Rahul Gandhi

ভুয়ো ভোটারের নাম জোড়া হচ্ছে ভোটার তালিকায়! আবার ভোট চুরির অভিযোগ তুলে নির্বাচন কমিশনকে নিশানা রাহুল গান্ধীর

রাহুলের অভিযোগ, দেশে ভুয়ো ভোট হচ্ছে। এই ভোট চুরি ধরতে অনেক সময় লেগেছে তাঁদের। ভোটার তালিকা নিয়ে পাঁচটি স্তরে ছ’মাস ধরে তদন্ত করেছেন তাঁরা।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০২৫ ১৫:৪৭
Share:

সাংবাদিক সম্মেলনে রাহুল গান্ধী। ছবি: পিটিআই।

বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে লোকসভা ভোটে কারচুপি করেছে নির্বাচন কমিশন। বৃহস্পতিবার সাংবাদিক সম্মেলনে আবার ভোট চুরির অভিযোগ তুললেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী। তাঁর অভিযোগ, ভোটার তালিকায় ভুয়ো ভোটারের নাম তোলা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে কর্নাটক এবং মহারাষ্ট্রের নির্বাচনে কংগ্রেসের ফলাফলের উদাহরণ টেনে দাবি করেছেন, ‘‘বেঙ্গালুরু সেন্ট্রাল লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত মহাদেবপুরা বিধানসভায় ভয়ঙ্কর চুরি হয়েছে। সেখানে এক লক্ষেরও বেশি ভোট চুরি হয়েছে।’’

Advertisement

রাহুলের এই অভিযোগের জবাব দিয়েছে নির্বাচন কমিশনও। শুধু জবাব দেওয়াই নয়, রাহুলকে পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে কমিশন জানিয়েছে, ভোটার তালিকায় কারচুপির যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে, হলফনামা দিয়ে শপথ করে সে কথা বলুন কংগ্রেস সাংসদ। তা যদি না পারেন, তা হলে যে অভিযোগ তুলেছেন, যে মন্তব্য করেছেন, তা তাঁকে তুলে নিতে হবে। এর পরই কমিশনের তোপ, এই ধরনের তথ্য দিয়ে দেশবাসীকে বিভ্রান্ত করা বন্ধ করা হোক। নির্বাচন কমিশনকে পাল্টা জবাব দিয়ে রাহুল বলেন, ‘‘আমি একজন নেতা। আর আমি সর্বসমক্ষে এ কথা বলেছি। আমার শপথ এটাই।’’

রাহুল অভিযোগ তুলেছেন, মহারাষ্ট্রে ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে ইন্ডিয়া জোট ৪৮টি আসনের মধ্যে ৩০টি পেয়েছিল। তার ঠিক পাঁচ মাস পরে বিধানসভা নির্বাচন যখন হল, তখন দেখা গেল ইন্ডিয়া জোট ৫০-এর গণ্ডিও পেরোতে পারল না! আর এই দুই রাজ্যের উদাহরণ তুলেই ভোটে কারচুপির অভিযোগ তুলে নির্বাচন কমিশনকে নিশানা করেছেন রাহুল।

Advertisement

লোকসভার বিরোধী দলনেতার আরও দাবি, কংগ্রেস একটি অন্তর্তদন্ত চালিয়েছিল। সেই অন্তর্তদন্তে দেখা গিয়েছে, এক লক্ষেরও বেশি ভুয়ো ভোটার, ভুয়ো ঠিকানার মতো বেশ কিছু অসঙ্গতি খুঁজে পাওয়া গিয়েছে কর্নাটকের মহাদেবপুরা কেন্দ্রে। রাহুল আরও করেন, ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বেঙ্গালুরু সেন্ট্রালে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছিল। কংগ্রেস প্রার্থী মনসুর আলি খানা বেশির ভাগ সময়ে এগিয়ে ছিলেন। কিন্তু চূড়ান্ত ফল ঘোষণা হতেই দেখা গেল বিজেপি প্রার্থী পিসি মোহন খুব সামান্য ভোটে (৩২,৭০৭) জিতেছেন।

