শুধুই টুইট, ভোজে নেই মোদী-অমিত

ইদ-উল-ফিতরের দিন ফি-বছরই বিজেপির নেতা শাহনওয়াজ হোসেন এবং মুখতার আব্বাস নকভি নিজেদের বাড়িতে ভোজের আয়োজন করেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৬ জুন ২০১৯ ০২:২৪
Share:

মন্ত্রিসভার সবচেয়ে বড় চার মন্ত্রীর তিন জনই এলেন। এলেন না শুধু নরেন্দ্র মোদী আর অমিত শাহ।

Advertisement

ইদ-উল-ফিতরের দিন ফি-বছরই বিজেপির নেতা শাহনওয়াজ হোসেন এবং মুখতার আব্বাস নকভি নিজেদের বাড়িতে ভোজের আয়োজন করেন। আগে আরও অনেক নেতাই করতেন। কিন্তু নরেন্দ্র মোদী দিল্লিতে ক্ষমতায় আসার পর থেকে তা কমতে থাকে।

অতীতে বিজেপির আয়োজনে মনমোহন সিংহের মতো নেতারাও নিয়মিত আসতেন। কিন্তু মোদী নিজে কখনও আয়োজন করেননি, যোগও দেননি। আজও তার ব্যতিক্রম ঘটল না। এবং মোদীর পথ ধরেই ইদের ভোজে এলেন না বিজেপি সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও।

Advertisement

রমজান সম্পর্কে এ তথ্যগুলি জানতেন?

সকালে যদিও প্রধানমন্ত্রী ইংরেজি ও উর্দুতে ইদের বার্তা দিয়েছেন টুইটে। বলেছেন, ‘‘আজকের বিশেষ দিনে সমাজে শান্তি ও সম্প্রীতি জেগে উঠুক। সকলের আনন্দ হোক।’’ অমিত শাহ নিজের ব্যক্তিগত টুইটে কিছু লেখেননি। তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে ইদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এই উৎসবের দিনে সকলের জীবনে শান্তি, আনন্দ ও খুশি কামনা করেছেন। কিন্তু উৎসবে শামিল হননি।

অথচ রাজনাথ সিংহ, নির্মলা সীতারামন, এস জয়শঙ্কর— ‘বিগ ফোর’-এর তিন মহারথী কিন্তু ছিলেন। প্রতিবারের মতোই হাজির হলেন লালকৃষ্ণ আডবাণী। পীযূষ গয়াল, রবিশঙ্কর প্রসাদ, হর্ষবর্ধনের মতো মন্ত্রীরাও ভোজে যোগ দিলেন।

এ বারে একাই তিনশোর বেশি আসন নিয়ে ক্ষমতায় আসার পর সংসদের সেন্ট্রাল হলের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ’-এর সঙ্গে জুড়ে দিয়েছিলেন ‘সবকা বিশ্বাস’-এর মন্ত্র। সংখ্যালঘুদের মন জয়ের কথা বিশেষ করে বলেছিলেন। বিজেপির প্রতি সংখ্যালঘুদের বিরূপ মনোভাব তৈরির পিছনে বিরোধীদের ‘ছল’ রয়েছে বলে মন্তব্য করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের পর বিজেপির অনেকেই প্রত্যাশা করেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী অন্তত আজকের কোনও আয়োজনে যোগ দেবেন। সংখ্যালঘু উন্নয়ন মন্ত্রী নকভির বাড়িতে নিদেন পক্ষে যাবেন। কিন্তু সকালেই জানা যায়, মোদী আসবেন না, তবে আসবেন অমিত। সেই মতো নকভির বাড়িতে অমিত শাহের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফ থেকে নিরাপত্তার আয়োজনও ছিল। তাঁদের কাছে বার্তাও ছিল, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ বেলা একটা নাগাদ উপস্থিত হবেন। কিন্তু সাড়ে বারোটা নাগাদ বার্তা আসে, রাজনাথ সিংহ আসছেন। কিন্তু স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী চলে গিয়েছেন নিজের দফতরে। শাহনওয়াজের বাড়িতে দাঁড়িয়েই বিজেপির এক নেতা বলেন, ‘‘টুইটে শুভেচ্ছা তো অনেকেই দেন। রাহুল গাঁধী, প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা থেকে রবার্ট বঢরাও দিয়েছেন। কিন্তু বিজেপিকে সত্যিই যদি সংখ্যালঘুদের মন জয় করতে হয়, তা হলে নেতৃত্বকেও বাড়তি এক ধাপ পা ফেলতে হবে।’’

প্রধানমন্ত্রীর সাম্প্রতিক নির্দেশের পরেও দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সংখ্যালঘুদের উপরে নির্যাতনের খবর আসছে। কোথাও মাথায় টুপি পরতে নিষেধ করা হচ্ছে। কোথাও ‘জয় শ্রীরাম’ বলতে বাধ্য করা হচ্ছে। তাই প্রশ্নটি থেকেই যাচ্ছে যে, শুধু কথায় নয়, কাজে কি বিশ্বাস অর্জন করে দেখাতে পারবে গেরুয়া শিবির? মীনাক্ষি লেখি শুধু বললেন, ‘‘আজ সকলকে শুভেচ্ছা। আজ কোনও রাজনীতি নয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন