গুয়াহাটি থেকে দিল্লির ইন্দিরা গাঁধী বিমানবন্দরে বিমানটি নামতেই দুই যাত্রীকে গ্রেফতার করেছিলেন নিরাপত্তা সংস্থার কর্মীরা। তল্লাশিতে তাঁদের কাছ থেকে মেলে ১০ কিলোগ্রাম ওজনের সোনা। দু’জনকে জেরা করার পর কার্যত হতবাক সকলে। ধৃতরা জানায়, গত আড়াই বছর ধরে ৬১৭ বার বিমানবন্দরের নিরাপত্তাকর্মীদের চোখে ধুলো দিয়ে প্রায় ৭ হাজার কিলোগ্রাম সোনার চোরাপাচার করেছে তারা। দিল্লি বিমানবন্দর সূত্রে খবর, গত কাল উদ্ধার হওয়া ২৪ ক্যারাটের ১০ কিলোগ্রাম সোনার বারগুলির বাজারদর ৩ কোটি টাকার বেশি। ‘রেভিনিউ ইন্টেলিজেন্স’ দফতরের বক্তব্য, ধৃত দু’জনের দেওয়া হিসেব সত্যি হলে তা এ দেশে সোনা পাচারের সব চেয়ে বড় ঘটনা হবে।
পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতরা জানিয়েছে, মায়ানমার সীমান্ত দিয়ে এ দেশে ঢোকা চোরাই সোনা গুয়াহাটি থেকে একই সংস্থার বিমানে দিল্লিতে নিয়ে গিয়েছে। এ ভাবে প্রায় ৭ হাজার কিলোগ্রাম সোনা পাচার করা হয়েছে। পুলিশ জানায়, ধৃতদের এক জনের বিরুদ্ধে আগেও চোরাচালানের মামলা রুজু হয়েছে। ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে ১২ কিলোগ্রাম সোনা-সহ ধরা পড়ার পর তার জেলও হয়েছিল। এই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট বিমানসংস্থার কোনও কর্মীও জড়িত রয়েছে কি না, তা দেখা হচ্ছে।
তদন্তে জানা গিয়েছে, মায়ানমার থেকে মণিপুরের মোরে সীমান্ত ও মিজোরামের জোখাওথার সীমান্ত পেরিয়ে প্রচুর সোনা ভারতে ঢোকে। ডিআরআইয়ের এক কর্তা জানান, মায়ানমার থেকে আসা সোনার চোরাচালান থামানো যাচ্ছে না, কারণ ওই সব এলাকায় উন্মুক্ত সীমান্ত রয়েছে। আসাম রাইফেল্স, পুলিশের একাংশ ওই চক্রে জড়িত বলেও অভিযোগ রয়েছে। গত বছর ডিসেম্বরে মায়ানমার থেকে আনা ৫২টি সোনার বিস্কুট লুঠের ঘটনায় চলতি বছর মে মাসে মিজোরামে কর্মরত আসাম রাইফেলসের এক কর্নেল ও তাঁর সঙ্গী আট জওয়ানকে গ্রেফতার করা হয়।
ডিআরআইয়ের প্রধান অতিরিক্ত ডিজি দেবীপ্রসাদ দাস জানান,, গত বছর মার্চে শিলিগুড়ি থেকে ৮৭ কিলোগ্রাম সোনা ও চলতি বছর অগস্টে কলকাতায় ৫৮ কিলোগ্রাম সোনা উদ্ধার করা হয়েছিল। মুম্বইয়ে মিলেছিল ১২ কিলোগ্রাম সোনা। গত ১১ সেপ্টেম্বর শিলিগুড়িতে মণিপুরগামী একটি ট্রাকে তল্লাশি চালিয়ে সাড়ে ৭ লক্ষ মার্কিন ডলার পাওয়া যায়। জানা যায়, সোনা কেনার জন্য ওই ডলার পাঠানো হচ্ছিল। ১৩ সেপ্টেম্বর গুয়াহাটি ডিআরআই অফিসাররা একটি এসইউভি থেকে মায়ানামার থেকে নিয়ে আসা সাড়ে ২৭ কিলোগ্রাম সোনা উদ্ধার করেন।