প্রবাসী বাঙালির একজোট হওয়া মানেই দুর্গাপুজো কমিটি, রবীন্দ্র-নজরুল সন্ধ্যা আর মাঝেমধ্যে চপ-কাটলেটের নস্টালজিক গন্ধময় নৈশভোজ?
এই চিরকালীন ধারণা থেকে বেরিয়ে এসে নতুন মঞ্চ গড়ার জন্য উদ্যোগী হল রাজধানীর বেঙ্গল অ্যাসোসিয়েশন। ৫৮ বছরের পুরনো, মূলত বঙ্গ সাংস্কৃতিক চর্চার এই কেন্দ্রটি এ বার দেশের অন্যান্য প্রান্তের বিভিন্ন বেঙ্গল অ্যাসোসিয়েশনকে এক ছাতার তলায় নিয়ে আসতে সক্রিয় হয়েছে। দেশের মোট ২৩টি রাজ্যের ২৮টি এই ধরনের সংগঠনকে নিয়ে ২ এপ্রিল, বৃহস্পতিবার দিল্লিতে শুরু হচ্ছে দু’দিনব্যাপী কর্মশালা ও আলোচনাচক্র। মূল উদ্দেশ্য, এই সমস্ত সংগঠনের মধ্যে একটি যোগসূত্র গড়ে তুলে, একটি বৃহত্ সামাজিক মঞ্চ তৈরি করা।
চেন্নাই, কানপুর, নাগপুর, পটনা, আগরতলা, আমদাবাদ, শিলচর, মুম্বই, এলাহাবাদ বিভিন্ন শহর থেকে আসছেন মোট ৬০ জন প্রতিনিধি। গোটা পরিকল্পনা যাঁর মস্তিষ্কপ্রসূত, দিল্লির বেঙ্গল অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সেই তপন সেনগুপ্ত বলছেন, “এত দিন সবাই যে যাঁর বসবাসকারী রাজ্যে নিজেদের মতো করে কাজ করেছেন। এই প্রথম সবাই একজোট হচ্ছেন। আদানপ্রদান হবে প্রত্যেক রাজ্যের বঙ্গ সংগঠনগুলির মধ্যে। আর শুধু বাংলা কবিতা বা গানেই সীমাবদ্ধ রাখা হবে না বাঙালিয়ানা। আমরা চেষ্টা করছি, এক রাজ্যের বাঙালি অন্য রাজ্যে গেলে তাঁর যদি কোনও আপত্কালীন প্রয়োজন হয়, তবে তাঁর জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে।” ইতিমধ্যেই কিন্তু এই কাজ করছে বিভিন্ন রাজ্যের অ্যাসোসিয়েশন। যেমন, চেন্নাইয়ের ৮১ বছরের প্রাচীন বেঙ্গল অ্যাসোসিয়েশনটি গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে সমাজসেবা করে চলেছে নিঃশব্দে। তাদের একটি নিজস্ব গেস্টহাউস রয়েছে, যেখানে ভেলোরে চিকিত্সা করাতে যাওয়া ভিন্রাজ্যের বঙ্গসন্তানদের নামমাত্র অর্থে থাকার বন্দোবস্ত করা হয়। এই উদ্যোগটিকে মডেল করে বিভিন্ন রাজ্যের মধ্যে সমন্বয়ের মাধ্যমে তা ছড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করছেন তপনবাবুরা। চিকিত্সা পরিষেবা নিতে অন্য রাজ্যে পাড়ি দেওয়া অসহায় মানুষদের সাহায্য করা, উচ্চশিক্ষার্থে ভিন রাজ্যে গিয়ে যত দিন না হস্টেল পাওয়া যায় তত দিন থাকার বন্দোবস্ত করা এই সমস্ত উদ্যোগ নিয়ে বৈঠক হবে আলোচনাচক্রে।