Pakistani Spy Link

বিলাসবহুল জীবনযাপন, ঘন ঘন বিদেশ সফর! খরচ জোগাতেন কে? জ্যোতিকাণ্ডে মেঘের আড়ালের মেঘনাদের খোঁজে গোয়েন্দারা

পুলিশ জানিয়েছে, জ্যোতির পাকিস্তান সফরের খরচ জুগিয়েছিলেন অন্য কেউ। কে বা কারা টাকা দিয়েছিলেন তা খতিয়ে দেখছে তারা। তদন্তে পুলিশ এ-ও জেনেছে, পাকিস্তানে রীতিমতো ‘ভিআইপি’দের মতো সুযোগ-সুবিধা পেয়েছেন তিনি।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০২৫ ১৬:৩১
Share:

বিমানের বিজ়নেস ক্লাসে চড়ে সফর করছেন জ্যোতি মলহোত্রা। ছবি: সংগৃহীত।

দেশ-বিদেশে গিয়ে বিলাসবহুল হোটেলে থাকতেন। বিমানের বিজ়নেস ক্লাসে যাতায়াত করতেন জ্যোতি মলহোত্রা। এত টাকা কী ভাবে তাঁর কাছে আসত, তা-ই খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই-ই কি সেই টাকা দিত জ্যোতিকে? জানার চেষ্টা করছেন গোয়েন্দারা। পাক চরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার অভিযোগে গত শুক্রবার জ্যোতিকে গ্রেফতার করে হরিয়ানা পুলিশ।

Advertisement

জ্যোতির বিরুদ্ধে তদন্তে নেমে তাঁর ভিডিয়োগুলি খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। সূত্রের খবর, তা দেখতে গিয়েই তাঁদের নজরে এসেছে জ্যোতির জীবনযাত্রা। আয়ের সঙ্গে তাঁর ব্যায় সঙ্গত ছিল না বলেই অভিযোগ। সেই নিয়ে তদন্ত করছে পুলিশ। হিসার পুলিশের সুপার শশাঙ্ককুমার সাওয়ান বলেন, ‘‘আমরা তাঁর অ্যাকাউন্টে লেনদেন, কোথায় কোথায় গিয়েছিলেন, কার সঙ্গে দেখা করেছিলেন— সব দেখছি।’’ পুলিশের একটি সূত্র বলছে, বেড়াতে গিয়ে জ্যোতি থাকতেন বিলাসবহুল হোটেলে। খাওয়াদাওয়া করতে বিখ্যাত রেস্তরাঁয়।

পুলিশ জানিয়েছে, জ্যোতির পাকিস্তান সফরের খরচ জুগিয়েছিলেন অন্য কেউ। কে বা কারা টাকা দিয়েছিলেন তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। তদন্তে পুলিশ এ-ও জেনেছে, পাকিস্তানে রীতিমতো ‘ভিআইপি’দের মতো সুযোগ-সুবিধা পেয়েছেন তিনি। পাকিস্তান থেকে ফিরে তিনি গিয়েছিলেন চিনে। সে দেশেও বিলাসবহুল গাড়িতে চেপে ঘুরেছিলেন তিনি। গয়নার দোকানে গিয়েছিলেন। তদন্তকারীদের একটা অংশ মনে করছে, টাকার টানেই পাকিস্তানি চরদের ফাঁদে পা দিয়ে থাকতে পারেন জ্যোতি।

Advertisement

ইউটিউবার হিসাবে দ্রুত খ্যাতি এবং অর্থ উপার্জন করতে চেয়েছিলেন জ্যোতি মালহোত্রা। নিজের ক্ষেত্রের প্রতিযোগীদের পিছনে ফেলে এগিয়ে যেতে চেয়েছিলেন। জ্যোতির ইউটিউব চ্যানেল ‘ট্র্যাভেল উইথ জো’-এর সাবস্ক্রাইবারের সংখ্যা ৩ লক্ষ ৮৫ হাজার। এই সংখ্যাটাই দ্রুত বৃদ্ধি করতে চেয়েছিলেন। সে জন্য নিত্যনতুন কনটেন্টের প্রয়োজন ছিল তাঁর। সেই কনটেন্ট জোগাড় করতেই বার বার গিয়েছেন পাকিস্তানে। পুলিশ জানিয়েছে, সেই সূত্রেই পাকিস্তানি চরদের কাছে ক্রমেই ‘সম্পদ’ হয়ে উঠেছিলেন তিনি। হিসারের পুলিশ সুপার শশাঙ্ক জানিয়েছেন, পাক চরদের দেওয়ার মতো জ্যোতির কাছে তেমন তথ্য ছিল না। কারণ, ভারতীয় সেনার সঙ্গে তাঁর সরাসরি যোগাযোগ ছিল না। কিন্তু পাকিস্তানি আধিকারিকদের সঙ্গে যোগাযোগ তৈরি হয়েছিল তাঁর। ওই আধিকারিকের কথায়, ‘‘জ্যোতিকে নিজেদের সম্পদে পরিণত করেন পাক আধিকারিকেরা। অন্য ইউটিউবারদের সঙ্গেও তাঁর যোগযোগ ছিল। তাঁদের সঙ্গে আবার পিআইও (জন তথ্য অফিসার)-দের যোগাযোগ ছিল।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘এটাও এক ধরনের যুদ্ধের মতো, যেখানে তারা (পাকিস্তান) ইনফ্লুয়েন্সার নিয়োগ করে নিজেদের বক্তব্য প্রচারের চেষ্টা করে।’’

গত বছর দিল্লিতে পাকিস্তানের হাই কমিশনের ইফতার পার্টিতেও যোগ দিয়েছিলেন জ্যোতি। সেই প্রসঙ্গে হিসার পুলিশের সুপার বলেন, ‘‘সামাজিকতায় কোনও সমস্যা নেই। কিন্তু তাঁদের উদ্দেশ্য বুঝতে হবে। পাকিস্তান আমাদের জন্য সাধারণ দেশ নয়। সংঘাতের সময় সে দেশে বার বার ভ্রমণ, সামাজিক ভাবে মেলামেশা, যোগাযোগ রাখা, অনুগ্রহ বিনিময় দেশের ঐক্য, সার্বভৌমত্বে আঘাত হানতে পারে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement