প্রথমে জলে চোবালেন, তার পর লাঠি-পাথর দিয়ে সেগুলি পেটালেন। সব শেষে সেগুলি নিয়ে মোটরবাইকে করে চলে গেলেন তাঁরা। ভিড়ের মাঝে এ ভাবেই কয়েকটি হাতবোমা ‘নিষ্ক্রিয়’ করলেন আগরার দু’জন পুলিশ।
বিকেল শুরুর মুখে পাঠকেরা তখন ভিড় করেছেন আগরার নাগরি প্রচারিনির একটি লাইব্রেরিতে। কাছেই প্রাথমিক স্কুলে ছুটির অপেক্ষায় কয়েকশো কচিকাঁচা। সেই লাইব্রেরিরই সিঁড়িতে বেশ কয়েকটা হাতবোমা পড়ে থাকতে দেখে স্বাভাবিক ভাবেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন স্থানীয়রা। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশে খবরও দেন। কিন্তু পুলিশ এসে যে আতঙ্ক আরও বাড়াবে, তা বুঝতে পারেননি কেউই।
খবর পেয়েই ওই লাইব্রেরির সামনে এসে পৌঁছন গোকুলপুরা থানার দুই পুলিশকর্মী। প্রথমেই ভিড় সরানোর চেষ্টা করেন তাঁরা। তার পর একটি লাঠি দিয়ে বোমাগুলিকে উল্টে-পাল্টে দেখেন। তার পর পা দিয়ে পিষেও দেখেন বোমাগুলি।
বোমা নিষ্ক্রিয়করণ দফতরকে খবর দেওয়ার বদলে নিজেরাই সেগুলির ব্যবস্থা করবেন বলে সিদ্ধান্ত নেন ওই দুই পুলিশ। তাই এক বালতি জল নিয়ে এসে তাতে ডুবিয়ে দেন বোমাগুলি। ভিড়ের মধ্যে থেকে এক জন তখনই চেঁচিয়ে ওঠেন, জলে ডুবে তো বোমা ফেটে যেতে পারে। মাথা নেড়ে সায় দিয়ে জল থেকে সেগুলি তুলে নেন তাঁরা। আর এ বার শুরু লাঠি-পাথর দিয়ে দমাদ্দম পিটুনি। আর সেই পিটুনিতেই বোমা ‘নিষ্ক্রিয়’ হয়েছে ধরে নিয়ে মোটরবাইকে করে বোমা নিয়ে চলে গেলেন তাঁরা।
তত ক্ষণে চোখ কপালে উঠেছে উপস্থিত জনতার। দুই পুলিশের এমন কীর্তির কথা শুনে তেমন বিচলিত নন আগরার পুলিশ সুপার রাজেশ মোদক। বললেন, “ওঁরা তো আসলে ভালই করতে চেয়েছিলেন। কী ভাবে নিষ্ক্রিয় করতে হয় সেটা জানতেন না বলেই এমন করে ফেলেছেন। বোমা নিষ্ক্রিয়করণ দফতরকে খবর দেওয়া উচিত ছিল ওঁদের।” পরে অবশ্য ওই দুই পুলিশের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।