ব্যাঙ্কের বাইরে আজও ছিল লম্বা লাইন। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়।
বাতিল নোট বদলাতে দু’ঘণ্টা ব্যাঙ্কের লাইনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। ফর্ম এবং ভোটার কার্ডের ফটোকপি নিয়ে কাউন্টারে পৌঁছে শুনলেন আপনার এই প্রমাণপত্র দেখিয়ে আগেই টাকা বদলানো হয়ে গিয়েছে। নোট বাতিলের গেরোয় ভুগতে থাকা মানুষের কাছে এ এক নতুন আতঙ্ক। আপনার বৈধ প্রমাণপত্র অথচ আপনার অজান্তেই ব্যবহার করে ফেলছে কেউ। আর এর জেরে ভোগান্তি আরও বাড়ছে সাধারণ মানুষের।
কিন্তু কী ভাবে সম্ভব হচ্ছে এই জালিয়াতি?
পুরনো ৫০০ এবং হাজারের নোট বদলাতে ফর্মের পাশাপাশি তালিকায় থাকা যে কোনও একটি সচিত্র পরিচয়পত্র নিয়ে গ্রাহককে ব্যাঙ্কে যেতে নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র। প্যান কার্ড, ভোটার কার্ড-সহ একাধিক প্রমাণপত্র রয়েছে সেই তালিকায়। পাড়ার দোকানে সিম কার্ড নেওয়া থেকে ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খোলা— প্রায় সব ক্ষেত্রেই এখন সচিত্র পরিচয়পত্রের একটি করে সই করা নকল দেওয়া বাধ্যতামূলক। কাজ মিটে গেলে আপনার জমা দেওয়া সেই প্রমাণপত্রের কথা আর মনেও থাকে না। সমস্যার শুরু এখান থেকেই। সম্প্রতি একটি রিপোর্টে জানা গিয়েছে, সই করা সেই সব প্রমাণপত্র দিয়ে কালো টাকা সাদা করছে এক দল লোক। সমস্যায় পড়ছেন সাধারণ গ্রাহক। আর এই জালিয়াতির সঙ্গে ব্যাঙ্কের এক শ্রেণির কর্মীও সরাসরি যুক্ত রয়েছেন বলে অভিযোগ উঠছে। ব্যাঙ্কের এক আধিকারিকের দাবি, “বিষয়টি এত দিনে এতটাই ছড়িয়েছে যে, কোটি কোটি কালো টাকা সাদা করে নিয়েছে জালিয়াতেরা।”
এর থেকে কী ভাবে নিস্তার পাওয়া যায়?
বিষয়টি নজরে আসায় সতর্কতা জারি করেছে উত্তরপ্রদেশ সরকার। জালিয়াতি ঠেকাতে একটা ছোট্ট দাওয়াইয়ের নিদান দিয়েছে তারা। তাদের মতে, যখনই সচিত্র প্রমাণপত্র দেওয়ার প্রয়োজন হবে, তখনই ফটোকপির উপর সইয়ের পাশাপাশি তারিখ এবং কী কারণে তা জমা দিচ্ছেন লিখে দিন। উত্তরপ্রদেশের ডিজিপি অফিসের জনসংযোগ আধিকারিক টুইট করে জানান, ‘আপনার সচিত্র প্রমাণপত্র দেখিয়ে বাতিল নোট বদল করতে একটা চক্র সক্রিয় হয়েছে। এই জালিয়াতদের থেকে বাঁচতে সচিত্র প্রমাণপত্রের ফটোকপিতে সই করার সঙ্গে তারিখ এবং কারণটাও লিখে দিন।’ এর ফলে জালিয়াতি রোখা যাবে বলে আশা করছেন তাঁরা।
আরও পড়ুন:
সবাই একসঙ্গে বাঁচতে চায়, কেমন আছ নয়, দেখা হলে প্রশ্ন কত আছে?