Pegasus

Pegasus: পেগাসাস নিয়ে বিরোধিতা, পথ ভিন্ন তৃণমূল আর কংগ্রেসের

পেগাসাস নিয়ে কংগ্রেস ও তৃণমূল কংগ্রেস— দু’দলের সাংসদরা স্বাধিকার ভঙ্গের নোটিস দিচ্ছেন ঠিকই, কিন্তু উভয়ের অবস্থানে কিছুটা পার্থক্য রয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৬:৫৬
Share:

প্রতীকী ছবি।

পেগাসাস নিয়ে বুধবার থেকে উত্তাল হতে চলেছে সংসদের বাজেট অধিবেশন। বিষয়টি নিয়ে আজ মোদী সরকারের তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের বিরুদ্ধে অধিকার ভঙ্গের নোটিস দিয়েছেন বিরোধী দলগুলির একাধিক সাংসদ। স্পিকার ও কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে সর্বদলীয় কমিটির বৈঠকেও বিরোধী নেতারা পেগাসাস প্রসঙ্গ তুলে প্রধানমন্ত্রীর বিবৃতি দাবি করেছেন। কেন্দ্রের পক্ষ থেকে অবশ্য জানানো হয়েছে, বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টের বিচারাধীন। ফলে সংসদে কিছু বলা যাবে না। রাজনৈতিক সূত্রের মতে, বাদল অধিবেশনে পেগাসাস বিতর্কে যে ভাবে মুখে কুলুপ এঁটেছিল মোদী সরকার, সংসদের বাজেট অধিবেশনেও তার অন্যথা হবে না।

Advertisement

সম্প্রতি নিউ ইয়র্ক টাইমস-এ প্রকাশিত একটি সংবাদ পেগাসাসকে ফের বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে নিয়ে এসেছে। সেখানে বলা হয়েছে, ২০১৭ সালে মোদীর ইজ়রায়েল সফরের সময়েই ২০০ কোটি ডলারের বিনিময়ে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম ও পেগাসাস সফ্টওয়্যার কেনার চুক্তি হয়েছিল। এর আগে বিরোধীদের আক্রমণের মুখে সংসদে বিবৃতি দিয়ে তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী বলেছিলেন, এ সব ভারতের গণতন্ত্রকে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা। তবে মোদী সরকার ইজ়রায়েল থেকে পেগাসাস কেনেনি— সে কথা স্পষ্ট করে বলেননি মন্ত্রী। অভিযোগ অস্বীকারও করেননি।

রাজনৈতিক সূত্রের মতে, পেগাসাস নিয়ে কংগ্রেস ও তৃণমূল কংগ্রেস— দু’দলের সাংসদরাই স্বাধিকার ভঙ্গের নোটিস দিচ্ছেন ঠিকই, কিন্তু উভয়ের অবস্থানে কিছুটা পার্থক্য রয়েছে। কংগ্রেসের বক্তব্য, পেগাসাস নিয়ে প্রধানমন্ত্রী যদি সংসদে ব্যাখা না দেন, তা হলে জোরালো প্রতিবাদ করা হবে। প্রয়োজনে অধিবেশন বানচাল করার চেষ্টা করা হবে। বাজেটে অধিবেশনের প্রথমার্ধ চলবে ১১ ফেব্রয়ারি পর্যন্ত। তার মধ্যে রাষ্ট্রপতির বক্তৃতার উপর ১২ ঘণ্টা ও বাজেট নিয়ে আরও ১২ ঘণ্টা আলোচনা ধার্য হয়েছে। তৃণমূল চাইছে, পেগাসাস নিয়ে সংসদে আলোচনার মধ্য দিয়ে প্রতিবাদ করতে। এ নিয়ে অধিবেশন বানচাল করতে চাইছে না তারা। তৃণমূলের লোকসভার এক নেতার কথায়, “সাধারণ মানুষের স্বার্থের সঙ্গে জোড়া অনেকগুলি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় রয়েছে। গতবারের অধিবেশন গোটাটাই ভন্ডুল হয়ে যাওয়ায় সেগুলি তোলা যায়নি। এবার আলোচনার সুযোগ পেলে আমরা বিষয়গুলি তুলতে চাই। তার সঙ্গে অবশ্যই ফোনে আড়ি পাতা নিয়ে সরকারের ভূমিকার কঠোর সমালোচনাও করা হবে।’’

Advertisement

আজ দুপুরে স্পিকারের সঙ্গে বিষয় উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে প্রথমেই পেগাসাস প্রসঙ্গ তোলেন তৃণমূলের লোকসভার নেতা

সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, পেগাসাস নিয়ে প্রধানমন্ত্রী যদি অবস্থান স্পষ্ট না করেন, তাহলে অধিবেশন শান্তিপূর্ণ ভাবে চলতে পারবে বলে মনে হয় না।

সূত্রের খবর, সংসদীয় মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশী তখন জানান, বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন, ফলে সংসদে আলোচনা সম্ভব নয়। স্পিকার ওম বিড়লাও সমর্থন করেন জোশীকে। বৈঠকে পেগাসাস নিয়ে সরব হন কংগ্রেসের লোকসভার নেতা অধীর চৌধুরীও। তিনি বলেন, সুপ্রিম কোর্টের বিষয় বলে একে এড়িয়ে যাওয়া ঠিক হবে না। সংসদ শান্তিপূর্ণ ভাবে চালাতে প্রধানমন্ত্রীর বিবৃতি জরুরি। তাঁকে সমর্থন করেন ডিএমকে-র টি আর বালু ও ন্যাশনাল কনফারেন্সের ফারুক আবদুল্লা। সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, নিছক সুপ্রিম কোর্টের বিষয় বলে একে আমরা উড়িয়ে দিতে পারি না।

অধীর চৌধুরী গতকালই স্পিকারকে চিঠি লিখে কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রীর বিরুদ্ধে অধিকার ভঙ্গের প্রক্রিয়া শুরুর দাবি তুলেছিলেন।

সূত্রের খবর, আজ লোকসভা ও রাজ্যসভার বেশ কয়েকজন সাংসদ অশ্বিনী বৈষ্ণবের বিরুদ্ধে অধিকার ভঙ্গের নোটিস জমা দিয়েছেন। এঁদের মধ্যে রয়েছেন তৃণমূলের সৌগত রায়, সিপিএমের ভি শিবদাসন, সিপিআইয়ের বিনয় বিশ্বম।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন