নিপা নিয়ে আতঙ্ক কেরলে। ছবি: রয়টার্স।
এ যেন গোদের উপর বিষফোঁড়া। ইতিমধ্যেই নিপার থাবায় কেরলে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ১৬ জনের। মারণ ভাইরাসের হানা যখন স্তিমিত হয়ে এসেছে বলে মনে করা হচ্ছিল, তখনই আশঙ্কার সুরে কেরল প্রশাসন জানাল, নিপা ভাইরাস আবারও ছড়িতে পারে নতুন করে। উদ্বেগের যে যথেষ্ট কারণ রয়েছে, তার প্রমাণও মিলেছে হাতেনাতে। নিপার উপসর্গ নিয়ে নতুন করে কোঝিকোড় মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হয়েছেন ছ’জন।
অতএব ফের উদ্বেগ। মাঝের কয়েক দিন নিপার মৃত্যরথ থমকে দাঁড়ানোয় যে আশার আলো দেখা যাচ্ছিল, তা ফের যেন নিভতে বসেছে। কেরলের স্বাস্থ্যমন্ত্রী কে কে শৈলজার কথায়, ‘‘প্রথম পর্যায়ে নিপাকে নিয়ন্ত্রণ করা গিয়েছে। কিন্ত ইতিহাস বলছে, নিপা দ্বিতীয়বার ফিরে আসে। ফলে নতুন সংক্রমণের আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।’’ চিকিত্সকরা বলছেন, নতুন করে ফিরে আসা নিপা ভাইরাস আরও বিপজ্জনক হয়ে ওঠার সম্ভাবনাও রয়েছে।
প্রশ্ন উঠছে, তবে উপায় কী? নিপায় শুধু যে সাধারণ মানুষের মৃত্যু হয়েছে, তা নয়। রোগীর সেবা-শুশ্রূষা করতে গিয়ে এক নার্সেরও মৃত্যু হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে কেরল সরকারও উদ্বিগ্ন। নিপা আক্রান্তদের চিকিত্সায় যুক্ত ছিলেন, এমন বেশ কয়েক জন নার্স ও চিকিত্সকে ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। হাসপাতাল কর্মীরা যাতে সংক্রমণের শিকার না হন, সে জন্য তাঁদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। প্রশ্ন উঠছে, প্রথম পর্যায়ের নিপাকে সামলাতেই রাতের ঘুম ছুটে গিয়েছে, তা নতুন ভাবে ফিরলে সত্যিই আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠবে না তো?
আরও পড়ুন: নিপা, নাম শুনেই দাদার কথা মনে পড়ল
আরও পড়ুন: জঙ্গির বাড়িতে আগুন দেওয়ায় অভিযুক্ত সেনা
শুধু যে মানুষের জীবন নিয়ে আতঙ্ক, তা নয়। নিপা ধাক্কা দিয়েছে কেরলের অর্থনীতিকেও। পর্যটন শিল্প প্রায় শিকেয়, তার উপর কেরল থেকে যে সমস্ত দেশ ফলমূল আমদানি করত, তারাও মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। যদিও এ মুহূর্তে আর্থিক লাভ-ক্ষতির হিসেবে যেতে রাজি নয় কেরল প্রশাসন। সাধারণ মানুষের উদ্দেশে সতর্কবার্তা জারি করে তারা বলছে, ভিড় এড়িয়ে চলুন। জ্বর হলে উপেক্ষা করবেন না। নিপা সঙ্কটের কারণে আগামী ১৬ জুন কেরল পাবলিক সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষাও বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। কোঝিকোড়ে ১২ জুন পর্যন্ত সমস্ত স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।