ড্রোন-আতঙ্ক রুখতে নয়া নীতির ভাবনা 

নিরাপত্তাবাহিনীর কাছে ক্রমশ আতঙ্ক হয়ে উঠতে শুরু করেছে ড্রোন। বিশেষ করে পঞ্জাবের ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে কেন্দ্র।

Advertisement

অনমিত্র সেনগুপ্ত

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৪:০৩
Share:

প্রতীকী ছবি।

চিত্র এক, সৌদি আরবের রাষ্ট্রায়ত্ত তেল শোধনাগারে আছড়ে পড়ে ড্রোন। বিধ্বংসী আগুন ছড়িয়ে পড়ে দু’টি খনিতে। সন্দেহের তির ইরানের মদতে পুষ্ট জঙ্গিদের দিকে।

Advertisement

চিত্র দুই, পঞ্জাবের তর্ণ তারণে এ মাসের মাঝামাঝি উদ্ধার হয় আগুনে পোড়া ড্রোন। সরকারের দাবি, পাকিস্তানের পাঠানো ওই ড্রোনটি দিয়ে অস্ত্র, স্যাটেলাইট ফোন, নকল টাকা ঢোকানো হয়েছিল পঞ্জাবে। সেপ্টেম্বরে কয়েক বার সীমান্ত পেরিয়ে অস্ত্র পরিবহণ করে ড্রোনটি।

চিত্র তিন, হঠাৎই মুম্বইয়ের বিমানবন্দরের আকাশে ড্রোনের আনাগোনা। বন্ধ বিমান চলাচল। হাত গুটিয়ে বসে নিরাপত্তরক্ষীরা।

Advertisement

কোনও বিক্ষিপ্ত চিত্র নয়। নিরাপত্তাবাহিনীর কাছে ক্রমশ আতঙ্ক হয়ে উঠতে শুরু করেছে ড্রোন। বিশেষ করে পঞ্জাবের ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে কেন্দ্র। শত্রু ড্রোনের মোকাবিলা কী ভাবে করা যায় তা ঠিক করতে আজ দিল্লিতে একটি আলোচনার আয়োজন করেছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। সীমান্ত, তেল শোধনাগার, গুরুত্বপূর্ণ ভবন, বিমানবন্দরে শত্রু ড্রোনকে চিহ্নিতকরণ, নজরদারি ও প্রয়োজনে ধ্বংস করার প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি ও সরকারের কী নীতি নেওয়া উচিত তা নিয়ে বিশদে আলোচনা হয়। এ দিন গোটা ভারত-পাক সীমান্তে ড্রোন নিয়ে সতর্কতা জারি করেছে কেন্দ্র।

বিশেষজ্ঞদের মতে, সমস্যা এখন দোরগোড়ায় এসে গিয়েছে। এক দিকে বাজারে ড্রোনের সহজলভ্যতা, অন্য দিকে ড্রোনের প্রযুক্তিকে ব্যবহার সন্ত্রাস, মাদক পাচার, গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ ওঠায় অবিলম্বে কড়া সুরক্ষাবিধির পক্ষে বিশেষজ্ঞরা। গোয়েন্দাদের মতে, দেশের কোন প্রান্তে কে, কখন, ড্রোন ওড়াচ্ছে সে বিষয়ে সব সময়ে ‘লাইভ’ তথ্য থাকছে না। যদিও গত ডিসেম্বর মাসে ডিজিসিএ (ডিরেক্টরেট জেনারেল অব সিভিল অ্যাভিয়েশন) ড্রোন ওড়ানোর প্রশ্নে কিছু নিয়ম বেঁধে দিয়েছিল। তাতে ২৫০ গ্রামের বেশি ও ৫০ ফুট উচ্চতায় উড়তে সক্ষম ড্রোনকে ব্যক্তিগত শখে বা ব্যবসায়িক কাজে ওড়ানোর আগে নথিভুক্ত করা ও উড়ান পথ জানাতে বলা হয়েছিল। নিয়মে বলা হয়েছে, বিমানবন্দর, পারমাণবিক চুল্লি, তেল শোধনাগার, সরকারি ভবনের মতো গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলিতে জিপিএস এবং রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি আইডেন্টিফিকেশন (আরএফআইডি)-র মাধ্যমে ‘জিয়ো ফেন্সিং’ বা ভৌগোলিক সীমানা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। ড্রোন সেই এলাকায় উড়তে পারবে না।

কিন্তু অনেকেরই মতে, অধিকাংশ ড্রোন নিয়মকে কার্যত বুড়ো আঙুল দেখায়। ফলে সেগুলিকে চিহ্নিত করা মুশকিল হয়ে পড়ে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন