঞ্জাব ও হরিয়ানার যৌথ কন্ট্রোল রুম তৈরি করা হয়েছে। সব জেলায় জারি হয়েছে ১৪৪ ধারা।

আজ রাত দশটা নাগাদ পাঁচকুলার সংবেদনশীল এলাকাগুলি থেকে ডেরা-অনুগামীদের সরিয়ে অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়। বিষয়টি নিয়ে গোলমাল বাধে। ডিজিপি বি এস সান্ধু সাংবাদিকদের অবশ্য জানিয়েছেন, হাইকোর্টের নির্দেশ মেনেই ওই অনুগামীদের সরানো হচ্ছে। আইন-শৃঙ্খলার উপরে নজর রাখছেন দশ জন উচ্চপদস্থ আইপিএস অফিসার। বিশেষ বিশেষ এলাকায় নজরদারির জন্য রয়েছেন ১০০ জন ‘ডিউটি ম্যাজিস্ট্রেট’। গোয়েন্দা দফতরের সঙ্গে কথা বলেই এই সব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন মুখ্যসচিব নিবাস।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন