Dry run

আজ মহড়া, টিকাকরণ কবে

তবে কবে থেকে প্রকৃত গণটিকাকরণ শুরু হবে, আজ সেই প্রশ্নের জবাব যথারীতি এড়িয়ে গিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০২১ ০৩:২৪
Share:

ছবি: পিটিআই।

আগামিকাল সকাল থেকে দেশের সব জেলায় গণটিকাকরণ অভিযানের মহড়া বা ‘ড্রাই রান’ শুরু হতে চলেছে। দেশের ৭৩৬টি জেলাতেই হতে চলেছে ওই মহড়া। আর ঠিক তার আগের সন্ধ্যায় পুণে থেকে দিল্লিতে এসে নামল প্রথম পর্বের প্রতিষেধক। স্বাস্থ্য মন্ত্রক সূত্রে জানানো হয়েছে, পুণে থেকে আসা ওই প্রতিষেধক অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও অ্যাস্ট্রাজেনেকা সংস্থার তৈরি কোভিশিল্ড। প্রযুক্তি হস্তান্তরের মাধ্যমে ভারতে যে প্রতিষেধক উৎপাদনের দায়িত্ব নিয়েছে পুণের সিরাম সংস্থা। ফলে আপাতত ‘ব্যাক আপ’ প্রতিষেধক হিসেবে ব্যবহার করা হবে হায়দরাবাদের ভারত বায়োটেকের কোভ্যাক্সিন প্রতিষেধককে। তবে কবে থেকে প্রকৃত গণটিকাকরণ শুরু হবে, আজ সেই প্রশ্নের জবাব যথারীতি এড়িয়ে গিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন।

Advertisement

আগামিকালের ড্রাই রান যাতে সুষ্ঠু ভাবে হয় তার জন্য আজ দুপুরে দেশের সব রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন। বৈঠকে স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, প্রথমে যে ১ কোটি স্বাস্থ্য কর্মী ও ২ কোটি প্রথম সারিতে থাকা করোনাযোদ্ধা (পুর কর্মী, পুলিশ, সেনা-আধাসেনা, জেলকর্মী)-দের টিকা দেওয়া হবে, তাদের বিনা মূল্যে তা দেওয়া হবে। এর জন্য ৪৮০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক। যার অর্থ, ব্যক্তি পিছু ১৬০ টাকা খরচ করা হবে। যে টাকার মধ্যে এক জন ব্যক্তির দু’টি টিকার ডোজের দাম ছাড়াও টিকার পরিবহণ খরচ ও টিকা কেন্দ্রের পরিকাঠামোগত খরচকে ধরা হয়েছে।

ব্যক্তি পিছু এত কম টাকা বরাদ্দ হওয়ায় অনেক বিশেষজ্ঞ প্রশ্ন তুললেও, স্বাস্থ্য মন্ত্রকের এক কর্তার কথায়, ‘‘প্রয়োজন পড়লে বরাদ্দের পরিমাণ বাড়ানোর আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।’’ স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, মূলত দেশের সব ক’টি জেলায় টিকা দেওয়ার পরিকাঠামো, মূলত টিকা সংরক্ষণ ও টিকা কেন্দ্র পরিবহণের প্রশ্নে কোল্ড চেন ব্যবস্থা ঠিক ভাবে কাজ করছে কি না তা খতিয়ে দেখতেই আগামিকালের ওই মহড়া চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। আলোচনার শেষে রাজস্থানের স্বাস্থ্যমন্ত্রী রঘু শর্মা জানতে চেয়েছিলেন, কবে থেকে টিকাকরণ শুরু করার কথা ভাবছে কেন্দ্র? কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন সেই প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে যান। বলেন, ‘‘যথাসময়ে তা রাজ্যগুলিকে জানিয়ে দেওয়া হবে।’’

Advertisement

মহড়া চালানোর প্রশ্নে প্রস্তুত পশ্চিমবঙ্গ। নবান্ন সূত্রের মতে, কেন্দ্রের নির্দেশ মতো ‘লাস্ট মাইল ডেলিভারি’ পদ্ধতিতে প্রত্যেকের কাছে প্রতিষেধক পৌঁছে দিতে ইতিমধ্যেই প্রস্তুতি নিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। স্থির হয়েছে, মহড়া হবে রাজ্যের ২৩টি জেলাতেই। প্রতিটি জেলাতে তিনটি করে স্থান নির্বাচন করা হয়েছে। নির্বাচিত প্রতিটি জায়গা থেকে ২৫ জন করে স্বাস্থ্যকর্মীকে এই ট্রায়ালের আওতায় আনা হয়েছে। ইতিমধ্যেই সব জেলাপ্রশাসনকে কেন্দ্রের নির্দেশিকা মেনে টিকা প্রাপকদের তালিকা তৈরির কাজ চূড়ান্ত করে ফেলার নির্দেশ দিয়েছে সরকারের শীর্ষমহল। টিকাপ্রাপক হিসাবে সাফাইকর্মী, পুরকর্মী, জেলকর্মী, হোমগার্ড, সিভিক ভলান্টিয়ার, রেভিনিউ-কর্মীদের তথ্যভান্ডার শীঘ্রই চূড়ান্ত হয়ে যাবে বলে জানাচ্ছেন স্বাস্থ্যকর্তারা।

গোটা টিকাকরণ পর্ব ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে কো-উইন নামে একটি মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে চালনা করার পরিকল্পনা নিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রক। যাঁরা টিকা নেবেন, তাঁদের প্রত্যেকের নাম-ঠিকানা থেকে শুরু করে তাঁরা দ্বিতীয় ডোজ় কবে নেবেন, তাঁদের শরীরে টিকা নেওযার ফলে কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হল কি না, সে সবের যাবতীয় বিবরণ গচ্ছিত থাকবে ওই অ্যাপের মাধ্যমে।

আজ স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফে সতর্ক করে বলা হয়, সরকারি ভাবে ওই অ্যাপ্লিকেশন বাজারে আসার আগেই কিছু অসাধু ব্যক্তি কো-উইন নামে একটি মোবাইল আ্যাপ বাজারে ছেড়ে ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নিচ্ছে। কোথাও টাকার বিনিময়ে প্রতিষেধক দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হচ্ছে। তাই মানুষকে সতর্ক করে দিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, সরকার এখনও কো-উইন অ্যাপ বাজারে ছাড়েনি। বাজারে ছাড়ার আগে তা সংবাদমাধ্যমে প্রচার করা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন