পুরনো চাল ভাতে বাড়ে, বোঝাচ্ছেন সুদীপ

‘‘রাজনীতি করতে এসে ভাল-মন্দ অনেক দিন দেখেছি। এ বার কাজ শুরু করতে হবে। প্রথম কাজ, বাজেট করতে হবে। পূর্ণাঙ্গ বাজেট না হলে অন্তত ভোট অন অ্যাকাউন্ট।’’ তার মানে কি অর্থমন্ত্রী? ভাঙছেন না সুদীপ রায় বর্মণ। কিন্তু চাকা ঘুরিয়ে ছেড়েছেন!

Advertisement

সন্দীপন চক্রবর্তী

আগরতলা শেষ আপডেট: ১০ মার্চ ২০১৮ ০৩:৩৬
Share:

ভরপুর প্রচার চলছে তখন। মধ্যরাতে হোটেলের লবির সোফায় একাকী তিনি। দেখা হতে জানিয়েছিলেন, বিজেপির তরফে ত্রিপুরার ভোটে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা হিমন্তবিশ্ব শর্মার সঙ্গে সাক্ষাতের প্রতীক্ষায় আছেন।

Advertisement

মাসখানেক পরে আজ মন্ত্রিত্বে শপথ নিয়ে চওড়া হাসিসমেত নেমে এসেছেন মঞ্চ থেকে। ‘‘রাজনীতি করতে এসে ভাল-মন্দ অনেক দিন দেখেছি। এ বার কাজ শুরু করতে হবে। প্রথম কাজ, বাজেট করতে হবে। পূর্ণাঙ্গ বাজেট না হলে অন্তত ভোট অন অ্যাকাউন্ট।’’ তার মানে কি অর্থমন্ত্রী? ভাঙছেন না সুদীপ রায় বর্মণ। কিন্তু চাকা ঘুরিয়ে ছেড়েছেন!

প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি থেকে তৃণমূলের নেতা হয়ে শেষমেশ বিজেপি-তে। বারবার রং বদলে রাজনৈতিক ওজন টোল খেয়েছে। গেরুয়া শিবিরে ভিড়েও সঙ্ঘের কাছের লোক হতে পারেননি। কিন্তু সরকার গড়ার সময়ে এসে সেই সুদীপই বড় বাজিগর হয়ে দেখা দিচ্ছেন! একে তো বিজেপির ৫১ প্রার্থীর মধ্যে ৪১ জনই ছিলেন কংগ্রেস থেকে আসা। খাঁটি বিজেপি হিসেবে যাঁরা জয়ী, তাঁদের অধিকাংশের সরকার চালানো তো দূরস্থান, বিধায়ক হওয়ারই অভিজ্ঞতা নেই! স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেবই প্রথম বারের বিধায়ক। পরিস্থিতির এই মোড় কাজে লাগছে সুদীপের মতো পোড় খাওয়া বিধায়কদের।

Advertisement

রাজ্যপাল তথাগত রায় আজ শপথ পাঠ করিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব ছাড়া আরও ৮ মন্ত্রীকে। তাঁদের মধ্যে উপ-মুখ্যমন্ত্রী জিষ্ণু দেববর্মা ও নবীন সান্ত্বনা চাকমা খাঁটি বিজেপি। আইপিএফটি-র সভাপতি এন সি দেববর্মা এবং সাধারণ সম্পাদক মেবার কুমার জমাতিয়া দু’জনেই মন্ত্রী। বাকি চার জন— সুদীপ, রতনলাল নাথ, প্রাণজিৎ সিংহ রায় ও মনোজকান্তি দেব পুরনো কংগ্রেসি। সেখানেই শেষ নয়। বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের উপস্থিতিতে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের বৈঠক থেকে বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার পদও বার করেছে ‘কংগ্রেস লবি’। এক কালের রাজ্য কংগ্রেস সভাপতি অরুণ কুমার ভৌমিক হচ্ছেন ডেপুটি স্পিকার। আর স্পিকার পদে মনোনীত দিলীপ দাস।

ত্রিপুরায় মন্ত্রিসভা হতে পারে ১২ জনের। শপথ হয়েছে ৯ জনের। বাকি তিন জন কোন শিবিরের হবেন, টানাপড়েন অব্যাহত। চুলচেরা আলোচনা চলছে দফতর বণ্টন নিয়েও। যে কারণে মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠক আজ বিকেলের বদলে পিছিয়ে গিয়েছে কাল, শনিবার পর্যন্ত। সরকার চালাতে দরকার ৩১ জন বিধায়ক। জোটসঙ্গী আইপিএফটি-কে বাদ দিলে বিজেপির আছে ৩৫। তার মধ্যে পুরনো কংগ্রেস কি ভারী হয়ে গেল না? বিজেপির সাধারণ সম্পাদক রাম মাধবের ব্যাখ্যা, ‘‘ওঁদের আমরা আমাদের দলের সদস্য হিসেবেই দেখছি।’’

দেখছেন হয়তো। তবে হাসি চওড়া হচ্ছে সুদীপদের!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন