Facebook India

হুমকির নালিশ ফেসবুকের সেই দেশীয় কর্তার

ফেসবুকের তরফে এক মুখপাত্র সোমবার দাবি করেছেন, ‘‘উস্কানিমূলক পোস্টের বিরুদ্ধে আমরা সব সময়েই কড়া নীতি নিয়ে চলি।’’

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৮ অগস্ট ২০২০ ০৫:৫৬
Share:

প্রতীকী ছবি।

অনলাইনে ও অফলাইনে তাঁকে শারীরিক আক্রমণ ও প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে সোমবার দিল্লি পুলিশের সাইবার অপরাধ শাখায় আট জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন ভারতে ফেসবুকের অন্যতম কর্মকর্তা আঁখি দাস। অথচ বিজেপি নেতা টি রাজা সিংহ যখন ফেসবুকে নিজের পোস্টে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের গুলি করে মারার পরামর্শ দিয়েছিলেন, একটি বিশেষ সম্প্রদায়কে বিশ্বাসঘাতক সম্বোধন করে তাঁদের প্রার্থনালয় জ্বালিয়ে দেওয়ার উস্কানি দিয়েছিলেন, ভারতে ফেসবুকের ডিরেক্টর পাবলিক পলিসি পদ-মর্যাদার এই কর্মকর্তা নিজের কর্মীদের চোখ বুজে থাকতে বলেছিলেন বলে অভিযোগ। কারণ বিজেপিকে চটালে ভারতে তাঁদের ব্যবসায় প্রভাব পড়তে পারে।

Advertisement

মার্কিন সংবাদপত্র ‘ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল’ ফেসবুকের ভারতীয় শাখার এই কাজের কথা প্রকাশ করে ব্যবসার খাতিরে এক-এক দেশে তাদের এক-এক রকম নীতি নিয়ে চলার অভিযোগ এনেছিল। ফেসবুকের যে কর্মীরা গ্রাহকদের পোস্টের উপরে নজরদারি করে, তারা ওই বিজেপি নেতার উস্কানিমূলক এবং খুনের হুমকি দেওয়া পোস্টগুলি মুছে দেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষের অনুমোদন চেয়েছিলেন। কিন্তু মার্কিন সংবাদপত্রটির অভিযোগ, ৪৯ বছরের ওই কর্মকর্তা ব্যবসায়িক স্বার্থের প্রসঙ্গ তুলে তাঁদের সে কাজে নিবৃত্ত করেন। এর পরে ফেসবুকের তরফে এক মুখপাত্র সোমবার দাবি করেছেন, ‘‘উস্কানিমূলক পোস্টের বিরুদ্ধে আমরা সব সময়েই কড়া নীতি নিয়ে চলি। ভারতে আমাদের ওই কর্মকর্তা সেই বিজেপি নেতার পোস্ট না-সরানোর জন্য যে কারণ দেখিয়েছিলেন, তার মধ্যে শুধু ব্যবসায়িক স্বার্থের বিষয়টি ছিল না।’’ তবে সংবাদপত্রটি ফেসবুকের বিভিন্ন দেশের নীতিমালা উল্লেখ করে দেখিয়েছে, জার্মানির মতো অধিকার সচেতন দেশে ফেসবুকের নীতিমালা যথেষ্ট কঠোর হলেও ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমেরিকায় ফেসবুক আবার অত কিছু মেনে চলে না।

তবে মার্কিন সংবাদপত্রটির ওই সংবাদটি ভারতীয় রাজনীতির অঙ্গনে ঝড় তুলে দিয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান শশী তারুর জানিয়েছেন, এ বিষয়ে কমিটি পেসবুকের জবাবদিহি চাইতে পারে। যৌথ সংসদীয় কমিটি-র তদন্ত চেয়েছে সিপিএম। রাহুল গাঁধী টুইটে ওই সংবাদটি শেয়ার করে রবিবার বলেছেন, ‘‘ভারতে ফেসবুক ও তাদের হোয়াটসঅ্যাপ বিজেপি ও আরএসএসের কুক্ষিগত। এই দু’টি ব্যবহার করে তারা ভুয়ো সংবাদ এবং বিদ্বেষ প্রচার করে ভোটারদের প্রভাবিত করে। অবশেষে মার্কিন সংবাদপত্রটি ফেসবুকের সত্য উদ্ঘাটন করল।’’ বিজেপির রবিশঙ্কর প্রসাদ পাল্টা বলেন, ‘‘কেমব্রিজ অ্যানালেটিকা কেলেঙ্কারির পরে কংগ্রেসের কথা বলা সাজে না। ভোটের আগে এই সংস্থার কাছ থেকে ফেসবুকের তথ্য নিয়ে ভোটারদের প্রভাবিত করতে চেয়েছিল কংগ্রেস।’’ কেমব্রিজ অ্যানালেটিকার বিরুদ্ধে অবশ্য ফেসবুক ব্যবহারকারীদের গোপন তথ্য মোটা দামে আমেরিকায় ট্রাম্পের দলের কাছে বিক্রির অভিযোগ উঠেছিল। উইকিলিকস অভিযোগ করে, ভারতে কংগ্রেসকেও তারা এই তথ্য বিক্রির প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু কংগ্রেস তা অস্বীকার করেছিল। তিন বছর পরে আবার বিজেপি সেই অভিযোগ তুলে আনল। মন্ত্রী রাজ্যবর্ধন সিংহ রাঠৌর এ দিন একটি কলামে মন্তব্য করেছেন, ফেসবুক আগে বামপন্থী ও কংগ্রেসের অবারিত চারণক্ষেত্র ছিল। বিজেপি তাদের এই প্ল্যাটফর্ম থেকে তাড়িয়ে ছাড়ায় তারা এই সব অভিযোগ করছে। অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন রাঠৌরের ওই লেখাটি টুইটে শেয়ার করে তার সঙ্গে সহমতি জানিয়েছেন।

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন