Kisan March

ফের কৃষি আন্দোলনে উত্তাল মহারাষ্ট্র, মোদী সরকারের বিরুদ্ধে পথে নামলেন ৫০ হাজার কৃষক

আগামী বুধবার স্বাধীনতা সংগ্রামী চন্দ্রশেখর আজাদের ৮৮তম মৃত্যুবার্ষিকী। ওই দিন মুম্বই এসে পৌঁছবেন আন্দোলনকারী কৃষকরা।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

মুম্বই শেষ আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১৪:৩৪
Share:

সরকারের বিরুদ্ধে পথে নামলেন কৃষকরা। ছবি: টুইটার থেকে সংগৃহীত।

লোকসভা নির্বাচনের আগে বাজেট পেশ হয়েছে সংসদে। তাতে ভুরি ভুরি প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সরকার। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কানাকড়িও হাতে পাননি তাঁরা। তাই ফের পথে নামলেন মহারাষ্ট্রের কৃষকরা।কৃষিঋণ মকুব, ফসলের ন্যায্য দাম, সেচ সুবিধা এবং পেনশন-সহ নানা ইস্যুতে এই নিয়ে গত একবছরে দ্বিতীয়বার পথে নামলেন তাঁরা। এর আগে, গত বছর মার্চে নাসিক থেকে পায়ে হেঁটে মুম্বই পৌঁছেছিলেন রাজ্যের প্রায় ৩০ হাজার কৃষক।

Advertisement

বুধবার মার্কসবাদী নেতা ও সমাজকর্মী গোবিন্দ পানসারের চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী ছিল। ওই দিন মহারাষ্ট্র সরকারের মন্ত্রী গিরীশ মহাজনের সঙ্গে বৈঠক করেন অখিল ভারতীয় কিসান সভা (এআইকেএস) নেতৃত্ব। নিজেদের দাবিদাওয়া তুলে ধরেন তাঁরা। কিন্তু তাতেও সমঝোতায় পৌঁছনো যায়নি। বাধ্য হয়ে রাতেই পথে নামেন সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত রাজ্যের ২৩টি জেলার প্রায় ৫০ হাজার কৃষক। নাসিক থেকে ১৮০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত মুম্বইয়ের উদ্দেশে রওনা দেন তাঁরা। শুরুতে রাজ্য পুলিশের তরফে বাধা দেওয়া হয় আন্দোলনকারীদের। ট্রাক, ম্যাটাডোর এবং ট্র্যাক্টর নিয়ে মিছিলে যোগ দিতে গেলে বিভিন্ন জায়গায় আন্দোলনকারীদের পথ আটকায় রাজ্য পুলিশ। কিন্তু সংবাদ মাধ্যমে বিষয়টি ছড়িয়ে পড়লে পিছু হটে পুলিশ।

আগামী বুধবার স্বাধীনতা সংগ্রামী চন্দ্রশেখর আজাদের ৮৮তম মৃত্যুবার্ষিকী। ওই দিন মুম্বই এসে পৌঁছবেন আন্দোলনকারী কৃষকরা। সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাত্কারে এআইকেএস নেতা অশোক ধাওয়ালে জানান, ‘‘মিছিলের অনুমতি দেয়নি পুলিশ। তা সত্ত্বেও পথে নেমেছি আমরা। গিরীশ মহাজনের সঙ্গে বৈঠক হয় গতকাল। দাবিদাওয়া পূরণের আশ্বাসও দেন তিনি। কিন্তু শুধুমাত্র মুখের কথায় আর বিশ্বাস করব না আমরা। সেটা ওঁকেও স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছি। মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়ণবীসকে লিখিত দিতে হবে। যতদিন পর্যন্ত তা না হচ্ছে, আন্দোলন চালিয়ে যাব আমরা।’’

Advertisement

মিছিলে সামিল হাজার হাজার কৃষক।

আরও পড়ুন: গোপন ‘বার্তা’য় সন্দেহ, ফের জঙ্গি হামলার আশঙ্কায় নিরাপত্তা জোরদার কাশ্মীরে​

আরও পড়ুন: ‘দেশভক্ত’দের বেধড়ক মারে রক্তাক্ত, তবু বাংলা ছাড়বেন না কাশ্মীরের শাল বিক্রেতা জাভেদ​

ঋণ মকুব-সহ একাধিক ইস্যুতে দীর্ঘদিন ধরেই মোদী সরকারের বিরুদ্ধে সরব মহারাষ্ট্রের কৃষকরা। তাঁদের দাবি দাওয়া নিয়ে আপত্তি না করলেও, এই আন্দোলনের তীব্র সমালোচনা করেছেন মহারাষ্ট্রের মন্ত্রী গিরীশ মহাজন। লোকসভা নির্বাচনের আগে খামোকা সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে বলে দাবি তাঁর। একটি সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘‘ন্যায্য দাবিদাওয়া যা ছিল, তা ইতিমধ্যেই পূরণ করেছে সরকার। কিন্তু সবকিছু ওদের ইচ্ছা অনুযায়ী করা সম্ভব নয়। লোকসভা নির্বাচন এগিয়ে আসছে। সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করতে তাই কৃষকদের পথে নামানো হয়েছে। রেশন কার্ডের মতো সামান্য বিষয় নিয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে নাসিক থেকে মুম্বই পর্যন্ত টেনে আনা হচ্ছে আন্দোলন। এই অন্যায় মেনে নেওয়া যায় না। মিছিলে অনুমতি দেব না আমরা।’’ কিন্তু ঋণ মকুব এবং সেচ সুবিধা সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে আন্দোলন তো দীর্ঘদিনের! সেই প্রশ্নের জবাবে গিরীশ বলেন, ‘‘খুব শীঘ্র সেগুলির সমাধান হয়ে যাবে।’’

তাঁর যুক্তি অবশ্য মানতে চাননি আন্দোলনকারীরা। তাঁদের দাবি, কৃষি ঋণ মকুবের জন্য ৩৪ হাজার কোটির প্রকল্প ঘোষণা করেছিল সরকার। যার মধ্যে এখনও পর্যন্ত মাত্র ১৭ হাজার কোটি টাকাই কাজে লাগানো হয়েছে। এই মুহূর্তে কৃষকদের হাতে টাকা তুলে দেওয়ার প্রক্রিয়া বন্ধ রয়েছে বলেও অভিযোগ তোলেন তাঁরা। অশোক ধাওয়ালে বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী নিজে জানিয়েছেন, ঋণ মকুব প্রক্রিয়ায় কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছে। আগে সেটার সমাধান করতে হবে। কিন্তু কত সময় লাগবে, তা জানাননি তিনি।’’ আন্দোলন ঠেকিয়ে রাখতে বৃহস্পতিবার বিকেলে দেবেন্দ্র ফড়ণবীস লিখিত প্রতিশ্রুতি দিতে পারেন বলে মহারাষ্ট্র সরকার সূত্রে খবর। তবে এখনও পর্যন্ত নির্দিষ্ট ভাবে কিছু জানা যায়নি।

(দেশ দেশজোড়া ঘটনার বাছাই করা সেরা বাংলা খবর পেতে পড়ুন আমাদের দেশ বিভাগ।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন