হিমাচল প্রদেশে বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থী প্রেমকুমার ধুমল। —নিজস্ব চিত্র।
কেন্দ্রে বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর মোট ছ’রাজ্যে নির্বাচন হয়েছে। সব জায়গাতেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে সামনে রেখেই এগিয়েছে বিজেপি। কোথাও মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসাবে কারও নাম ঘোষণা করা হয়নি। কিন্তু, হিমাচল প্রদেশে ঠিক উল্টো পথেই হেঁটেছে তারা।
এ রাজ্যে বিজেপি জিতলে প্রেমকুমার ধুমলকে মুখ্যমন্ত্রী করা হবে। নির্বাচনের প্রাক্ মুহূর্তে ঘোষণাটি করেছেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। ঘোষণা করেই থামেননি অমিত। জানিয়েছিলেন দেশের অন্যত্র মোদীর নামে ভোট লড়ছে দল, হিমাচলে কিন্তু প্রেমকুমারের নামেই। পাঁচ বছর আগে এই ধুমলকে হারিয়েই ক্ষমতায় এসেছিলেন বীরভদ্র সিংহ।
কিন্তু, হঠাৎ করে প্রেমকুমার ধুমল কেন? এবং তা-ও শেষ মুহূর্তে!
আরও পড়ুন
গুড়িয়ার নামে বিজেপি, কংগ্রেস গুরুত্ব দিচ্ছে বিকাশকেই
আদতে হিমাচলে মোদী ম্যাজিক তেমন ভাবে কাজে আসেনি। স্থানীয় নেতাদের দেখেই ভোট হচ্ছে বলে মনে হয়েছে শীর্ষ নেতৃত্বের। কাজেই মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী ঘোষণা করলে বাড়তি ফল পাওয়া যেতে পারে। আর সে দিক থেকে এগিয়ে ছিলেন ধুমল। কারণ? মোদীর সঙ্গে তো তাঁর সম্পর্ক তো আজকের নয়। হামিরপুরে বসে ধুমল বললেন, ‘‘প্রায় দু’দশক ধরেই আমাদের বন্ধুত্ব বেশ গাঢ়।’’
সেটা ১৯৯৮ সাল। হিমাচলে নির্বাচন। সে বারেও মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে বিজেপি ধুমলকে প্রোজেক্ট করে। আর সেই সময়ে দলের তরফে হিমাচলের দায়িত্বে ছিলেন নরেন্দ্র মোদী। ধুমল-মোদী জুটি সেই বছর রীতিমতো সাড়া ফেলে দেয় হিমাচলে। ধুমল জিতে মুখ্যমন্ত্রী। আর মোদীকে পাঠানো হল গুজরাত। তার পর তিনিও সে রাজ্যে জয়ী। ধুমলের দাবি, মোদীজি তাঁকে কখনও ভোলেননি। সম্পর্ক বজায় রেখেই চলেছেন। তাই কি এ বার সাতে এসে প্রথা ভাঙল বিজেপি? আগের ছয় রাজ্যের নিয়ম সরিয়ে ফেলা হল বন্ধুত্বের কারণে?
এ দিন মোদীর সঙ্গে বন্ধুত্বের কথা প্রকাশ্যেই বলেন ধুমল। তাঁর কথায়, ‘‘পুরনো সম্পর্ক কখনও ভোলেন না মোদীজি। আমার সঙ্গেও অটুট রয়েছে বন্ধুত্ব।’’ আর সেই সম্পর্ক নিয়ে বেশ উচ্ছ্বসিত তিনি। তিনি বলেন, ‘‘এ রাজ্যে বিজেপি সরকার গড়ছে। আমরা ৫০-এর উপর আসন পেয়ে আসছি। তার পর ফের মোদীজির সঙ্গে ইনিংস শুরু। কেন্দ্রের সঙ্গে মিলে রাজ্যে উন্নয়নের জোয়ার আসার অপেক্ষাতেই রয়েছে এখানকার মানুষ।’’
আরও পড়ুন
মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে নিজেকে দশে আট দেব: আনন্দবাজারকে বীরভদ্র
মুখ্যমন্ত্রী যদি হওয়ার সুযোগ পান, তবে রাজ্যে প্রথম কী কাজ করবেন?
হামিরপুরে নিজের নির্বাচনী কেন্দ্রে বসে ধুমল বললেন, ‘‘নারী সুরক্ষা জোরদার করাই হবে আমার প্রথম কাজ। তার পর রাজ্যবাসীর জীবন, সম্পত্তি এবং সম্মান রক্ষার কাজ। আইনৃশৃঙ্খলাও ঠিক করতে হবে।’’
মোদীর সঙ্গে ফের জুটি বেঁধে কাজ করা হবে কি না তা জানতে ধুমলকে আপাতত ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত অপেক্ষা করতেই হবে। সে দিনই তো গুজরাতের সঙ্গে এ রাজ্যেরও ফল প্রকাশ হবে।