Manoj Mukund Naravane

সেনাদের চাঙ্গা রাখতে নরবণের বক্তৃতা-দাওয়াই

লাদাখের সাম্প্রতিক অশান্তির জন্য সরাসরি চিনের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন সেনাপ্রধান।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০২১ ০৪:০৬
Share:

ছবি: সংগৃহীত।

লাদাখের প্রবল শৈত্যপ্রবাহ শুরু হওয়ার আগে চিনা সেনাকে পিছু হটানোর জন্য গত আট মাস লাগাতার চেষ্টা করেছে মোদী সরকার। তবু দফায় দফায় কূটনৈতিক এবং সামরিক পর্যায়ের আলোচনা সত্ত্বেও ভারতীয় ভূখণ্ড দখল করে রয়েছে লাল ফৌজ। সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতি আরও কত দিন চলবে তা-ও নির্দিষ্ট করে বলতে পারছে না সাউথ ব্লক। এই অবস্থায় সেনাদের মনোবল চাঙ্গা রাখতে আজ ৭৩তম সেনাদিবসে রক্তগরম করা বক্তৃতা দিলেন ভারতীয় সেনাপ্রধান মনোজ মুকুন্দ নরবণে। তাঁর হুঁশিয়ারি ‘‘কেউ যেন আমাদের ধৈর্যের পরীক্ষা নেওয়ার ভুল না করে।’’ সেনাপ্রধান জানান, গত বছর জরুরি ভিত্তিতে পাঁচ হাজার কোটি টাকার আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলা-বারুদ কিনেছে ভারতীয় সেনা। নির্ধারিত ১৩ হাজার কোটি টাকার আগ্নেয়াস্ত্র সামগ্রীর উপরে এই ৫ হাজার কোটি টাকার ক্রয়। প্রবল শীতে সেনাদের লাদাখে বসবাসের জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী কেনা ছাড়াও সেনাবাহিনার তরফ থেকে তাঁদের পরিবারকে নানা সাহায্য করা হয়েছে বলে জানান নরবণে।

Advertisement

লাদাখের সাম্প্রতিক অশান্তির জন্য সরাসরি চিনের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন সেনাপ্রধান। তাঁর মন্তব্য, ‘‘পূর্ব লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা (এলএসি)-র স্থিতিশীলতা নষ্ট করার জন্য একতরফা ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।’’ চিন, পাকিস্তান-সহ সামগ্রিক প্রতিবেশী নীতি নিয়ে দৃশ্যতই অস্বস্তিতে মোদী সরকার। সমস্যা বাইরে এবং ঘরোয়া রাজনীতিতেও। আসন্ন বাজেট অধিবেশনে বিরোধীরা চিনা আগ্রাসন নিয়ে সরকারকে চাপে ফেলার কৌশল নিচ্ছে। কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধী ধারাবাহিক ভাবে চিন নিয়ে টুইট করে তোপ দাগছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘শেষ পর্যন্ত একটা প্রশ্নই করতে চাই। আমাদের ভূখণ্ডে চিন কী করছে? কেন আমাদের জমিতে চিনারা বসে রয়েছে আর প্রধানমন্ত্রীর এ ব্যাপারে বক্তব্য নেই কেন? এই প্রশ্নগুলির উত্তর পাওয়া প্রয়োজন।’’

জাতীয়তাবাদের হাওয়া গরম করার জন্য মুখে যাই বলা হোক না কেন সরকার অবশ্য শেষপর্যন্ত আলোচনার মাধ্যমেই সমাধানসূত্রে বিশ্বাসী বলেই মনে করা হচ্ছে। আজ সুর চড়ানোর পাশাপাশি সেনাপ্রধান এ কথাও বলেছেন, “শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে সমাধান পাওয়া যাবে বলে আমরা বিশ্বাসী। “গত ১৫ জুন গালওয়ান উপত্যকায় চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ)-র হামলায় ২০ জন ভারতীয় সেনার মৃত্যুর প্রসঙ্গও উল্লেখ করেন সেনাপ্রধান। তাঁর মন্তব্য, ‘‘শহিদদের আত্মত্যাগ ব্যর্থ হবে না।’’

Advertisement

পাকিস্তানের প্রসঙ্গও শুক্রবার সেনাপ্রধানের বক্তৃতায় এসেছে। তাঁর অভিযোগ, জম্মু ও কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখার ওপারে ঘাঁটি গেড়ে রয়েছে ৩০০-৪০০ জন জঙ্গি। তাদের উদ্দেশ্য, পাক অধিকৃত কাশ্মীর থেকে উপত্যকায় অনুপ্রবেশ করে নাশকতা ছড়ানো। পাক সেনার তরফে সংঘর্ষ বিরতি লঙ্ঘনের ঘটনা সম্প্রতি অন্তত ৪০% বেড়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। গত মঙ্গলবার সন্ত্রাস প্রসঙ্গে পাকিস্তানকেও হুঁশিয়ারি দিয়ে নরবণে বলেছিলেন, “যে ভাবে সীমান্তে পাকিস্তান জঙ্গি কার্যকলাপ বাড়াচ্ছে, তা কোনও ভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। আঘাত এলে উপযুক্ত প্রত্যাঘাত করা হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন