মাথা খুঁড়লেও জাল নোট বানাতে পারবেন না কারবারিরা, দাবি কেন্দ্রের

নতুন ২০০, ৫০০ ও ২০০০ টাকার নোটে যে কাগজ ব্যবহার করা হচ্ছে তার সমগোত্রীয় মানের কাগজ জোগাড়ে মাথা খুঁড়ছেন জাল কারবারিরা। 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:০৪
Share:

প্রতীকী ছবি।

গোটা দেশে হাহাকার, এটিএমে টাকা নেই বলে। হাহাকার উঠেছে জাল টাকার কারবারিদের মধ্যেও। নতুন ২০০, ৫০০ ও ২০০০ টাকার নোটে যে কাগজ ব্যবহার করা হচ্ছে তার সমগোত্রীয় মানের কাগজ জোগাড়ে মাথা খুঁড়ছেন জাল কারবারিরা।

Advertisement

ফলে জাল টাকা আগের চেয়ে দেশে অনেক বেশি প্রবেশ করানোর চেষ্টা করা হলেও, অনেক সহজে তা চিহ্নিত করা সম্ভব হচ্ছে বলে দাবি করেছে কেন্দ্র।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের দাবি, পাকিস্তান বা বাংলাদেশ থেকে যে জাল টাকা আসছে সেগুলি দেখতে প্রায় এক হলেও, মানের দিক থেকে নতুন নোটের মতো উন্নত নয়।

Advertisement

মূলত ফারাক হয়ে যাচ্ছে নোটের কাগজে। সূত্রের দাবি, নতুন কাগজে এমন এক ধরনের অদৃশ্য পাতলা কাপড় ব্যবহার করা হচ্ছে যেগুলি নকল করা সম্ভব হচ্ছে না জাল কারবারিদের। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছে, যে জাল টাকা উদ্ধার হচ্ছে সেগুলির রাসায়নিক পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে ওই টাকার কাগজের উৎস হল মালয়েশিয়া ও আরব দেশগুলি।

আটক-খতিয়ান • ২০১৩ ১৮.৪৫ কোটি • ২০১৪ ১২.২৯ কোটি • ২০১৫ ১৪.৮১ কোটি • ২০১৬ ১৪.১৫ কোটি • ২০১৭ ২১.৫৪ কোটি

নোট বাতিলের আগে পর্যন্ত ভারতে যেখান থেকে টাকার জন্য কাগজ আনা হত, পাচারকারীরা সেখান থেকে কাগজ পেত। ফলে জাল ও আসল নোটের পার্থক্য বোঝা কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়েছিল। এখন নতুন নোটগুলির ক্ষেত্রে ভারত কাগজ আনছে অন্য দেশ থেকে। ফলে দু’টি কাগজের মধ্যে গুণগত পার্থক্য হয়ে যাচ্ছে। নতুন টাকাগুলিতে যে মোট ১৬টি বৈশিষ্ট্য রয়েছে, তার মধ্যে অন্তত অদৃশ্য চারটি বৈশিষ্ট্য নকল করতে ব্যর্থ হচ্ছে পাচারকারিরা।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের দাবি, নোট বাতিলের পর থেকে এ দেশে (মূলত ২০১৭ সালে) মোট সাড়ে একুশ কোটি টাকার জাল নোট উদ্ধার হয়েছে। যার মধ্যে ৩৯ হাজারের কাছাকাছি রয়েছে জাল ২০০০ টাকার নোট। যাদের মূল্য হল প্রায় ৭.৮ কোটি টাকা।

আর ওই জাল টাকা উদ্ধারের প্রশ্নে এক নম্বরে রয়েছে দিল্লি। রাজধানী থেকে উদ্ধার হয়েছে প্রায় ৬.৯৬ কোটি জাল টাকা। পরবর্তী স্থানে রয়েছে গুজরাত ও উত্তরপ্রদেশ। ওই দুই রাজ্য থেকে উদ্ধার হওয়া টাকার পরিমাণ ৫.৩৪ কোটি ও ১.৪১ কোটি।

বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলির মধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে আছে মিজোরাম। সেই রাজ্য থেকে উদ্ধার হয়েছে ১.২৭ কোটি টাকা। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট মন্ত্রক জানিয়েছে, বাংলাদেশের মাধ্যমে যে জাল টাকা ঢোকানো হচ্ছে তার অধিংকাংশ পাকিস্তানের বিভিন্ন ছাপাখানায় তৈরি হয়ে থাকে। যা মূলত দাউদ ইব্রাহিম গোষ্ঠীর মাধ্যমে এ দেশে ছড়ানো হয়ে থাকে।

একই সঙ্গে পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশে চোরাপথে টাকা নিয়ে আসার খরচ কমাতে বাংলাদেশের একাধিক স্থানে পাক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের মদতে ছাপাখানা গড়া হয়েছে। যেগুলি থেকে নিয়মিত ভাবে ভারতে পশ্চিমবঙ্গ এবং উত্তর-পূর্ব সীমান্ত দিয়ে জাল টাকা ঢোকানো হচ্ছে। নোট বাতিলের সিদ্ধান্তের পর গত বছরে পশ্চিমবঙ্গ থেকে উদ্ধার হয়েছে ৯১ লক্ষ জাল টাকা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন