কাছাড় জেলার বাঁশকান্দি পুলিশ ফাঁড়ির তারাপুরে ভূমিধসে এক মহিলা ও তাঁর চার সন্তানের মৃত্যু হয়েছে। আরও দু’টি শিশু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই মহিলার বাড়ি তারাপুরে একটি টিলার নীচে ছিল। গত কাল রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ বৃষ্টিতে টিলার অনেকটা অংশ হুড়মুড়িয়ে বাড়িটির উপর ভেঙে পড়ে। সে সময় গৃহকর্তা জমিরউদ্দিন সেখানে ছিলেন না। ছয় সন্তানকে নিয়ে জবদা খাতুন (৩০) ঘুমোচ্ছিলেন। ধসের পর এলাকাবাসী ওই বাড়ির কাছে যান। ৮ বছরের আচবা আলি ও ৫ বছরের জসেস আলিকে মাটি সরিয়ে উদ্ধার করেন তাঁরা। শিলচর থেকে রাজ্য দু্র্যোগ মোকাবিলা বাহিনীর জওয়ানরাও (এসডিআরএফ) উদ্ধারকাজ চালান। জবদা খাতুন ও তাঁর চার সন্তানকে জীবিত উদ্ধার করা যায়নি। মৃত শিশুদের নাম— জসনিয়া বেগম (১৪), জসির আলি (১২), আতম্বা আলি (৯) ও পপিপা বেগম (৭)। আজ ওই পাঁচটি মৃত দেহের শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ময়না তদন্ত হয়েছে। স্ত্রী-সন্তানদের নিথর দেহ দেখে জমিরউদ্দিন শোখে ভেঙে পড়েন। দ্রুত মাটি সরাতে গিয়ে তিনিও জখম হয়েছেন। আচবা-জসেসের সঙ্গে তাঁকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
গত রাতেই ঘটনাস্থলে পৌঁছন কাছাড়ের অতিরিক্ত জেলাশাসক বরেণ্য দাস, লক্ষ্মীপুরের সার্কল অফিসার প্রদীপকুমার গুপ্ত, স্বাস্থ্য বিভাগের যুগ্ম অধিকর্তা সুদীপজ্যোতি দাস ও জেলা দুর্যোগ মোকাবিলা প্রকল্প অফিসার শামিম আহমেদ। লক্ষ্মীপুরের কংগ্রেস বিধায়ক রাজদীপ গোয়ালাও তারাপুরে গিয়ে উদ্ধারকার্য তদারকি করেন। তিনি জানান, জমিরউদ্দিন পেশায় দিনমজুর। ধস চাপায় তার গরু, ছাগল, মুরগিগুলিও মারা গিয়েছে। তাই ঘর তৈরি, আহতদের চিকিৎসা এবং মৃতদের সৎকারের জন্য তিনি সরকারের কাছে আর্থিক সাহায্য চেয়েছেন। জেলা বিজেপি সভাপতি কৌশিক রাই এই ঘটনায় উদ্বেগ ব্যক্ত করেন।
অতিরিক্ত জেলাশাসক বরেণ্য দাস জানান, জেলা প্রশাসন জমিরউদ্দিন ও তার জখম শিশুদের খোঁজখবর রাখছে। রাজ্য দুর্যোগ মোকাবিলা আইনে মৃতদের জন্য ৪ লক্ষ টাকা করে দেওয়া হবে। তবে ক্ষতিপূরণের টাকা পাওয়ার জন্য কিছু দিন অপেক্ষা করতে হবে।