(বাঁ দিকে) উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। (ডান দিকে) বহিষ্কৃত এসপি বিধায়ক পূজা পাল। ফাইল চিত্র।
দল থেকে বহিষ্কৃত হওয়ার পরই উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন সমাজবাদী পার্টির (এসপি) বিধায়ক তথা বহুজন সমাজ পার্টির (বিএসপি) প্রাক্তন বিধায়ক নিহত রাজু পালের স্ত্রী। যোগীর সঙ্গে শনিবার তাঁর সরকারি বাসভবনে দেখা করেন পূজা। ঘটনাচক্রে, মুখ্যমন্ত্রীর প্রশংসা করার পরই দলবিরোধী কাজ এবং শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে দল থেকে পূজাকে বহিষ্কার করেন এসপি প্রধান অখিলেশ যাদব। শনিবার এই সাক্ষাতের পর থেকেই রাজনৈতিক মহলে পূজার ভবিষ্যৎ নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়ে গিয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার রাজ্য বিধানসভায় ‘ভিশন ডকুমেন্ট ২০৪৭’ নিয়ে আলোচনা চলছিল। সেই আলোচনায় রাজ্যের অপরাধমূলক কাজকর্মের প্রসঙ্গ উঠতেই এসপি বিধায়ক পূজা বলেন, ‘‘সকলেই জানেন, আমার স্বামীকে কে খুন করেছিল। মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ, ন্যায়বিচার পাইয়ে দেওয়ার জন্য। শুধু তা-ই নয়, যখন কেউ আমার কথা শোনেননি, তিনিই আমার পাশে দাঁড়ান।’’ তিনি আরও জানিয়েছিলেন, অখিলেশ যাদবের কাছে ন্যায়বিচার আশা করেছিলেন। কিন্তু তা তিনি পাননি। তাঁকে ন্যায়বিচারের ব্যবস্থা করে দেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ।
বিধানসভায় যোগী-স্তুতির পরই পূজার উপর নেমে আসে শাস্তির খাঁড়া। সেই মন্তব্যের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। সূত্রের খবর, এসপি প্রধান অখিলেশ যে নোটিস পাঠান তাতে লেখা ছিল, ‘‘আপনি দলবিরোধী কাজ করেছেন। বার বার সতর্ক করার পরেও একই কাজ করে গিয়েছেন। যার জেরে দলকে অনেক সমস্যার মুখে পড়তে হয়েছে। আপনার বিরুদ্ধে দলবিরোধী এবং শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ উঠেছে। তাই আপনাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হল।’’ দল থেকে বহিষ্কৃ হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে যোগীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন পূজা। তবে তাঁদের মধ্যে কী নিয়েছে আলোচনা হয়েছে, তা জানা যায়নি। যদিও পূজার এই সাক্ষাৎ ঘিরে নানা জল্পনাও শুরু হয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যেই।
পূজার স্বামী রাজু খুন হয়েছিলেন ২০০৫ সালে। গ্যাংস্টার আতিক আহমেদের বিরুদ্ধে গুলি করে খুনের অভিযোগ ওঠে। রাজ্য বিধানসভায় এসে বিধায়ক পূজা জানান, যখন কেউ তাঁর আর্জি শোনেননি, কেউ তাঁর পাশে দাঁড়াননি, মুখ্যমন্ত্রী যোগীই একমাত্র তাঁকে ন্যায়বিচার পাইয়ে দিয়েছেন। রাজ্যে অপরাধীদের বিরুদ্ধে যোগী সরকারের ‘জ়িরো টলারেন্স’ নীতিরও প্রশংসা করেছেন পূজা। ঘটনাচক্রে, ২০২৩ সালে গ্যাংস্টার আতিক এবং তাঁর ভাই আশরফকে খুন করা হয়। হাসপাতালে শারীরিক পরীক্ষা করাতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল তাঁদের। সেই সময় তিন জন সাংবাদিক পরিচয়ে আতিক এবং আশরফকে কাছ থেকে গুলি করে হত্যা করেন। এই ঘটনার উচ্চপর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন যোগী। যদিও বিরোধীরা এই ঘটনাকে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার অবনতির পরিণতি বলেই অভিযোগ তোলে।