শত্রুশিবিরের জন্য বড় ‘ধাক্কা’। মহাকাশে মেঘনাদ বললে ভুল হবে না সমুদ্রসীমানায় কোনও চিনা যুদ্ধজাহাজ লুকিয়ে আছে কি না অথবা পাকিস্তানের জঙ্গি ঘাঁটিতে সন্ত্রাসবাদীরা কী করছে, সেই গতিবিধি এক লহমায় চলে আসবে ভারতের কাছে।
বুধবার ভোর ৫.৩০ মিনিট নাগাদ অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটা থেকে মহাকাশে অত্যাধুনিক গুপ্তচর উপগ্রহ (রিস্যাট-২) পাঠাল ভারত।নির্ভুল ভাবে শত্রুশিবিরের উপর কড়া নজরদারি চালাতে মহাকাশে পাড়ি দিল ভারতের বিশ্বস্ত ‘গুপ্তচর’। ইসরোর মুকুটে যোগ হল নতুন পালক।
সীমান্তের অন্য পারে শত্রুপক্ষের সেনাঘাঁটি বা জঙ্গিদের গোপন ঘাঁটির খুঁটিনাটি সভই চলে আসবে ভারতীয় মহাকাশ বিজ্ঞানীদের হাতে।
৬১৫ কিলোগ্রামের এই উপগ্রহটি স্থাপন করা হয়েছে পৃথিবীর নিম্ন কক্ষে ৫১৭ কিলোমিটার অর্বিটে।
কোনও একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুর ছবি দিনে দুই থেকে তিনবার তুলতে পারবে ভারতের ৬১৫ কেজি ওজনের এই নয়া ‘গুপ্তচর’। এর ফলে কোনও বাড়ি বা অঞ্চলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কী পরিবর্তন হচ্ছে, তা নির্ভুল ভাবে বলতে পারবে রিস্যাট-২।
আরব সাগর, বঙ্গোপসাগর, ভারত মহাসাগরের উপরও নজরদারি চালাবে এটি। রিস্যাট সিরিজের চারটি নজরদারি উপগ্রহ মহাকাশে পাঠিয়েছে ইসরো। তাদের মধ্যে রয়েছে রিস্যাট-১ ও রিস্যাট-২। রিস্যাটের পুরনো সিরিজের উপগ্রহের পাঠানো ছবি ও তথ্যের ভিত্তিতেই ২০১৬ সালে হয়েছিল উরির সার্জিক্যাল স্ট্রাইক।
এই উৎক্ষেপণে এই প্রথম ব্যবহার করা হল ভারতের নিজের বানানো প্রসেসর ‘বিক্রম’।
চলতি বছরে পুলওয়ামা হামলার প্রত্যাঘাত হিসেবে পাকিস্তানের বালাকোটে সন্ত্রাসবাদী সংগঠন জইশ-ই-মহম্মদের প্রশিক্ষণ শিবিরে যে বিমান-অভিযান চালিয়েছিল ভারতীয় বায়ুসেনা, সেটাও ওই রিস্যাটের পাঠানো ছবির ভিত্তিতেই।
রিস্যাট-২বি উপগ্রহে রয়েছে রিস্যাট এক্স-ব্যান্ডের সিন্থেটিক অ্যাপারচার রাডার বা এসএআর যা দিন ও রাতে নির্ভুল ছবি তুলতে সক্ষম।
মেঘ ফুঁড়ে মাটির যে কোনও ছবি, শত্রু শিবিরের অবস্থান, সন্ত্রাসবাদীদের গোপন গতিবিধি, তাদের যোগাযোগের মাধ্যম সবকিছুরই ছবি নিমেষে তুলে পাঠাতে পারবে এই উপগ্রহ। তাই একে মেঘনাদ বললে ভুল হবে কি?
পাশাপাশি এক মিটার দূরত্বের ‘অবজেক্ট’ নির্ভুল ভাবে চিহ্নিত করতে পারবে এটি। শুধু শত্রুদের গতিবিধি নয়, এর সিন্থেটিক অ্যাপারচার সেন্সর আবহাওয়ার তথ্যও দেবে সঠিক ভাবে।
মহাকাশবিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, রেডারে ধরা পড়া ছবি দেখে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মোকাবিলা করার জন্য আগাম পদক্ষেপ নেওয়া যাবে।