—প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
মোবাইলে আপত্তিকর বিষয়বস্তু রয়েছে! ফোন পেয়ে ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন গুজরাতের গান্ধীনগরের এক মহিলা চিকিৎসক। এক বার নয়, বার বার ফোন আসে। প্রতি বার ফোনের ও পার থেকে নানা রকম ভয় দেখানো হয়। ফোনের কানেকশন বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া থেকে শুরু করে তাঁর বিরুদ্ধে আর্থিক তছরুপের মামলা চাপানোর হুমকিও দেওয়া হয়। পরিত্রাণ পেতে বিভিন্ন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ধাপে ধাপে তিন মাসে ১৯ কোটি টাকা পাঠিয়েছেন ওই চিকিৎসক!
পুলিশ সূত্রে খবর, ১৫ মার্চ ওই চিকিৎসক প্রথম ফোন পান। ফোনের ও পারে থাকা ব্যক্তি নিজেকে পুলিশ আধিকারিক বলে দাবি করেন। পরে আরও নানা সরকারি আধিকারিকের পরিচয়ে ফোন যায় ওই চিকিৎসকের কাছে। প্রথম প্রথম কলগুলি উপেক্ষা করে যেতেন তিনি। তবে বার বার ফোনে একই দাবি করায় ভয় হয় তাঁর। তখন প্রতারকদের কথামতো ৩৫টি ভিন্ন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ১৯ কোটি টাকা স্থানান্তরিত করেন।
প্রতারকেরা তাদের প্রতারণার জাল ক্রমশ বৃদ্ধি করতে থাকে। এমনকি ওই চিকিৎসককে তাঁর গয়নার বিনিময়ে ঋণ সংগ্রহ করতে এবং তার পরে সেই টাকা পাঠাতে বাধ্য করে প্রতারকেরা। চিকিৎসক কখন, কোথায় যাচ্ছেন— তা সব সময় নজরে রাখত তারা। মানসিক ভাবে যখন পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়ে যান ওই চিকিৎসক, তখন এক দিন আচমকাই ফোন আসা বন্ধ হয়ে যায়। চিকিৎসক পরে আত্মীয়দের কাছে বিষয়টি জানান। কিন্তু তত দিনে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছিল।
গত ১৬ জুলাই থানায় প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করেন চিকিৎসক। অভিযোগ পাওয়ার পরে গুজরাতের সিআইডি-র সাইবার অপরাধ শাখা ঘটনার তদন্ত শুরু করে। সূত্রের খবর, এটি ভারতের বৃহত্তম ‘ডিজিটাল অ্যারেস্ট’-এর ঘটনাগুলি মধ্যে অন্যতম। ঘটনার তদন্তে পুলিশ সুরাত থেকে এক জন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে। তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে এক কোটি টাকা লেনদেনের খবর পেয়ে তাঁকে ধরে পুলিশ।
তদন্তকারীদের অনুমান, ধৃত ওই প্রতারণাচক্রের সঙ্গে যুক্ত। তাঁর সূত্র ধরে চক্রের অন্যদের হদিস পাওয়ার চেষ্টা চলছে। চক্রের মূল পাণ্ডাকে কী ভাবে গ্রেফতার করা যায়, তার ছক কষছেন তদন্তকারীরা। শুধু তা-ই নয়, ওই মহিলা চিকিৎসকের খোয়া যাওয়া টাকা পুনরুদ্ধার করা এখন বড় চ্যালেঞ্জ পুলিশের কাছে।