রাহুল এর পরই প্রশ্ন তোলেন, নির্বাচন কমিশন কেন বৈদ্যুতিন মাধ্যমে ভোটার তালিকা প্রকাশ করেনি? এই বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন রাহুল। তাঁর অভিযোগ, যদি ভোটার তালিকা বৈদ্যুতিন মাধ্যমে প্রকাশ করত নির্বাচন কমিশন, তা হলে ৩০ সেকেন্ডে তাদের ‘জালিয়াতি’ ধরা পড়ে যেত।

রাহুল প্রশ্ন তুলেছেন, সঠিক ভোটাররা কি ভোট দিতে পারছেন? ভোটার তালিকায় তা হলে ভুয়ো ভোটারের নাম জোড়া হয়েছে? তাঁর অভিযোগ, মহারাষ্ট্রের নির্বাচনে ভোট চুরি হয়েছে। তার জন্য নির্বাচনে হেরেছে কংগ্রেস। ৪০ লক্ষ রহস্যময় ভোটারের নাম নথিভুক্ত করা হয়েছে। পাঁচ বছরে মহারাষ্ট্রে যে ভোটারের সংখ্যা পাওয়া গিয়েছে, পাঁচ মাসের মধ্যে হঠাৎ তার থেকে বেশি ভোটার কোথা থেকে এলেন, প্রশ্ন তুলেছেন রাহুল। ভোটার তালিকা নিয়ে নির্বাচন কমিশনের জবাব দেওয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি। রাহুলের দাবি, নির্বাচন কমিশনের জানানো উচিত, ভোটার তালিকা ঠিক ছিল, না কি সেখানে কোনও ত্রুটি ছিল।

রাহুলের আরও অভিযোগ, দেশে ভুয়ো ভোট হচ্ছে। এই ভোট চুরি ধরতে অনেক সময় লেগেছে তাঁদের। কংগ্রেস নিজের মতো করে ভোটার তালিকা নিয়ে তদন্ত করেছে পাঁচটি স্তরে। ছ’মাস ধরে এই তদন্ত চালিয়েছে তারা। বেঙ্গালুরু সেন্ট্রাল লোকসভা কেন্দ্রের প্রসঙ্গ তুলে লোকসভার বিরোধী দলনেতা দাবি করেন, ওই লোকসভা কেন্দ্রের মহাদেবপুরা বিধানসভা কেন্দ্রে সাড়ে ছ’লক্ষ ভোটের মধ্যে এক লক্ষেরও বেশি ভোট চুরি হয়েছে। দলের অন্তর্তদন্তে এটা ধরা পড়েছে যে, এক লক্ষেরও বেশি ভোটার ভুয়ো। যাঁদের ঠিকানায় ত্রুটি ধরা পড়েছে। ভোটার তালিকায় যে বড় রকমের কারচুপি হয়েছে, সেটা জোর গলায় দাবি করেছেন রাহুল।

এর পরই নির্বাচন কমিশনের আধিকারিকদের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, ‘‘আপনার যে পদেই থাকুন না কেন, সিনিয়র হোন বা জুনিয়র, আপনাদের রেয়াত করা হবে না।’’ বহু আসনে ভোটার তালিকায় কারচুপি যে হয়েছে, তার জবাব দিতে হবে নির্বাচন কমিশনকে। এর পরই রাহুল নির্বাচন কমিশনের আধিকারিকদের উদ্দেশে বলেন, ‘‘আপনারা দেশের গণতন্ত্রকে ধ্বংস করতে পারেন না। গণতন্ত্রকে রক্ষা করাই আপনাদের কাজ।’’

২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে ‘রিগিং’ হয়েছিল বলে দিন কয়েক আগেই দাবি করেন রাহুল। লোকসভার বিরোধী দলনেতার দাবি, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী খুব অল্প সংখ্যাগরিষ্ঠতার উপরে ভর করে সরকার গড়েছেন। যদি ১০-১৫টি লোকসভা কেন্দ্রে রিগিং না হত, তা হলে নরেন্দ্র মোদী প্রধানমন্ত্রীই হতেন না। বাস্তবে ৭০ থেকে ৮০ বা ১০০টির মতো আসনে ভোটার তালিকায় কারচুপি বা রিগিং হয়েছে বলে রাহুল দাবি করেছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement