গোয়ার সেই নৈশক্লাবের মালিক গৌরব এবং সৌরভ লুথরা। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
উত্তর গোয়ার আরপোরার ‘বার্চ বাই রোমিও লেন’ নৈশক্লাবে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার কথা শোনার পরই দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান ওই ক্লাবের দুই মালিক সৌরভ এবং গৌরব লুথরা (লুথরা ভাইয়েরা)। পুলিশ সূত্রে খবর, গত শনিবার যখন গোয়ার নৈশক্লাবে আগুন লাগে, সেই সময় দিল্লিতে এক বিয়ের অনুষ্ঠানে ছিলেন লুথরা ভাইয়েরা। রবিবার ভোর ৫টার সময় দিল্লি থেকে তাঁরা দু’জনে ইন্ডিগোর বিমানে তাইল্যান্ডের ফুকেতে পালিয়ে যান।
তদন্তকারী এক আধিকারিক জানিয়েছেন, লুথরা ভাইয়েরা ফুকেতে হোটেল ইন্ডিগোতে ওঠেন। সেখান থেকেই তাঁদের আটক করে তাইল্যান্ডের পুলিশ। দিল্লির পাসপোর্ট অফিস থেকে দুই ভাইয়ের পাসপোর্ট সাসপেন্ড করে দেওয়া হয়েছিল। তাঁদের ভ্রমণের নথিপত্রও বেআইনি বলে ঘোষণা করা হয়। ফলে তাইল্যান্ড থেকে অন্যত্র পালানোর সুযোগ পাননি লুথরা ভাইয়েরা। তাঁদের পাসপোর্ট এবং ভ্রমণ সংক্রান্ত তথ্যের ভিত্তিতে তল্লাশি শুরু করে তাইল্যান্ড পুলিশ। তখনই তারা হোটেল ইন্ডিগোতে সৌরভ এবং গৌরব লুথরার হদিস পায়। সেখান থেকে তাঁদের যাবতীয় জিনিস বাজেয়াপ্ত করা হয়। তার পর ইমিগ্রেশন ডিটেনশন সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়। দুই ভাইয়ের ছবিও প্রকাশ করে তাইল্যান্ড পুলিশ। সেখানে দেখা গিয়েছে, লুথরা ভাইদের হাতকড়া পরানো হয়েছে।
তবে তদন্তকারীদের একটি সূত্র বলছে, লুথরা ভাইদের এখনই ফেরানো সম্ভব হবে না। দেশে ফেরানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে ঠিকই, কিন্তু কিছু জটিলতার কারণে সেই প্রক্রিয়া দ্রুত সেরে ফেলা সম্ভব হচ্ছে না। ইতিমধ্যেই তাইল্যান্ডে হাজির হয়েছে গোয়া পুলিশ এবং সিবিআইয়ের যৌথ দল। তদন্তকারীদের আশা, দ্রুত সমস্ত প্রক্রিয়া শেষ করে দেশে লুথরা ভাইদের নিয়ে আসতে পারবেন। আপাতত তাঁদের ব্যাঙ্ককে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। গোয়া পুলিশের ডিজি অলোক কুমার জানিয়েছেন, লুথরা ভাইদের ফেরাতে অন্তত চার দিন সময় লেগে যেতে পারে। যেহেতু তাইল্যান্ড থেকে গোয়া আসার সরাসরি বিমান নেই, তাই লুথরাদের প্রথমে দিল্লি নিয়ে আসা হবে। তার পর নিয়ে যাওয়া হবে গোয়ায়।
গোয়া পুলিশ সূত্রে খবর, গত ৭ ডিসেম্বর, অর্থাৎ অগ্নিকাণ্ডের পরদিন লুথরা ভাইয়েরা দিল্লি থেকে ফুকেতগামী বিমানের টিকিট কাটেন। টিকিট কাটা হয়েছিল শনিবার রাত ১ট২ ১৭ মিনিটে। সেই সময় গোয়ার নৈশক্লাব আগুনে পুড়ছিল। দমকল আগুন নেবানোর কাজ করছিল। চলছিল উদ্ধারকাজও। ৭ ডিসেম্বর ভোর সাড়ে ৫টায় ইন্ডিগোর ৬ই-১০৭৩ বিমানে ফুকেতে পালিয়ে যান লুথরা ভাইয়েরা। রবিবার সকালে গোয়া পুলিশ দিল্লিতে লুথরা ভাইদের বাসভবনে যায়। কিন্তু তাঁদের হদিস মেলেনি। তাঁদের বাসভবনে নোটিস সাঁটিয়ে দিয়ে চলে আসে পুলিশ। ওই দিন সন্ধ্যায় লুকআউট সার্কুলার জারি করা হয়। দিল্লি পুলিশের সূত্রে গোয়া পুলিশ খবর পায়, লুথরা ভাইয়েরা দেশ ছেড়ে তাইল্যান্ডে পালিয়েছেন। তার পরই সিবিআইয়ের সহযোগিতায় ইন্টারপোলের সঙ্গে যোগাযোগ করে গোয়া পুলিশ। দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে ব্লু কর্নার নোটিস জারি করা হয়। তার পরই বৃহস্পতিবার লুথরা ভাইদের হোটেল ইন্ডিগো থেকে আটক করে তাইল্যান্ড পুলিশ।