National News

কাশ্মীরে সেনার বিরুদ্ধে এফআইআর, মেহবুবার সঙ্গে সঙ্ঘাত শুরু বিজেপির

শনিবার সন্ধ্যায় জম্মু-কাশ্মীরের সোপিয়াঁ জেলায় সেনার গুলিতে জাভেদ আহমেদ বাট এবং সুহেল জাভেদ লোন নামে দুই তরুণের মৃত্যু হয়েছে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শ্রীনগর শেষ আপডেট: ২৯ জানুয়ারি ২০১৮ ২৩:১১
Share:

সেনা আধিকারিকের বিরুদ্ধে এফআইআর করে বিধানসভায় শরিক বিজেপি-র তীব্র আক্রমণের মুখে পড়তে হয়েছে জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতিকে। —প্রতীকী ছবি / ফাইল চিত্র।

ফের উত্তাল জম্মু-কাশ্মীরের রাজনীতি। সেনাবাহিনীর এক মেজরের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগে এফআইআর হওয়ায় মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতির তীব্র সমালোচনা শুরু করেছে রাজ্য সরকারের শরিক বিজেপি। মেহবুবা বিধানসভায় পাল্টা জানিয়েছেন, দেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের সঙ্গে কথা বলার পরেই তিনি সেনাকর্মীর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করার নির্দেশ দিয়েছেন।

Advertisement

শনিবার সন্ধ্যায় জম্মু-কাশ্মীরের সোপিয়াঁ জেলায় সেনার গুলিতে জাভেদ আহমেদ বাট এবং সুহেল জাভেদ লোন নামে দুই তরুণের মৃত্যু হয়েছে। সেনার দাবি, প্রবল পাথর হামলার মুখে পড়ে আত্মরক্ষায় গুলি চালাতে হয়েছিল। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি একে সংশ্লিষ্ট সেনা আধিকারিকের দায়িত্বজ্ঞানহীনতা বলেই মনে করছেন। তাঁর নির্দেশেই সেনাবাহিনীর এক মেজরের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ আনা হয়েছে।

সেনা মেজরের বিরুদ্ধে এফআইআর প্রত্যাহারের দাবিতে সোমবার জম্মু-কাশ্মীর বিধানসভায় তীব্র হইচই শুরু করেন বিজেপি বিধায়করা। শরিক দলকে শান্ত করতে মুখ্যমন্ত্রী তথা পিডিপি সুপ্রিমো মেহবুবা মুফতি নিজেই বিবৃতি দেন। তিনি বলেন, ‘‘হত্যাকাণ্ডের পরেই আমি প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলি এবং তিনি খুব ইতিবাচক ছিলেন। তিনি আমাকে বলেন, যদি গাফিলতির কারণে কিছু ঘটে থাকে বা ভুল কিছু ঘটে থাকে তা হলে আমি ব্যবস্থা নিতে পারি। তার পরেই আমরা এফআইআর দায়ের করেছি এবং ম্যাজিস্ট্রেটের অধীনে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: অর্থনৈতিক সমীক্ষা পেশ: জিডিপি বৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৭-৭.৫ শতাংশ

বিজেপি অবশ্য মুখ্যমন্ত্রীর ব্যাখ্যায় শান্ত হয়নি। এই এফআইআর সেনার মনোবলে ধাক্কা দেবে বলে দাবি করে বিজেপি বিধায়করা হইচই করতে থাকেন।

মেহবুবার দাবি, প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর সম্মতি নিয়েই তিনি সেনা আধিকারিকের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করেছেন। কিন্তু প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের বয়ান অন্য কথা বলছে। মন্ত্রকের মুখপাত্র কর্নেল রাজেশ কালিয়া বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছেন, সোপিয়াঁ জেলার গনোভপোরা এলাকায় শনিবার আচমকাই আক্রান্ত হয়েছিল সেনা কনভয়। কোনও প্ররোচনা ছাড়াই বাহিনীর কনভয় লক্ষ্য করে পাথর ছোড়া শুরু হয় বলে তিনি জানান। ১০০-১২০ জন পাথর ছোড়া শুরু করেছিল, দ্রুত সেই সংখ্যা বেড়ে ২০০-২৫০ হয়ে যায় বলে তিনি জানিয়েছেন।

আরও পড়ুন: ‘রাজার বক্তব্য শেষ, এ বারে প্রজার শুরু’

তিনি আরও জানান, পাথরের ঘায়ে এক জুনিয়র কমিশনড অফিসার জ্ঞান হারান এবং অচৈতন্য হয়ে পড়া ওই অফিসারকে গণপ্রহারের চেষ্টা হয়, তাঁর আগ্নেয়াস্ত্র ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা হয়। পরিস্থিতি হাতের বাইরে যাচ্ছে দেখেই সেনা গুলি চালাতে বাধ্য হয় বলে জানিয়েছেন কর্নেল কালিয়া। তাঁর কথায়, ‘‘পরিস্থিতির চূড়ান্ত অবনতি দেখেই সেনা গুলি চালাতে বাধ্য হয়েছিল।’’

শনিবারের এই ঘটনার পরে উত্তাল হয়ে ওঠে উপত্যকার বিভিন্ন এলাকা। বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনগুলি বন্‌ধের ডাক দেয়। বিক্ষোভ দেখানো হয় নানা জায়গায়। রাজধানী শ্রীনগরের বিভিন্ন অংশে কার্ফু জারি করতে হয়। অধিকাংশ দোকানপাটই বন্ধ ছিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন