Bihar SIR Row

নাম, সময় থেকে পরিচয়পত্র, ভোটার তালিকায় ২৩ বছর আগের সংশোধনীর সঙ্গে চলতি প্রক্রিয়ায় বহু বদল, কী কী

বিহারে খসড়া ভোটার তালিকায় নাম রাখার ক্ষেত্রে প্রামাণ্য হিসাবে ধরা হয়েছে ২০০২-০৩ সালের ভোটার তালিকাকে। ২৩ বছর আগে সেই সময় বিহার-সহ সাত রাজ্যে ভোটার তালিকায় সংশোধন প্রক্রিয়া চালিয়েছিল নির্বাচন কমিশন।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৪ অগস্ট ২০২৫ ১২:০১
Share:

সামনেই বিহারে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে বিহারের ভোটার তালিকার নিবিড় এবং বিশেষ সংশোধন (এসআইআর) শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন। —প্রতীকী চিত্র।

বিহারের ভোটার তালিকায় বিশেষ নিবিড় সংশোধন প্রক্রিয়া (এসআইআর) চালাচ্ছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। বিহারে খসড়া ভোটার তালিকায় নাম রাখার ক্ষেত্রে প্রামাণ্য হিসাবে ধরা হয়েছে ২০০২-০৩ সালের ভোটার তালিকাকে। ২৩ বছর আগে বিহার-সহ সাত রাজ্যে ভোটার তালিকায় সংশোধন প্রক্রিয়া চালিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। খাতায় কলমে সেই প্রক্রিয়ার নাম ছিল ‘নিবিড় সংশোধন ২০০২-০৩’। দুই দশক পরে সংশোধনের আগে ‘বিশেষ’ শব্দটি যুক্ত হয়েছে। বদলেছে আরও অনেক কিছুই। সেগুলি কী কী?

Advertisement

‘দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’-এর প্রতিবেদন অনুসারে, ২০০২-০৩ সালের সংশোধনীতে গোটা প্রক্রিয়াটি শেষ করতে সময় লেগেছিল আট মাস। বিহার ছাড়াও নিবিড় সংশোধন হয়েছিল ঝাড়খণ্ড, উত্তরাখণ্ড, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তীসগঢ় এবং পঞ্জাবে। বিহারে কমিশন এসআইআর প্রক্রিয়া শেষ করছে তিন মাসের মধ্যে। তা ছাড়া সেই সময় নাগরিকত্বের কোনও প্রমাণ চাওয়া হয়নি ভোটারদের কাছ থেকে। ওই সংশোধনীতে নিজেদের পরিচয়পত্র হিসাবে এখনকার মতো ১১টি নথি নয়, এপিক (ভোটার কার্ড) দেখানোই যথেষ্ট ছিল ভোটারদের জন্য। এ বারের ১১টি নথিতে অবশ্য এপিক নেই, নেই আধার কিংবা প্যান কার্ডও।

সুপ্রিম কোর্টে দেওয়া হলফনামায় কমিশন জানিয়েছে, গোটা প্রক্রিয়াটি শেষ করতে ‘পর্যাপ্ত সময়’ দেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে ২০০২-০৩ সালের সংশোধনীর প্রসঙ্গ উত্থাপন করে তারা জানিয়েছে, সেই সময়ও বাড়ি বাড়ি ঘুরে সমীক্ষা এবং ভোটারদের ফর্ম দেওয়ার কাজ এক মাসে শেষ করা হয়েছিল (২০০২ সালের ১৫ জুলাই থেকে ১৪ অগস্ট)। আর এ বার সংশোধন প্রক্রিয়ার ওই পর্বটি শুরু হয়েছিল চলতি বছরের ২৫ জুন। সেটি শেষ হয় ২৬ জুলাই। সেই হিসাবে কমিশনের যুক্তি তথ্যগত ভাবে ঠিক। কিন্তু এ-ও ঠিক যে, ২৩ বছর আগে গোটা প্রক্রিয়াটি শেষ করতে সময় লেগেছিল আট মাস। এই প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশনের অবসরপ্রাপ্ত এক আধিকারিক বলেন, “বিহারের চলতি এসআইআর প্রক্রিয়ায় ভোটকর্মীদের প্রশিক্ষণ, বাড়ি বাড়ি ঘুরে সমীক্ষা, পরিচয়পত্র সংগ্রহ, যাচাই এবং চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ— গোটা প্রক্রিয়াটি ৯৭ দিনে শেষ করা হচ্ছে। কিন্তু আগের সংশোধন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল ২০০২ সালের মে মাসে। আর শেষ হয়েছিল ওই বছরের ডিসেম্বর মাসে।”

Advertisement

‘দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’-এর পরিসংখ্যান অনুসারে, আগের সংশোধন প্রক্রিয়ায় প্রাথমিক ভোটার তালিকা তৈরি করতে এবং ভোটকর্মীদের প্রশিক্ষণ দিতে ৭৪ দিন সময় নিয়েছিল কমিশন। বাড়ি বাড়ি ঘুরে যাচাই প্রক্রিয়া শেষ করতে সময় লেগেছিল ৩১ দিন। খসড়া তালিকা তৈরির ক্ষেত্রে ৬০ দিন, আপত্তি কিংবা অভিযোগ গ্রহণের জন্য ধার্য হয়েছিল ১৫ দিন। আর সেই সব অভিযোগের নিষ্পত্তি, সংশোধন, ভোটার তালিকায় নতুন নাম সংযোজন বা বিয়োজনের কাজ করা হয়েছিল ৬১ দিনে। গোটা প্রক্রিয়াটি চলেছিল ২৪৩ দিন ধরে। পক্ষান্তরে এ বছর বাড়ি বাড়ি গিয়ে ফর্ম বিলি, সমীক্ষা, বুথ স্তরের আধিকারিকদের প্রশিক্ষণের কাজ চলেছে ৩১ দিন ধরে (২৫ জুন থেকে ২৬ জুলাই)। জমা পড়া ফর্ম খতিয়ে দেখে খসড়া ভোটার তালিকা তৈরি করা হয়েছে ৫ দিনে (২৭ জুলাই থেকে ৩১ জুলাই)। খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশিত হয়েছে ১ অগস্ট। কমিশন জানিয়েছিল, ১ অগস্ট থেকে ১ সেপ্টেম্বর, ৩১ দিন ধরে ভোটার তালিকা সংক্রান্ত অভিযোগ এবং আপত্তি জানানো যাবে। ২৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সমস্ত আপত্তি এবং অভিযোগের নিষ্পত্তি করা হবে। চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে ৩০ সেপ্টেম্বর।

সামনেই বিহারে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে বিহারের ভোটার তালিকার নিবিড় এবং বিশেষ সংশোধন (এসআইআর) শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন। ইতিমধ্যে খসড়া তালিকাও প্রকাশিত হয়েছে। তা নিয়েই বিতর্ক। এই খসড়া তালিকা থেকে ৬৫ লক্ষ নাম বাদ পড়েছে। তা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। প্রশ্ন উঠেছে সুপ্রিম কোর্টেও।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement