প্রতীকী ছবি।
পাক্কা ৫ বছর ৬ মাস ২৩ দিন পরে ‘ন্যায়বিচার’ পেয়েছেন। সারা দিন সুপ্রিম কোর্ট চত্বরে কাটানোর পরে অল্প সময়ের জন্য বাড়ি ফিরে তাই দেশের শীর্ষ আদালতকে ধন্যবাদ জানাচ্ছেন দিল্লি গণধর্ষণ-কাণ্ডে নির্যাতিতার বাবা বদ্রিনাথ সিংহ ও মা আশা দেবী। তবে তাঁরা জানেন, এখনও লড়াই বাকি। আশা দেবীর কথায়, ‘‘বিচারব্যবস্থার উপরে বিশ্বাস ফিরেছে। যারা এই ধরনের জঘন্য অপরাধ করে তাদের ক়ড়া বার্তা দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার আর্জি, মহিলাদের উপরে অত্যাচার রুখতে কড়া পদক্ষেপ করুন।’’
২০১২ সালের ২৬ ডিসেম্বর রাতে চলন্ত বাসে ওই তরুণীর উপরে যৌন নির্যাতনের ঘটনায় এক নাবালক-সহ পাঁচ অভিযুক্ত ধরা পড়েছিল। তাদের মধ্যে চার অভিযুক্ত মুকেশ সিংহ, পবন গুপ্ত, বিনয় শর্মা এবং অক্ষয়কুমার সিংহ এখনও জেলে বন্দি। তার মধ্যে তিন জন (অক্ষয়কুমার বাদে) গত বছর সুপ্রিম কোর্টে ফাঁসির আদেশ পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়ে আবেদন করে। সোমবারের রায়ে অবশ্য দিল্লি হাইকোর্টের দেওয়া ফাঁসির সাজাই বহাল রেখেছে শীর্ষ আদালত। রায়ের পরে নির্যাতিতার বাবা বদ্রিনাথ সিংহ আনন্দবাজারকে ফোনে বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্ট আবেদন খারিজ করে সমাজের কাছে এই বার্তাই দিয়েছে যে এমন ঘটনায় অভিযুক্তের চরম শাস্তিই হওয়া উচিত। আমাদের লড়াই এখনও কিছুটা বাকি রয়েছে। তবে ঘাবড়ানোর কিছু নেই। এই পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছি যখন, তখন শেষ দেখেই ছাড়ব।’’
গত বছর মে মাসে দিল্লি হাইকোর্ট ফাঁসির সাজা শোনালেও এখনও তা কার্যকর করা হয়নি। কেন্দ্রীয় সরকার উদ্যোগী হলে এত দিনে সেই রায় কার্যকর করা হত বলে মনে করছেন বদ্রিনাথ। তাঁর কথায়, ‘‘এত দিনে যদি ওদের ফাঁসি হয়ে যেত, তাহলে দেশের মেয়েদের উপরে যে ভাবে লাগাতার যৌন নিগ্রহ হয়ে চলেছে, তা হয়ত কিছুটা কমত।’’
আরও পড়ুন: মৃত্যুদণ্ডই শেষ কথা নয়, মত আইনজীবীদের
মামলায় দোষী সাব্যস্ত পবন ঘটনার সময়ে ‘নাবালক’ ছিল বলে দাবি তার আইনজীবী এ পি সিংহের। বদ্রিনাথ এই প্রসঙ্গে বলছেন, ‘‘অভিযুক্ত নাবালক হলে সেই প্রমাণ এত দিন আদালতে পেশ করেনি কেন! সংবাদমাধ্যমের সামনে দাঁড়িয়ে মিথ্যে কথা বললেই তো আর সেটা সত্যি হয়ে যায় না।’’ রায়ে খুশি উত্তরপ্রদেশের বালিয়া জেলায় মেড়াওয়ার কালান গ্রামের বাসিন্দারাও। ওই গ্রামেই নির্ভয়ার বাড়ি। আজ বিশেষ পুজো হয়েছে সে গ্রামের মন্দিরে। গ্রামবাসীদের মধ্যে মিষ্টি বিতরণ করা হয়েছে। নির্ভয়ার দাদু লালজি সিংহেরও দাবি, ‘‘অপরাধীদের এখনই ফাঁসি দেওয়া উচিত।’’