টিটেনাস কখন নিতে হয়? ছবি: ফ্রিপিক।
লোহার কোনও কিছুতে আঘাত লাগলে বা কেটে গিয়ে রক্তপাত হলে সংক্রমণের ভয় পেয়ে বসে। তাড়াতাড়ি টিটেনাস ইঞ্জেকশন নেওয়ার কথা বলেন অনেকে। কিন্তু কথা হল, লোহার কিছুতে কেটে যাওয়া মানেই কি টিটেনাস নিতে হবে? কখন নিতে হয় এই প্রতিষেধক?
আঘাত লাগা বা কাটা জায়গা ঠিকমতো পরিষ্কার না করলে সেখানে ব্যাক্টেরিয়া জন্মায়। ব্যাক্টিরিয়াম ক্লস্ট্রিডিয়াম টিটেনি-র কারণে ধনুষ্টঙ্কার বা টিটেনাস রোগ হয় যা থেকে বাঁচতেই টিটেনাস নেওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। অনেকেরই ধারণা, লোহায় কেটে গেলেই কারও টিটেনাস হতে পারে। সব ক্ষেত্রেই যে টিটেনাস হবে তা নয়। কারও যদি কোথাও কোনও ক্ষত থাকে, তিনি সেটা ঠিকমতো পরিষ্কার না করেন এবং কোনও নোংরা জায়গা থেকে ক্ষতটি সংক্রমিত হয়, তা হলে সেই ব্যক্তির টিটেনাস হওয়ার ঝুঁকি বেশি।
টিটেনাস হলে শরীরের পেশিগুলি শক্ত হতে থাকে। স্নায়ুর কার্যকারিতা কমে যায়। শ্বাসপ্রশ্বাস নিতে কষ্ট হয়। রোগীর শ্বাসকষ্ট শুরু হতে পারে। এই সময়ে রক্তচাপ খুব বেড়ে যেতে বা কমে যেতে পারে।
কখন নিতে হয় টিটেনাস?
সাধারণত জন্মের পরেই শিশুদের টিটেনাসের তিনটি ডোজ় দেওয়া হয়, তার পর দ্বিতীয় বছরে একটি, চার থেকে সাত বছর আরও একটি এবং দশ বছরে একটি ডোজ় দেওয়া হয়। এর পরে বলা হয় প্রতি দশ বছরে একটা করে বুস্টার ডোজ় নিতে। শিশুর যদি টিটেনাসের ডোজ় ঠিকমতো নেওয়া থাকে, তা হলে ভয় কম। সে ক্ষেত্রে হঠাৎ করে কোনও কিছু আঘাত লাগলে বা কেটে গেলেই ইঞ্জেকশন নেওয়ার দরকার পড়বে না। যদি ক্ষতস্থান খুব গভীর হয়, তা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
ছড়ে বা কেটে গেলে এক বার টিটেনাস ইঞ্জেকশন দেওয়া হলে তার মেয়াদ থাকে ৫ বছর পর্যন্ত। টিটেনাসের অ্যান্টিজেন শরীর যাওয়ার পর ৮-১০ দিন লাগে অ্যান্টিবডি তৈরি হতে। তবে ৫ বছর পর যদি কোনও ক্ষত থেকে সংক্রমণ হয়, তা হলে ফের টিটেনাসের ডোজ় নিতে হবে।
টিটেনাসের ডোজ় কখন নিচ্ছেন, সেই সময়টা মনে রাখা জরুরি। এর পাঁচ বছরের মধ্যে সাধারণত আর ইঞ্জেকশন নেওয়ার দরকার পড়ে না। তবে যদি শেষ ডোজ়টি পাঁচ বছর আগে নেন, তা হলে আরও একটি বুস্টার ডোজ় নিয়ে রাখলে ভাল।
আঘাত যদি গুরুতর হয় ও আগে টিকা নেওয়া না থাকে, তা হলে টিটেনাস ইমিউনোগ্লোবিউলিন ও টিটেনাস ভ্যাকসিন, দু’টিই নিতে হতে পারে।