প্রতীকী ছবি।
এমনিতেই ট্রেন প্রচুর। তার উপরে এসে পড়ল কুয়াশার দিন। জটের আশঙ্কা ঘনাচ্ছে আবার। এই অবস্থায় জট এড়ানোর অন্য পথ ধরেছে রেল। যাত্রিবাহী ট্রেন যাতে পথে আটকে না-পড়ে, সেই জন্য ফাঁকা সময়ে চালানো হচ্ছে মালগাড়ির কনভয়। সেগুলো চলছে মূলত রাতেই। দিনেও ফাঁকা সময় খুঁজে নিয়ে দ্রুত গতিতে পরপর ছোটানো হচ্ছে মালগাড়ি।
রেল সূত্রের খবর, দিনে বা রাতে মালগাড়ির জন্য আলাদা পথ করে দিতে গেলে প্রায়ই বিভিন্ন যাত্রী-ট্রেনের সময়ানুবর্তিতায় বিরূপ প্রভাব পড়ে। আবার মালগাড়ি আটকে রেখে যাত্রিবাহী ট্রেনের জন্য রাস্তা খুলে দিলে তাতেও ব্যাহত হয় পণ্য পরিবহণ। অথচ পণ্য পরিবহণ খাতেই রেলের আয় বেশি।
পরিস্থিতি সামাল দিতে বিশেষ উপায় খুঁজে বার করেছেন রেলকর্তারা। তাতে ধাক্কা খাচ্ছে না যাত্রী-ট্রেনের সময়ানুবর্তিতা। আবার মালগাড়িকেও অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে না। মালগাড়ির জন্য বিশেষ সময় নির্ধারিত হওয়ায় ওই সব ট্রেনকে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি গতিতে ছোটানো সম্ভব হচ্ছে। ফলে লাভবান হচ্ছে পণ্য পরিবহণও। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, সেপ্টেম্বর থেকে কোরবা-বিলাসপুর, ঝাঁসি-কোটা, গাজিয়াবাদ-ইলাহাবাদ-মোগলসরাই, বিলাসপুর-ঝাড়সুগুদা-রৌরকেলা-সহ বিভিন্ন পথে এই নিয়মে মালগাড়ি চালানো হচ্ছে।
কী ভাবে কাজ করছে এই ব্যবস্থা?
রেলের পরিভাষায় ‘কোচিং-ফ্রি’ করিডর তৈরি করা হচ্ছে। দিন ও রাতে যাত্রী-ট্রেন চলাচলের মধ্যে চিহ্নিত করা হচ্ছে খালি সময়। গভীর রাত বা দুপুরের দিকে ফাঁকা সময়ে ১৫-২০ মিনিটের বিরতি দিয়ে নির্দিষ্ট রুটে পরপর ছাড়া হচ্ছে মালগাড়ি। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে একাধিক মালগাড়িকে নির্দিষ্ট দূরত্ব পর্যন্ত রওনা করিয়ে দেওয়া হচ্ছে। কন্ট্রোল রুম থেকে পুরো প্রক্রিয়ায় নজর রাখছেন রেল আধিকারিকেরা। ওই প্রক্রিয়ায় সিগন্যালিং ব্যবস্থার উপরে চাপ কমেছে। পণ্যবাহী ট্রেন এবং যাত্রী-ট্রেন আলাদা সময়ে চলায় দুই ক্ষেত্রেই সময়ানুবর্তিতার উন্নতি ঘটছে বলেও দাবি রেলকর্তাদের।
রেলের এক আধিকারিক জানান, রেলমন্ত্রী স্বয়ং এই প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে উৎাসহ দিচ্ছেন। শিয়ালদহ ডিভিশনের এক রেল আধিকারিক বলেন, “৭-৮ মাস ধরে আমরা এই নীতি অনুসরণ করে ফল পেয়েছি। ‘পিক আওয়ার’ বা ব্যস্ত সময়ে মালগাড়ি চালানো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। গভীর রাতে, দুপুরের খালি সময়ে মালগাড়ি চালানো হচ্ছে।” ওই আধিকারিক আরও জানান, বজবজ বা কলকাতা বন্দর থেকে আসা মালগাড়ি রাতের দিকে মাঝেরহাট বা বালিগঞ্জ দিয়ে চালানো হচ্ছে।