‘বিদেশি’ ফালুবাবুর দেহ নেবে না পরিবার

পুরো পরিবারকে ভারতীয় ঘোষণা না করলে ‘বিদেশি’ ফালু দাসের দেহ নেওয়া হবে না বলে জানিয়ে দিল পরিবার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০১৯ ০১:৪৪
Share:

ফালুর পরিবারের সঙ্গে ডিএম ভারতভূষণ দেবচৌধুরী ও এসপি আমনজিৎ কৌর। নিজস্ব চিত্র

পুরো পরিবারকে ভারতীয় ঘোষণা না করলে ‘বিদেশি’ ফালু দাসের দেহ নেওয়া হবে না বলে জানিয়ে দিল পরিবার। অসমের নলবাড়ি জেলার সতেমারি গ্রামের বাসিন্দা, পেশায় মৎস্যজীবী ফালু দাসকে ফরেনার্স ট্রাইবুনাল ২০১৭ সালে বিদেশি ঘোষণা করে। গোয়ালপাড়া ডিটেনশন শিবিরে বন্দি সত্তোরোর্ধ ফালুবাবু অসুস্থ হয়ে পড়ায় চলতি মাসের ১১ তারিখে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ২৩ অক্টোবর রাতে গুয়াহাটির মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তিনি মারা যান।

Advertisement

ছেলে ভগ দাস জানান, বাবার নাম ডি-ভোটার তালিকায় থাকায় ছেলে ভগ ও দুর্যোধন, চার মেয়ে কৌশল্যা, আলো, মালতী ও অনামিকার নামও এনআরসিতে ওঠেনি। মা করপুলার নাম অবশ্য দাদুর লিগ্যাসি দিয়ে উঠেছে। দুই মেয়ে আলো ও মালতী ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালে মামলায় জিতে ভারতীয় হয়েছেন। ফালুবাবুর বাবার নাম ভুলু রাজবংশী। তাঁর নাম ১৯৬৬ সালের ভোটার তালিকায় ছিল। ভুলুবাবুর লিগ্যাসি ব্যবহার করেছিল পরিবার। কিন্তু রাজবংশীর ছেলে দাস পদবী নেওয়ায় ও কোনও পদবি বদলের হলফনামা না করায় জটিলতা বাড়ে। পরিবারের দাবি, তাঁরা জমি বেচে মামলা করেছেন। আর মামলা করার টাকা নেই। ১৫ জনের পরিবারে ৩ জনের নাম এনআরসিতে এসেছে। তাই ফালু ও তাঁর পরিবারের বাকি সকলকে ভারতীয় ঘোষণা করতে হবে এবং এনআরসিতে নাম ওঠাতে হবে, তবেই তাঁরা দেহ ফেরত নেবেন।

সারা অসম বাঙালি পরিষদের সভাপতি শান্তনু সান্যালের দাবি, এখনও পর্যন্ত ডিটেনশন শিবিরে ২৭ জনের মৃত্যু হল। অন্তত চারশো বাঙালি বিদেশির তকমা নিয়ে বন্দি। কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারকে অবিলম্বে মৃতদের নাগরিকত্বের বিষয়টি পর্যালোচনা করার আবেদন জানাতে হবে। মৃতদের পরিবারকে ২৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। কেন ডিটেনশন শিবিরে এত মানুষ অসুস্থ হয়ে মারা যাচ্ছেন এবং কেন পরিবারগুলি ঠিক মতো খবর পাচ্ছে না— তার তদন্ত করতে হবে। সিপিএম আজ বিবৃতি দিয়ে রাজ্যের ডিটেনশন শিবিরগুলি বন্ধ করে দেওয়ার দাবি তোলে। জেলাশাসক ভারতভূষণ দেবচৌধুরী বলেন, ‘‘দীপাবলির পরে আমরা ফের পরিবারের সঙ্গে আলোচনায় করব। তাঁরা উচ্চতর আদালতে মামলা করতে চাইলে বা বাবার দেহ আনা ও সৎকারে সাহায্য চাইলে প্রশাসন তৈরি।’’

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন