Farmers' Protest

বরফ গলল না, কেন্দ্রের সঙ্গে ফের বৈঠক মঙ্গলবার

কৃষক সংগঠনের নেতারা অভিযোগ করেন, আন্দোলনে যাঁরা নানা ভাবে সাহায্য করছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে এনআইএ-কে কাজে লাগানো হচ্ছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০২১ ০৪:১৩
Share:

ছবি: পিটিআই।

তারিখ পে তারিখ!

Advertisement

তিন কৃষি আইন নিয়ে মোদী সরকারের সঙ্গে কৃষক সংগঠনগুলির নবম দফার বৈঠকেও কোনও সমাধানসূত্র মিলল না। বৈঠকে সিদ্ধান্ত একটিই— ফের ১৯ জানুয়ারি, মঙ্গলবার দশম দফার বৈঠক হবে।

এই বৈঠকেই কৃষক সংগঠনের নেতারা অভিযোগ করেন, আন্দোলনে যাঁরা নানা ভাবে সাহায্য করছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে এনআইএ-কে কাজে লাগানো হচ্ছে। মোদী সরকারের মন্ত্রীদের দিকে আঙুল তুলে কৃষক নেতাদের নালিশ, কয়েক জন ব্যবসায়ী কৃষকদের জন্য বাসের ব্যবস্থা করেছেন। এ জন্য তাঁদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের মামলায় এনআইএ-কে মাঠে নামানো হয়েছে। কঠোর ইউএপিএ আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

Advertisement

এর আগেও কৃষক সংগঠনগুলির বিরুদ্ধে নানা রাজ্যে দমনমূলক পদক্ষেপের অভিযোগ উঠেছে। বিভিন্ন রাজ্য থেকে কৃষকরা দিল্লির সীমানায় আন্দোলনে যোগ দিতে আসার চেষ্টা করলে তাঁদের বাধা দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আজ কৃষক নেতারা সরাসরি কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলায় মন্ত্রীরা উত্তর খুঁজে পাননি বলে কৃষক নেতাদের দাবি।

তিন কৃষি আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলনকারী সংগঠনগুলির মঞ্চ, সংযুক্ত কিসান মোর্চার নেতা দর্শন পালের অভিযোগ, লুধিয়ানার তিন ছোট ব্যবসায়ী কৃষকদের জন্য বাসের ব্যবস্থা করেছিলেন। আমেরিকার খলিস্তানি সংগঠন ‘শিখস ফর জাস্টিস’— এর সঙ্গে তাঁদের নাম জড়িয়ে এনআইএ জিজ্ঞাসাবাদের নোটিস পাঠিয়েছে।

এই তিক্ততার জেরেই এ দিনের বৈঠকেও সমাধানসূত্র মেলেনি। এর আগে সুপ্রিম কোর্টে কেন্দ্রের অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেণুগোপাল অভিযোগ তুলেছিলেন, কৃষকদের আন্দোলনে খলিস্তানি অনুপ্রবেশ ঘটেছে। প্রশ্ন উঠেছে, তা হলে কৃষক নেতাদের সঙ্গে সরকারের মন্ত্রীরা আলোচনায় বসছেন কেন? কৃষিমন্ত্রী তোমর বলেন, “যে সব কৃষক সংগঠনের নেতারা আসছেন, তাঁরা কৃষকদের প্রতিনিধি ধরে নিয়েই আমরা কথা বলছি। এর বেশি কিছু ভাবতে চাইছি না।” এ দিন বৈঠকের আগে কৃষিসচিবের সঙ্গে বৈঠক করেন তোমর। খাদ্যমন্ত্রী পীযূষ গয়াল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন বলে সূত্রের খবর। বৈঠকে মন্ত্রীরা জানতে চান, অত্যাবশ্যক পণ্য আইনে সংশোধন নিয়ে কৃষক নেতাদের ঠিক কোথায় আপত্তি?

কৃষক নেতারা জানান, কর্পোরেট সংস্থাগুলি যত ইচ্ছে খাদ্যশস্য মজুতের ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কৃষকদের সেই অধিকার নেই। গয়াল গোটা আইনের ব্যাখ্যা দেন। কিন্তু কৃষক নেতারা আইনের খুঁটিনাটি বিষয়ে আলোচনায় যেতে চাননি। তাঁরা দাবি করেন, তিনটি কৃষি আইন-ই প্রত্যাহার করতে হবে।

এর আগে একাধিক বার মন্ত্রীরা বলেছিলেন, এমএসপি-র আইনি গ্যারান্টির দাবি নিয়ে তাঁরা সরকারের নির্দিষ্ট প্রস্তাব জানাবেন। কৃষিমন্ত্রী জানতে চান, এমএসপি-র আইনি গ্যারান্টি দেওয়া হলে কি আন্দোলন প্রত্যাহার হবে? কৃষক নেতারা জানিয়ে দেন, তিন কৃষি আইন প্রত্যাহার না-হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। মন্ত্রীরা প্রস্তাব দেন, কৃষক নেতারা একটি ছোট কমিটি তৈরি করুন, যাঁরা আইন নিয়ে আলোচনা করবেন। কিন্তু তাতেও কৃষক নেতারা রাজি হননি। পরিবেশ উত্তপ্ত হয়ে ওঠায় বৈঠক শেষ পর্যন্ত ভেস্তে যায়। কৃষক নেতারা এ দিন ফের জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁরা সুপ্রিম কোর্টের নিযুক্ত কমিটির সামনে যাবেন না। তবে সরকার কমিটির সামনে নিজের বক্তব্য পেশ করবে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন