ফের চোখরাঙানি নেটে নজরদারির। কোপের প্রস্তাব এ বার বার্তা মোছার (মেসেজ ডিলিট) স্বাধীনতার উপর।
পর্নোগ্রাফির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করতে গিয়ে কিছু দিন আগেই এক পা এগিয়ে পিছোতে হয়েছে কেন্দ্রকে। সেই বিতর্ক থিতু হওয়ার আগেই এ বার ফের নেটে নজরদারির খসড়া প্রস্তাব প্রকাশ করল কেন্দ্র। বৈদ্যুতিন ও তথ্যপ্রযুক্তি দফতরের আনা খসড়া অনুযায়ী, জি-মেল, হোয়াটসঅ্যাপ থেকে অ্যাপলের আই-মেসেজ, যে কোনও জায়গাতেই অ্যাকাউন্টে আসা মেল বা মেসেজ চাইলেই মুছে ফেলা যাবে না। দেশের ‘নিরাপত্তার স্বার্থে’ কমপক্ষে ৯০ দিন তা জমিয়ে রাখতে হবে। চাইলে দেখাতে হতে পারে গোয়েন্দা সংস্থাকেও।
হোয়াটসঅ্যাপ, জি-মেলের মতো পরিষেবায় বার্তা পাঠালে, তা যায় একটি সাঙ্কেতিক মোড়কের মধ্যে দিয়ে। সেই মোড়ক খোলে প্রাপকের মোবাইল, ট্যাবলেট বা কম্পিউটারে পৌঁছনোর পর। ফলে চাইলেও মাঝপথে সেগুলি পড়া কঠিন হয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলির পক্ষে। কেন্দ্রের মতে, দেশের নিরাপত্তার পক্ষে তা ঝুঁকির হতে পারে। সেই কারণেই খসড়ায় বলা হয়েছে ওই সমস্ত পরিষেবায় দু’পক্ষের মধ্যে চালাচালি হওয়া সাঙ্কেতিক মোড়কে থাকা সমস্ত বার্তা অন্তত ৯০ দিন জমিয়ে রাখার কথা। আমআদমি তো বটেই এই নীতি মেনে চলার প্রস্তাব রাখা হয়েছে সমস্ত সংস্থা, এমনকী সরকারি দফতরগুলির সামনেও। অনেকে মনে করছেন, এর বিকল্প হতে পারত ওই সাঙ্কেতিক মোড়ক খোলার অনুমতি এবং চাবি সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলির কাছ থেকে আদায় করা। কিন্তু সে ক্ষেত্রে প্রশ্ন উঠতে পারে ব্যবসায় স্বাধীনতা ও লগ্নির পরিবেশ নিয়ে। তা এড়াতেই আমআদমিকে বার্তা জমিয়ে রাখার কথা বলা হচ্ছে বলে তাঁদের মত। উল্লেখ্য, এর আগে ইউপিএ জমানাতেও একই রকম বিতর্ক বেঁধেছিল ব্ল্যাকবেরির মেসেজের সাঙ্কেতিক মোড়ক নিয়ে। প্রথমে কোনও ভাবেই তা খোলার অনুমতি দিতে চায়নি কানাডীয় সংস্থাটি। পরে কিছুটা পিছু হটে তারা।
খসড়া নীতি অবশ্য এখনই কার্যকর হচ্ছে না। তথ্যপ্রযুক্তি দফতর এ নিয়ে ১৬ অক্টোবর পর্যন্ত সাধারণ মানুষকে মতামত জানাতে বলেছে। সেগুলি পর্যালোচনার করে তবেই তা চূড়ান্ত হওয়ার কথা।