(বাঁ দিকে) ধৃত হর্ষবর্ধন জৈন এবং বাজেয়াপ্ত হওয়া বিদেশি ঘড়ি, পাসপোর্ট (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
সুপরিচিত ব্র্যান্ডের সঙ্গে যুক্ত! এমনই থাকত বিজ্ঞাপন। আর সেই বিজ্ঞাপন এবং হর্ষবর্ধন জৈনের কথায় বিশ্বাস করে প্রতারণার ফাঁদে পা দিতেন অনেকে! গাজ়িয়াবাদের ভুয়ো দূতাবাস মামলার তদন্তে উঠে আসছে এমনই একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। তদন্তকারী সূত্রে খবর, বিদেশে চাকরি দেওয়ার টোপ দিয়ে চলত প্রতারণাচক্র। সেই চক্রের জালে জড়িয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা খোয়ানো ভুক্তভোগীদের সংখ্যাও কম নয়। তেমনই দুই ভুক্তভোগী তদন্তকারীদের কাছে জানিয়েছেন, তাঁরা কী ভাবে হর্ষের প্রতারণার জালে আটকে গিয়েছিলেন।
হর্ষের গ্রেফতারির পরই এই প্রতারণা চক্রের ইতিহাস ক্রমশ প্রকাশ্যে আসছে। তাঁকে জেরা করে এবং বিভিন্ন নথি খতিয়ে দেখে ভুক্তভোগীদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন তদন্তকারীরা। জানা গিয়েছে, সেই তালিকায় থাকা এক ভুক্তভোগী দিল্লির বাসিন্দা। তাঁর দাবি, ইরাকে চাকরি মোটা বেতনের চাকরি করিয়ে দেবেন। এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন হর্ষ। তবে জানিয়েছিলেন, প্রক্রিয়ার জন্য খরচ করতে হবে কিছু টাকা। ধাপে ধাপে দিল্লির ওই বাসিন্দার থেকে সাত লক্ষ টাকা হাতান হর্ষ। অন্য ভুক্তভোগী উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা। চাকরি টোপ দিয়ে তাঁর কাছ থেকে দু’লক্ষ টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে হর্ষের বিরুদ্ধে।
গাজ়িয়াবাদের কবিনগর এলাকায় একটি বাড়ি ভাড়া করে সেখানে বেশ কয়েকটি দেশের ভুয়ো দূতাবাস তৈরি করে প্রতারণার অভিযোগে গত বুধবার গ্রেফতার হন হর্ষ। তদন্তকারী সূত্রে জানা গিয়েছে, ভুয়ো দূতাবাসের আড়ালে চাকরিচক্র চালাতেন হর্ষ। হাওয়ালার মাধ্যমে টাকা পাচার করতেন বিদেশে। পুলিশ জানিয়েছে, প্রায় ৩০০ কোটি টাকার কেলেঙ্কারির সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারেন হর্ষ। শুধু তা-ই নয়, হর্ষের সঙ্গে বিতর্কিত ‘ধর্মগুরু’ চন্দ্রস্বামী এবং সৌদির অস্ত্র ব্যবসায়ী আদনান খাশোগিরের যোগের প্রমাণও মিলেছে।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, চন্দ্রস্বামীই হর্ষের সঙ্গে আদনান এবং তুরস্কের নাগরিক সৈয়দ এহসান আলির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। অভিযোগ, এহসানের সঙ্গে মিলে হর্ষ ২৫টি ভুয়ো কোম্পানি খুলেছিলেন। এই কোম্পানিগুলির মাধ্যমেই আর্থিক লেনদেন চলত। এই এহসান সুইৎজ়ারল্যান্ডের ‘ওয়েস্টার্ন অ্যাডভাইজ়ারি গ্রুপ’ নামে একটি কোম্পানি খুলেছিলেন। এই কোম্পানির কাজ ছিল অর্থের বিনিময়ে ঋণ জোগাড় করে দেওয়া।