প্রতীকী ছবি।
ব্যাঙ্কে জমা থেকে শুরু করে স্বল্প সঞ্চয়— সর্বত্র নাগাড়ে কমছে সুদ। ফলে ক্ষুব্ধ দেশের সাধারণ মানুষ, বিশেষত প্রবীণ নাগরিকেরা। অবসর জীবনের রোজগার হিসেবে যাঁদের বেশির ভাগের একমাত্র ভরসা ওই সুদই। এই পরিস্থিতিতে বাজেটে তাঁদের সেই ক্ষতে মলম লাগানোর চেষ্টায় অন্তত খামতি রাখলেন না অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। বয়স্কদের খুশি করতে ঘোষণা করলেন একগুচ্ছ প্রকল্প। যেখানে আয়কর আইনের বিভিন্ন ধারায় সুদের উপর কর বাঁচানোর পথ করে দেওয়া হল তাঁদের। চিকিৎসার খরচ খানিকটা যাতে সাশ্রয় হয়, ব্যবস্থা করা হল তারও।
এ দিন জেটলি বলেন, ‘‘বিভিন্ন সময় বয়স্ক মানুষেরা আমাকে বলেছেন, অর্থনীতির ভালর জন্য যে সুদ কমানো জরুরি, সেটা তাঁরা বোঝেন। কিন্তু এতে জীবনযাপন কঠিন হয়ে পড়ছে তাঁদের। বিশেষত এখন গড় আয়ু যেখানে অনেকটাই বেড়েছে। তাই তাঁদের সম্মানজনক ভাবে বাঁচার পথ করে দিতেই এই পদক্ষেপ।’’
ব্যাঙ্ক জমা বা স্বল্প সঞ্চয়ের মতো যে সুদের আয়ে সম্প্রতি নিয়ম করে কোপ পড়েছে, এ দিন তারই করমুক্ত সীমা একলপ্তে বাড়ানো হয়েছে প্রায় চার গুণ। বছরে ১০ হাজার টাকা থেকে সোজা ৫০ হাজার। সেই সঙ্গে তুলে দেওয়া হয়েছে সুদে টিডিএস কাটানোর ঝক্কি। তা সে ফিক্সড বা রেকারিং, যে ধরনের আমানতই হোক না কেন।
বয়সকালে সকলেরই সবচেয়ে বড় দুশ্চিন্তার কারণ রোগভোগ। ভাঙতে থাকা শরীর, ছোট হতে থাকা পুঁজি আর বাড়়তে থাকা চিকিৎসার খরচ, এই তিনের ধাক্কায় জেরবার প্রবীণদের খুশি করতে তাই স্বাস্থ্যবিমার প্রিমিয়াম ও চিকিৎসার খরচ খাতে কর ছাড়ের সীমা আগের ৩০ হাজার থেকে বাড়িয়ে করা হয়েছে ৫০ হাজার টাকা। সীমা আগের থেকে বাড়ানো হয়েছে দুরারোগ্য অসুখের চিকিৎসা বাবদ খরচের ছাড়েও।
এ সবের সঙ্গে যোগ হয়েছে পেনশনের টাকা থেকে ৪০ হাজার টাকার স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন। অর্থাৎ যেখানে করযোগ্য রোজগার থেকে প্রথমেই সরাসরি বাদ চলে যাবে ওই পরিমাণ টাকা। এর পরে আয়ের বাকি অংশ করের আওতায় পড়লে, সেই অনুযায়ী হিসেব কষতে হবে। সুবিধার তালিকায় রয়েছে প্রধানমন্ত্রী বয়োবন্দনা যোজনায় আরও প্রায় বছর দুয়েক জীবনবিমা নিগমের ৮% নিশ্চিত রিটার্নের ব্যবস্থা বা প্রকল্পটির আওতায় লগ্নির সীমা আগের সাড়ে সাত লক্ষ টাকা থেকে দ্বিগুণ বাড়ানোও।
সব ধরনের সুবিধা মিলিয়ে সরকার প্রবীণ নাগরিকদের প্রায় ৪,০০০ কোটি টাকা বাড়তি কর ছাড়ের রাস্তা করে দিয়েছেন বলে এ দিন দাবি করেছেন জেটলি। সংসদে দাঁড়িয়ে তাঁর বার্তা, ‘‘যাঁরা আমাদের যত্ন নিয়েছেন এ বার তাঁদের যত্ন নেওয়াই সম্মান জানানোর অন্যতম উপায়।’’ কিন্তু শুধু করে ছাড় দিয়েই সুদ ছাঁটার ক্ষতে প্রলেপ পড়বে কি? উত্তর সম্ভবত ২০১৯ সালে ভোট বুথের দিকে পা বাড়ানো বয়স্কদের হাতে।
প্রবীণদের প্রাপ্তি
•
ব্যাঙ্ক, ডাকঘরের জমায় করমুক্ত সুদের সীমা বেড়ে ৫০ হাজার
•
স্বাস্থ্যবিমার প্রিমিয়াম, চিকিৎসা খরচে কর ছাড় বেড়ে ৫০ হাজার
•
ফিক্সড ও রেকারিং ডিপোজিট-সহ কোনও সুদে টি়ডিএস নয়
•
পেনশনের আয়ে ৪০,০০০ টাকার স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন
•
জটিল অসুখের চিকিৎসা খরচে কর ছাড়ের সীমা ১ লক্ষ টাকা
•
প্রধানমন্ত্রী বয়োবন্দনা যোজনার মেয়াদ ২০২০ সালের মার্চ পর্যন্ত
•
এতে জীবনবিমা নিগমে রিটার্ন ৮%। লগ্নির সীমা বেড়ে ১৫ লক্ষ