ঘুষের অভিযোগে ধৃত পঞ্জাব পুলিশের ডিআইজি হরচরণ সিংহ ভুল্লার। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
ঘুষকাণ্ডে ইতিমধ্যেই সিবিআই তাঁকে গ্রেফতার করেছে। পঞ্জাব পুলিশের ডিআইজি হরচরণ সিংহ ভুল্লার গ্রেফতার হতেই গোটা পুলিশমহল স্তম্ভিত। রাজ্যের সৎ এবং স্বচ্ছ ভাবমূর্তির কোনও পুলিশ অফিসারের নাম উঠলেই, ভুল্লারের নাম আগে আসত। স্বচ্ছ ভাবমূর্তির সেই পুলিশ অফিসার ঘুষকাণ্ডে গ্রেফতার হয়েছেন, পঞ্জাব পুলিশ মহলের অনেকেই সে কথা বিশ্বাস করতে পারছেন না।
প্রসঙ্গত, ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে বৃহস্পতিবার ভুল্লারের বাড়িতে হানা দিয়েছিল সিবিআই। তাঁর বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে নগদ পাঁচ কোটি টাকা, দেড় কেজি সোনা, দামি ঘড়ি, বেশ কয়েকটি বিলাসবহুল গাড়ি এবং আরও অনেক সম্পত্তির হদিস মিলেছে। গ্রেফতার করা হয়েছে ডিআইজি ভুল্লারকে। তাঁর গ্রেফতারি পঞ্জাবের পুলিশ প্রশাসনে শোরগোল ফেলে দিয়েছে।
সূত্রের খবর, রাজ্যের অন্যতম দক্ষ পুলিশ অফিসার হিসাবে পরিচয় ছিল ভুল্লারের। মাদক পাচারকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো, সংগঠিত অপরাধ বন্ধ করার ক্ষেত্রে দুর্দান্ত ভূমিকা রয়েছে ভুল্লারের। অপরাধীদের কাছে তিনি ‘যম’ হিসাবে পরিচিত ছিলেন। কিন্তু সেই স্বচ্ছ ভাবমূর্তির দক্ষ অফিসার যে আড়ালে নিজেই সংগঠিত অপরাধে জড়িয়ে ছিলেন, তা কেউ আঁচ করতে পারেননি। তাঁর বিরুদ্ধে হুমকি দিয়ে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে টাকা আদায়েরও অভিযোগ প্রকাশ্যে এসেছে। লালরঙা একটি ডায়েরিও উদ্ধার করেছে সিবিআই। সূত্রের খবর, সেখানে বহু ব্যবসায়ীর নাম পাওয়া গিয়েছে।
ডিআইজি হরচরণের বাবা মেহল সিংহ ভুল্লার ছিলেন পঞ্জাব পুলিশের ইনস্পেক্টর জেনারেল (আইজি)। পঞ্জাব তখন সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে জর্জরিত। পঞ্জাবে সন্ত্রাসবাদ দমনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল মেহলের। রাজ্য পুলিশে যোগ দেওয়ার আগে সেনায় কর্মরত ছিলেন তিনি। আশির দশকে আইপিএস হন মেহল। ২০০২-’০৩ সালে পঞ্জাবে একের পর এক সন্ত্রাসবাদী আত্মসমর্পণ করে। পুলিশ সূত্রে খবর, এ ক্ষেত্রে ডিজি মেহলের ভূমিকা ছিল তাৎপর্যপূর্ণ। বাবার কাছ থেকে অনুপ্রেরণা পেয়েই পুলিশের চাকরিতে যোগ দেন হরচরণ। স্টেট পুলিশ সার্ভিস পরীক্ষায় পাশ করেন। তার পর একের পর এক পদোন্নতি। প্রথমে ডেপুটি পুলিশ সুপার, তার পর মোহালির পুলিশ সুপার পদে উন্নীত হন। এসএসপি হিসাবে বারনালা, জারগাঁও, ফতেহগড় সাহিব, গুরদাসপুর, রোপারে কর্মরত ছিলেন। ২০২৩ সালে ডিআইজি হন। হরচরণের ভাই কুলদীপ কংগ্রেস নেতা তথা প্রাক্তন বিধায়কও।