তামিলনাড়ুতে রাস্তা, রেল, শক্তি প্রকল্পের উদ্বোধনে প্রধানমন্ত্রী, বুধবার। ছবি: পিটিআই।
দম ফেলার ফুরসত নেই। কোথাও যাবেন, সে সময় নেই। ভিডিয়ো মারফতই মেট্রো ট্রেন চালাচ্ছেন, পর্দার এ পার থেকেই শিলান্যাস করে বলছেন, ‘ভারত মাতা কী জয়!’
নির্বাচন কমিশন লোকসভা ভোটের দিন ঘোষণার জন্য প্রস্তুত। আর নির্বাচনী আচরণবিধি চালুর আগে শেষ মুহূর্তের শিলান্যাস, উদ্বোধনের কাজে তাই নাওয়া-খাওয়া ভুলে যেতে হয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। গত কয়েক দিন ধরেই এই হিড়িক দেখা গিয়েছে। আজও যেমন তিনি সকালে মন্ত্রিসভার বৈঠক করলেন। অনেকের মতে ভোটের আগে এটাই শেষ বৈঠক। যদিও অরুণ জেটলি বলছেন, ‘‘শেষ বলে কিছু নেই।’’ কিন্তু এই বৈঠকেও এ দিক ও দিক থেকে কুড়িয়ে কুড়িটির মতো সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললেন মোদী।
তার পরেই নিজের বাসভবনে দৃষ্টিহীনদের জন্য কয়েন প্রকাশ করলেন। সেখান থেকেই ভিডিয়োয় কথা বললেন জনঔষধি প্রকল্পের সুবিধা প্রাপকদের সঙ্গে। তা শেষ হতেই সিকিম, অরুণাচল, ত্রিপুরাতেও ‘ইন্ট্রিগ্রেটেড কম্যান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টার’-এর শিলান্যাস করেন। সেটিও ভিডিয়োর মাধ্যমে। তার পর দিল্লি থেকেই চালু করেন নাগপুরের মেট্রো।
আরও পড়ুন: জল্পনা মুছে সনিয়া গাঁধী লড়ছেন রায়বরেলী থেকে, অমেঠীতে রাহুল
কাল অবশ্য দিল্লির বাইরে বেরোচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। ভোটের আগে এক লক্ষ কোটি টাকার প্রকল্পের ঝুলি নিয়ে উত্তরপ্রদেশে। যাচ্ছেন নিজের কেন্দ্র বারাণসীতে। তার পরে কানপুর হয়ে গাজিয়াবাদ। কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরের করিডরের শিলান্যাস, কানপুর থেকেই লখনউ মেট্রো রেল চালু করবেন, আগরায় মেট্রোর শিলান্যাস করবেন। কেন্দ্রের মন্ত্রী মহেশ শর্মা জানাচ্ছেন, শনিবারেও শিলান্যাসের কর্মসূচি রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর। সকালে যাবেন গ্রেটার নয়ডা। খুর্জার তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র, সংগ্রহশালা, দীনদয়াল উপাধ্যায়ের মূর্তি উদ্বোধন করবেন।
মন্ত্রী নিতিন গডকড়ী বললেন, ‘‘কিছু করার নেই। বিভিন্ন জায়গা থেকেই দাবি উঠছে, ভোটের আগে প্রধানমন্ত্রীকে দিয়ে অন্তত শিলান্যাসটা করিয়ে রাখতে। তবে তাঁর সময় কম। ফলে প্রধানমন্ত্রীকে না পেয়ে অন্য মন্ত্রীদেরও ছুটতে হচ্ছে এদিক ওদিক।’’ যার ফলে কেন্দ্রের মন্ত্রীরা যেখানেই যাচ্ছেন, একগুচ্ছ করে শিলান্যাস সেরে ফেলছেন।
কিন্তু যে ভাবে প্রধানমন্ত্রী একের পর এক শিলান্যাস এখনও করে যাচ্ছেন, তা দেখে বিরক্ত বিরোধীরা। ৯ মার্চ সকাল পর্যন্ত এখনও প্রধানমন্ত্রীর শিলান্যাসের কর্মসূচি প্রকাশ্যে এসেছে। ফলে তার আগে ভোটের দিন ঘোষণার সম্ভাবনা দেখছেন না বিরোধী নেতারা। অথচ ২০১৪ সালে ৫ মার্চ ভোটের দিন ঘোষণা হয়ে গিয়েছিল। কংগ্রেসের আহমেদ পটেল তো প্রকাশ্যেই প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর শিলান্যাস সফর শেষ না হলে কী নির্বাচন কমিশন ভোটের দিন ঘোষণা করবে না?’’ কমিশন সূত্রের মতে, এখনও তাদের হাতে কিছুটা বাড়তি সময় আছে। গত বার ৩১ মে-র মধ্যে সরকার গঠন করতে হত। এ বারে সে’টি ৩ জুন।