Dushyant Chautala

দলে বিদ্রোহ, বিজেপির সঙ্গ ছাড়তে চাপ দুষ্মন্তকে

অকালির মতো চৌতালার দলেরও জনভিত্তি হল কৃষকেরা। ফলে ‘কৃষক স্বার্থে’ অকালি সরকার ছেড়ে বেরিয়ে আসায় চাপ তৈরি হয়েছে দুষ্মন্তের উপরে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৩:৫০
Share:

—ফাইল চিত্র।

হরিয়ানায় বিজেপি সরকার থেকে বেরিয়ে আসার জন্য ঘরে-বাইরে চাপ বাড়ছে জোট সঙ্গী জননায়ক জনতা পার্টি (জেজেপি) প্রধান দুষ্মন্ত চৌতালার উপরে। কংগ্রেসের দাবি, পঞ্জাবের অকালি সাংসদ হরসিমরত কউর বাদল যে ভাবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দিযেছেন, সে ভাবে জেজেপি-রও উচিত হরিয়ানায় বিজেপির সরকার থেকে বেরিয়ে আসা। কংগ্রেস পরিকল্পিত ভাবে হরিয়ানার শাসক জোটে ভাঙন ধরাতে চাইছে বলে চৌতালা অভিযোগ করলেও, তাঁর প্রধান সমস্যা হল দলের অধিকাংশ বিধায়ক ওই বিলের বিরুদ্ধে। অন্য দিকে, এনডিএ ছেড়ে অকালি দল বেরিয়ে যাওয়ায় পঞ্জাবে একক ভাবে শক্তি পরীক্ষা করে দেখার সুযোগ এসেছে বলেই মনে করছে বিজেপি।

Advertisement

অকালির মতো চৌতালার দলেরও জনভিত্তি হল কৃষকেরা। ফলে ‘কৃষক স্বার্থে’ অকালি সরকার ছেড়ে বেরিয়ে আসায় চাপ তৈরি হয়েছে দুষ্মন্তের উপরে। সম্প্রতি কুরুক্ষেত্র জেলায় কৃষকদের বিক্ষোভ সমাবেশে পুলিশের লাঠিচার্জ করায় ব্যাকফুটে জেজেপি নেতৃত্ব। তার মধ্যে ওই বিল পাশ হওয়ায় কৃষকদের স্বার্থরক্ষার দুষ্মন্ত ও তাঁর দল ব্যর্থ হয়েছে বলে প্রচারে নেমে পড়েছে কংগ্রেস। দুষ্মন্তের উদ্দেশে দলের মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালার টুইট, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী খট্টরের সঙ্গে চা-শিঙাড়া বৈঠক না করে কৃষক-শ্রমিকের স্বার্থে ইস্তফা দিন। না হলে তাঁরা ছেড়ে কথা বলবেন না।’’ কেন্দ্রের কৃষি নীতির প্রশ্নে শীর্ষ নেতৃত্বের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে মুখ খুলেছেন জেজেপি বিধায়কেরা। জেজেপি বিধায়ক দেবেন্দ্র বাবলি প্রকাশ্যে দুষ্মন্তের নেতৃত্বকে চ্যালেঞ্জ করে নেতা বদলের ডাক দিয়েছেন। তাঁর দাবি, দলের দশ বিধায়ক ওই কৃষি নীতির বিরোধী।

দলে অসন্তোষ থাকলেও এই মুহূর্তে দুষ্মন্তের সরকার ছেড়ে বেরিয়ে আসার সম্ভাবনা কম। তিনি বেরোলে, তা হলে ৯০ আসনের হরিয়ানা বিধানসভায় সংখ্যালঘু হয়ে পড়বে ৪০টি আসন জেতা বিজেপি। সে ক্ষেত্রে ক্ষমতা ধরে রাখতে বিজেপিকে নির্ভর করতে হবে সাত জন নির্দল বিধায়কের উপর। উল্টো দিকে কংগ্রেসের পক্ষে কি সরকার গড়া সম্ভব হবে? কংগ্রেসের এক নেতার জবাব, ‘‘সংখ্যার হিসেবে সম্ভব। কারণ, ওই রাজ্যে আমাদের ৩১টি আসন। চৌতালা বেরিয়ে এসে কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মেলালে শক্তি হবে ৪১। তার পরেও ম্যাজিক সংখ্যা ৪৬-এ পৌঁছতে আমাদের পাঁচ জন নির্দলের সমর্থন লাগবে। ফলে বিষয়টি বেশ কঠিন। কিন্তু চৌতালা বেরিয়ে এলে মধ্যপ্রদেশের কমল নাথ সরকারকে বিজেপি যে ভাবে মাঝ পথে ফেলে দিয়েছিল, সেই চিত্রনাট্যের পুনর্নিমাণ হতে পারে হরিয়ানায়।’’

Advertisement

পাশের রাজ্য পঞ্জাবে ২০২২ সালে বিধানসভা ভোট। যে ভাবে এনডিএ-র দুই শরিক বিজেপি ও অকালির মধ্যে সম্পর্কে তিক্ততা বাড়ছিল তাতে ওই ভোটের আগে জোট ভাঙা অবশ্যম্ভাবী হয়ে দাঁড়াত বলেই মত অনেকের। নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন, শতদ্রু-যমুনা লিঙ্ক ক্যানালের মাধ্যমে জল বন্টন, লোকসভা ও বিধানসভায় আসন সমঝোতা নিয়ে বিজেপির উপরে ক্ষুব্ধ ছিল অকালি। উপরন্তু বাদল পরিবার বিরোধী অকালি নেতা সুখদেব সিংহ ধিংসাকে মোদী সরকার পদ্মবিভূষণ দিয়ে সম্মান জানানোয় তিক্ততা আরও বেড়েছে। দু’দলের সম্পর্কের কফিনে শেষ পেরেক ছিল কৃষি ক্ষেত্রের দু’টি বিল।

জোটের প্রশ্নে নির্ভরযোগ্য সঙ্গী বেরিয়ে গেলেও, বিজেপি মনে করছে এতে পঞ্জাবে দলের শক্তি বৃদ্ধি হবে। অকালি নির্ভরতা কমাতে কয়েক বছর ধরেই শিখ নেতাদের দলে টানতে চাইছে বিজেপি। ধিংসা শিবিরকে অকালির প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে তুলে ধরাও সেই কৌশলের একটি অঙ্গ। বিজেপির বক্তব্য, অকালির কারণে পঞ্জাবে বরাবরই ছোট শরিক রয়ে গিয়েছে বিজেপি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন