আত্মহত্যার আগে হাতের তালুতে অভিযুক্তদের নাম উল্লেখ করে গিয়েছেন মহারাষ্ট্রের ‘ধর্ষিতা’ চিকিৎসক। — ফাইল চিত্র।
মহারাষ্ট্রের তরুণী চিকিৎসকের আত্মহত্যার ঘটনার পরতে পরতে রহস্য। অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগের পালা চলছে। প্রায় প্রতি দিনই ঘটনার তদন্ত নতুন দিকে বাঁক নিচ্ছে। এ বার মৃতের পরিবার তদন্তে গাফিলতির অভিযোগ তুলল। শুধু তা-ই নয়, পরিবারের অজান্তেই দেহ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় বলেও অভিযোগ। পরিবারের আরও দাবি, ইচ্ছাকৃত ভাবে দেরি করে ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। প্রশ্ন, ঘটনায় পুলিশ অফিসার জড়িত বলেই কি তদন্তে ঢিলেমি?
মৃতার খুড়তুতো ভাইয়ের (তিনিও পেশায় চিকিৎসক) অভিযোগ, ‘‘আমাদের অনুপস্থিতিতেই বাড়ি থেকে দেহ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। উচিত ছিল পরিবারের লোকের সামনে সবটা করা। কিন্তু তা করেনি। এমনকি সকাল ৬টা পর্যন্ত তাঁর ময়নাতদন্ত করার জন্য কেউ ছিলেন না।’’
রাজ্য পুলিশের তদন্তের উপর ভরসা নেই মৃতার পরিবারের। তাঁর ভাইয়ের দাবি, অন্য রাজ্যের কোনও মহিলা পুলিশ আধিকারিকের নেতৃত্বে বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করে মৃত চিকিৎসকের আত্মহত্যার ঘটনার তদন্ত করুক! তাঁর আশঙ্কা, রাজ্য পুলিশ এই ঘটনার তদন্তে প্রভাব খাটাতে পারে।
মহারাষ্ট্রের সাতারা জেলার ফলটনের একটি সরকারি হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসার হিসাবে কর্মরত ছিলেন ওই তরুণী চিকিৎসক। গত বৃহস্পতিবার সাতারারই এক হোটেলের ঘর থেকে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। কেন তিনি আত্মহত্যা করেছেন, তা নিজের হাতের তালুতে লিখে রাখেন। শুধু তা-ই নয়, চার পাতার এক সুইসাইড নোটও লেখেন তিনি। আত্মহত্যার আগে ফলটন থানার পুলিশের এক সাব-ইনস্পেক্টরের (এসআই) বিরুদ্ধে বার বার ধর্ষণের অভিযোগ তোলেন সুইসাইড নোটে। মানসিক ভাবে হেনস্থা করার অভিযোগ তোলেন তাঁর বাড়িওয়ালার পুত্রের বিরুদ্ধে। পুলিশ ইতিমধ্যেই দু’জনকে গ্রেফতার করেছে।
মহারাষ্ট্রের এই আত্মহত্যার ঘটনায় মৃতার পরিবার যেমন একের পর এক অভিযোগ তুলছে, তেমনই অভিযুক্তদের পরিবারও পাল্টা অভিযোগ আনছে। বাড়িওয়ালার ধৃত পুত্রের পরিবারের দাবি, তরুণী চিকিৎসকের বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করার ‘ফল’ ভুগতে হচ্ছে তাদের। শুধু তা-ই নয়, পুলিশও মৃত তরুণী চিকিৎসককে ‘কাঠগড়ায়’ তুলেছে। চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ‘দুর্ব্যবহার’ এবং কাজে অসহযোগিতার অভিযোগ দায়ের করে পুলিশ। সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, ফলটন গ্রামীণ থানার ইন্সপেক্টর সুনীল মহাধিক তাঁর চিঠিতে দাবি করেছেন, ওই তরুণী চিকিৎসক পুলিশের সঙ্গে সহযোগিতা করতেন না। আধিকারিকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করতেন প্রায়ই। যদিও মৃতার পরিবারের দাবি, হাসপাতালে অনৈতিক কাজ করতে জোর করা হত চিকিৎসককে। প্রভাব খাটিয়েছিলেন এক সাংসদও।