রাহুল সামনে আসুন, যুব মঞ্চে ডাক প্রবীণ নেতার

নরেন্দ্র মোদীর সরকারের বিরুদ্ধে যুব কংগ্রেসের আন্দোলন চলছে দিল্লির যন্তর-মন্তরে। অথচ যাঁর নির্দেশে এই ‘আক্রোশ র্যালি’, দেখা নেই সেই রাহুল গাঁধীরই! আর তিনিই কি না প্রবীণদের হটিয়ে সংগঠনের দায়িত্বে নবীনদের তুলে আনতে চান! রাহুলের এই অনুপস্থিতেকেই আজ বিশেষ ভাবে কাজে লাগালেন দলের অন্যতমন প্রবীণ নেতা দিগ্বিজয় সিংহ। দলের যুব নেতৃত্বের মঞ্চকে ব্যবহার করেই রাহুলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়ার আর্জি জানালেন তিনি। দিগ্বিজয়ের এ-ও দাবি, সনিয়া গাঁধীর বদলে এখনই কংগ্রেসের সভাপতি পদের দায়িত্ব নিন রাহুল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০৩:০২
Share:

নরেন্দ্র মোদীর সরকারের বিরুদ্ধে যুব কংগ্রেসের আন্দোলন চলছে দিল্লির যন্তর-মন্তরে। অথচ যাঁর নির্দেশে এই ‘আক্রোশ র্যালি’, দেখা নেই সেই রাহুল গাঁধীরই! আর তিনিই কি না প্রবীণদের হটিয়ে সংগঠনের দায়িত্বে নবীনদের তুলে আনতে চান! রাহুলের এই অনুপস্থিতেকেই আজ বিশেষ ভাবে কাজে লাগালেন দলের অন্যতমন প্রবীণ নেতা দিগ্বিজয় সিংহ। দলের যুব নেতৃত্বের মঞ্চকে ব্যবহার করেই রাহুলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়ার আর্জি জানালেন তিনি। দিগ্বিজয়ের এ-ও দাবি, সনিয়া গাঁধীর বদলে এখনই কংগ্রেসের সভাপতি পদের দায়িত্ব নিন রাহুল।

Advertisement

এক সময় রাহুলের অন্যতম পরামর্শদাতা ছিলেন মধ্যপ্রদেশের এই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী দিগ্বিজয়। ইদানিং উভয়ের দূরত্ব কিছুটা হলেও বেড়েছে। এমনকী, দিগ্বিজয়ের মতো নেতাদের সাংগঠনিক দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার যে চেষ্টা দলের নবীন নেতাদের একাংশ শুরু করেছেন, তার পিছনে সনিয়া ও রাহুলেরই হাত রয়েছে বলে মনে করছেন কংগ্রেসের অনেকে। এই রকম একটা পরিস্থিতিতে প্রবীণ দিগ্বিজয়ই আজ ‘আক্রোশ’ মঞ্চে গরহাজির রাহুলকে স্পষ্ট বার্তা দিলেন। তাঁর কথায়, “প্রবীণদের দিয়ে আন্দোলনে কাজ হবে না। কেন্দ্রে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে মানুষকে সচেতন করতে হলে দলের নবীনদেরই এগিয়ে আসতে হবে। সেই কারণেই রাহুলের কাছে আর্জি জানাচ্ছি, আপনি সামনে থেকে নেতৃত্ব দিন। আমরা সব দিক থেকে আপনাকে সহযোগিতা করব।”

কংগ্রেস সভানেত্রীর পদে সনিয়া গাঁধীর মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী বছর। সেই প্রেক্ষাপটেই দিগ্বিজয়ের মন্তব্যকে বিশেষ অর্থবহ বলে মনে করছেন রাজনীতিকরা। পরে এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে রাখঢাক না করেই দিগ্বিজয় বলেন, “আমি দলের মধ্যে অনেক দিন ধরেই বলছি, রাহুল গাঁধীর এখনই সভাপতি পদের দায়িত্ব নেওয়া উচিত। সেই কথাটিই আজ বক্তৃতায় বোঝাতে চেয়েছি।”

Advertisement

লোকসভা ভোটের পর রাহুল দৃশ্যতই নিজেকে অনেকটা গুটিয়ে নিয়েছেন। দলে কর্তৃত্ব ধরে রাখতে মাঝে মধ্যে মুখ খুলেছেন ঠিকই, কিন্তু প্রকাশ্যে সভা-সমাবেশ করতে দেখা যাচ্ছে না। এমনকী, মোদী সরকারের বিরুদ্ধে গোটা দেশের যুব কংগ্রেস কর্মীরা আজ যখন দিল্লির যন্তর-মন্তরে বিক্ষোভ দেখালেন, তখন একবারের জন্যও সেখানে মুখ দেখাননি রাহুল।

দিগ্বিজয়দের মতে, রাহুল যত দিন নিজেকে এ ভাবে গুটিয়ে রাখবেন দলের পক্ষেও ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব হবে না। লোকসভা ভোটে বিপর্যয়ের ধাক্কা ঝেড়ে ফেলে বরং তাঁকেই এখন নেতৃত্ব দিতে হবে। কেননা, অসুস্থতার জন্য আজকাল সনিয়ার পক্ষে সভা সমাবেশ করা বা ঘন-ঘন রাজ্য সফর করা সম্ভব নয়। ফলে সভাপতি পদের দায়িত্ব নিতে হবে রাহুলকেই।

যুব কংগ্রেসের মঞ্চ থেকে আজ মোদী সরকারের তীব্র সমালোচনা করেন দিগ্বিজয়, সি পি জোশী-সহ দলের প্রবীণ নেতারা। তাঁদের বক্তব্য, মোদীর মিথ্যা প্রতিশ্রুতি নিয়ে মানুষের চোখ খুলে দিতে মাটিতে নেমে আন্দোলন করতে হবে যুব কংগ্রেসকে। সোশ্যাল মিডিয়াকে ব্যবহার করে সব বুজরুকি ফাঁস করে দিতে হবে। দিগ্বিজয়ের কথায়, “ব্যাট করতে নেমে মোদী এর মধ্যেই ক্যাচ দিতে শুরু করেছেন। যুব কংগ্রেস যত বেশি সেই ক্যাচ ধরতে পারবে তত দ্রুত পতন হবে তাঁর সরকারের।”

এ দিনের ‘আক্রোশ র্যালি’-তে পশ্চিমবঙ্গের যুব কংগ্রেস সভাপতি অরিন্দম ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে ছাত্র-যুবদের একটি দল সামিল হয়। তাঁরা সারদা-কাণ্ড থেকে শুরু করে যাদবপুরে ছাত্রদের ওপর পুলিশের লাঠি চালানোর বিরুদ্ধে স্লোগান তোলেন। পরে যুব কংগ্রেসের কর্মীরা সংসদ অভিযান করতে গেলে পুলিশ বাধা দেয়। যুব কংগ্রেসের সমর্থকদের ওপর বেধড়ক লাঠিও চালায় পুলিশ। এ নিয়ে দিগ্বিজয়ের মন্তব্য, “এ ভাবে লাঠি খেয়েই জনতা সরকারের গদি উল্টে দিয়েছিলেন সঞ্জয় গাঁধী। যুব কংগ্রেস কেন, কংগ্রেসের সবাইকেই এখন লাঠি খাওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। কারণ, লড়াইটা আর সহজ নয়। কঠিন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন