মোদী-বার্তাতেও রেহাই নেই! গো-রক্ষার নামে দলিত নিগ্রহ এ বার অন্ধ্রে

স্বঘোষিত গো-রক্ষকদের কানে প্রধানমন্ত্রীর বার্তা কি পৌঁছয়নি? প্রশ্নটা উঠছে কারণ, ফের তাদের হাতেই নিগৃহীত হলেন দলিত সম্প্রদায়ের দুই ভাই। তাঁদের মধ্যে এক জনের অবস্থা বেশ আশঙ্কাজনক।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১০ অগস্ট ২০১৬ ১২:২০
Share:

.

স্বঘোষিত গো-রক্ষকদের কানে প্রধানমন্ত্রীর বার্তা কি পৌঁছয়নি?

Advertisement

প্রশ্নটা উঠছে কারণ, ফের তাদের হাতেই নিগৃহীত হলেন দলিত সম্প্রদায়ের দুই ভাই। তাঁদের মধ্যে এক জনের অবস্থা বেশ আশঙ্কাজনক।

অন্ধ্রপ্রদেশের পূর্ব গোদাবরী জেলার একটি মফস্‌সল শহর অমলাপূরম। সেখানকার জানকীপেটা এলাকায় দলিত নিগ্রহের ওই ঘটনার পিছনেও রয়েছে গরু চুরি করে চামড়া ছাড়ানোর অভিযোগ। পুলিশ যদিও চুরির অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। তারা জানিয়েছে, যে গরুটির চামড়া ছাড়াচ্ছিলেন দুই ভাই, বিদ্যুত্স্পৃষ্ট হয়ে সেটির মৃত্যু হয় আগেই। কিন্তু, এলাকারই কিছু স্বঘোষিত গো-রক্ষকের অভিযোগ, ওই গরু চুরি করে তার চামড়া ছাড়াচ্ছিলেন ওঁরা। সে কারণেই প্রায় দু’শো রক্ষক জড়ো হয়ে ওই দুই ভাইকে নারকেল গাছের সঙ্গে বেঁধে বেধড়ক পেটায়। গুরুতর জখম অবস্থায় তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে এখন তাঁরা চিকিত্সাধীন।

Advertisement

যে গরুটিকে কেন্দ্র করে এই ঘটনা, তার মালিকও স্বীকার করেছেন, সেটির মৃত্যু বিদ্যুত্স্পৃষ্ট হয়েই হয়েছে। পুড়িয়ে ফেলার আগে গরুটির চামড়া ছাড়িয়ে নেওয়ার বরাত মোকাটি এলিশা এবং লাজের নামে ওই দুই ভাইকে তিনিই দিয়েছিলেন। পুলিশও একই কথা জানিয়েছে। কিন্তু, স্বঘোষিত গো-রক্ষকদের তা শোনা বা বোঝার মতো কোনও সময় ছিল না। তারা এলাকায় গরুর চামড়া ছাড়ানোর খবর পেয়েই দুই ভাইয়ের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে।

স্বঘোষিত গো-রক্ষকদের হাতে দলিত নিগ্রহ ঘিরে গোটা দেশ বেশ কিছু দিন ধরেই তোলপাড়। এ নিয়ে দীর্ঘ নীরব থাকার পরে গত সপ্তাহেই প্রথম মুখ খুলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেছিলেন, ‘‘যদি আক্রমণ করতেই হয়, আমাকে করুন। যদি গুলি করতেই হয়, আমাকে গুলি করুন, আমার দলিত ভাইদের নয়। এই খেলা বন্ধ হোক।’’ একই সঙ্গে ‘নকল’ গো-রক্ষকদের একঘরে করে তাদের কঠোর শাস্তি দিতেও আর্জি জানিয়েছিলেন রাজ্য সরকারগুলির কাছে।

আরও পড়ুন
অবশেষে ‘গোরক্ষক’দের জুলুম নিয়ে নিন্দায় মুখর মোদী

প্রধানমন্ত্রীর এই বার্তা যে আসলে উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে, সে কথা সেই সময় বলেছিলেন রাজনৈতিক শিবিরগুলির একাংশ। তাদের মতে, গো-রক্ষার নামে যে ভাবে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে তাণ্ডব চলছে, তাতে উত্তরপ্রদেশের ভোটে দলিত সমর্থন হাতছাড়া হওয়ার ভয় রয়েছে নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহের। পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাওয়ারও আশঙ্কা রয়েছে। ওই অবস্থায় চাপের মুখে সরব হয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। তবে সেই বার্তা যে স্বঘোষিত গো-রক্ষকদের কানে পৌঁছয়নি, জানকীপেটার ঘটনা তারই প্রমাণ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন