বিভ্রান্ত: উড়ানের তথ্য জানতে বিমান সংস্থার কাউন্টারে ভিড় যাত্রীদের। রবিবার, কলকাতা বিমানবন্দরে। — নিজস্ব চিত্র।
গত কয়েক দিনের তুলনায় বাতিল উড়ানের সংখ্যা কিছুটাকমলেও ইন্ডিগোর সমস্যা এখনও অব্যাহত। রবিবার অন্যান্য শহর থেকে কলকাতাগামী এবং কলকাতা থেকে অন্যান্য শহরগামী মিলিয়ে ৭৬টির মতো উড়ান বাতিল হয়েছে। এর মধ্যেকলকাতাগামী ২৩টি এবং কলকাতা থেকে অন্যান্য শহরগামী ৫৩টি উড়ান রয়েছে। এ দিন কলকাতা বিমানবন্দর থেকে ইন্ডিগোর ১২৯টি উড়ান ছেড়ে গিয়েছে এবং ৯৭টি উড়ান কলকাতায় এসে পৌঁছেছে বলে খবর।
তবে, যে সব যাত্রী উড়ান ধরতে কলকাতা বিমানবন্দরেএসেছিলেন, তাঁদের অনেকের উড়ান গত দু’দিনে পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে। যাত্রীদের অনেককে মুম্বই,আমদাবাদ, চেন্নাই, বেঙ্গালুরুর মতো শহরে পৌঁছতে ঘুরপথে অন্য শহর থেকে উড়ান ধরতে হয়েছে। বিমান পরিবহণ মন্ত্রকের নির্দেশিকা সত্ত্বেও এ দিনও দিল্লি,মুম্বই, বেঙ্গালুরু, চেন্নাইয়ে সরাসরি পৌঁছয়, এমন উড়ানের ক্ষেত্রে ভাড়া কার্যত ধরা-ছোঁয়ার বাইরেছিল। অভিযোগ, গড়ে ৪০ থেকে ৬৫ হাজার টাকার মধ্যে ঘোরাফেরা করেছে ওই সব উড়ানের ভাড়া।
কলকাতা থেকে আমদাবাদ যাওয়ার ইন্ডিগোর টিকিট ছিল হীরালাল প্রধানের। সেই উড়ানবাতিল হওয়ায় অন্য সংস্থার সরাসরি উড়ানের টিকিট কাটতে গিয়ে তিনি দেখেন, দাম আকাশ ছুঁয়েছে, প্রায় ৬০ হাজার টাকার কাছাকাছি। তখন বাধ্য হয়ে ৩৭ হাজার টাকা খরচ করে ঘুরপথে উড়ানের টিকিট কাটতে হয় তাঁকে। কল্যাণবসু দিন তিনেক আগে মুম্বই হয়েদিল্লি গিয়েছিলেন। সেখান থেকে এক আত্মীয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগদিতে ইন্ডিগোর উড়ানে পটনা যাওয়ার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু বিমান সংস্থা বোর্ডিং পাস দেওয়ার পরেও উড়ান বাতিল করে। প্রায় ছ’মাস আগে পরিকল্পনাকরা অনুষ্ঠানে যোগ দিতে নাপেরে দিল্লিতে দু’দিন ধরে আকাশছোঁয়া দরে হোটেলের ভাড়া দিয়ে আটকে থাকতে হয় তাঁকে। শেষপর্যন্ত অনেক বেশি টাকা দিয়ে এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের উড়ানেরটিকিট কেটে রবিবার মুম্বই ফিরে যান তিনি।
ইন্ডিগোর উড়ান-বিভ্রাটের কারণে কলকাতা-সহ দেশের সব মেট্রো শহরেই আচমকা হোটেলে থাকার খরচ বেড়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ। কলকাতা থেকে আগরতলা ছাড়াও উত্তর-পূর্বের বিভিন্ন গন্তব্যে পৌঁছতে সমস্যায় পড়ছেন যাত্রীরা। ওই সব শহরে পৌঁছতে অনেক ক্ষেত্রে ইন্ডিগোর উড়ানই একমাত্র ভরসা। দু’দিন ধরে উড়ান না পেয়ে আটকে থাকার পরে রবিবার আগরতলা ফিরতে পারার কথা জানান এক মহিলা যাত্রী।
কলকাতা বিমানবন্দরে যাত্রীদের সাহায্য করার জন্য ইন্ডিগোর পক্ষ থেকে দু’টি হেল্পলাইন নম্বর চালু করা হলেও সেখান থেকেবিশেষ কিছু সুরাহা হচ্ছে না বলে অভিযোগ যাত্রীদের বড় অংশের। প্রায়ই ওই নম্বর ব্যস্ত থাকছেঅথবা জরুরি তথ্য সেখান থেকে জানা সম্ভব হচ্ছে না বলে অভিযোগ। বিমান সংস্থা অন্য সব ক্ষেত্রে ওয়টস্যাপ মারফত যোগাযোগ রাখলেও উড়ান বাতিলের খবর ওয়টস্যাপ বা ইমেলে মিলছে না।
তবে ইন্ডিগোর দাবি, গত কয়েক দিনের তুলনায় রবিবারউড়ানের সংখ্যা বেড়েছে সংস্থার। সারা দেশে এ দিন ২২০০টি উড়ানের মধ্যে ১৬৫০টি চলেছে। এই ব্যবধানদ্রুত আরও কমিয়ে আনার চেষ্টা চলছে। ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে পরিষেবা স্বাভাবিক হয়ে যাবে বলে সংস্থার দাবি। রবিবার সংস্থার উড়ানের সময়ানুবর্তিতা গত দু’দিনের ৩০ শতাংশ থেকে এক লাফে ৭০ শতাংশে পৌঁছেছে বলে ইন্ডিগোর তরফে দাবি করা হয়েছে।
প্রতিদিন ২০০’রও বেশি এমন প্রিমিয়াম খবর
সঙ্গে আনন্দবাজার পত্রিকার ই -পেপার পড়ার সুযোগ
সময়মতো পড়ুন, ‘সেভ আর্টিকল-এ ক্লিক করে