সুপ্রিম কোর্টে আধার-সিদ্ধান্ত পেশ কেন্দ্রের

সরকারের এই অবস্থানের মধ্যেই আজ সাধারণ মানুষকে কার্যত সতর্ক করে দিয়ে আধার-কর্তৃপক্ষ কিন্তু জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত মোবাইল, প্যান কার্ড বা বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের জন্য আধার জমা দেওয়ার সময়সীমা বদল হয়নি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৮ ডিসেম্বর ২০১৭ ০২:৪৭
Share:

গ্রাফিক্স: শৌভিক দেবনাথ।

মোবাইল নম্বরের সঙ্গে আধার নম্বর জুড়ে দেওয়ার সময়সীমা বাড়াতে রাজি নয় কেন্দ্রীয় সরকার। এ জন্য ২০১৮-র ৬ ফেব্রুয়ারির সময়সীমা আপাতত শিথিল করা হচ্ছে না।

Advertisement

তবে বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের জন্য আধার নম্বর যোগ করার সময়সীমা চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর থেকে বাড়িয়ে আগামী বছরের ৩১ মার্চ করতে রাজি হয়েছে মোদী সরকার।

নিজেদের এই অবস্থানের কথা দেশের শীর্ষ আদালতকে জানানোর পাশাপাশিই কেন্দ্রের অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেণুগোপাল জানিয়েছেন, মোবাইল-আধার সংযুক্তিকরণের সময়সীমা বা সরকারি প্রকল্পের জন্য আধারের সময়সীমা আরও বাড়াতে হলে আদালতকেই সেই নির্দেশ দিতে হবে।

Advertisement

সরকারের এই অবস্থানের মধ্যেই আজ সাধারণ মানুষকে কার্যত সতর্ক করে দিয়ে আধার-কর্তৃপক্ষ কিন্তু জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত মোবাইল, প্যান কার্ড বা বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের জন্য আধার জমা দেওয়ার সময়সীমা বদল হয়নি। সরকারি প্রকল্পের ক্ষেত্রে সময়সীমা ৩১ ডিসেম্বরই থাকছে। যে ১৩৯টি প্রকল্পে সরকারি বৃত্তি, স্কলারশিপ, ভাতা বা অন্যান্য আর্থিক সুযোগ-সুবিধা মেলে, সেখানে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে আধার জমা না দিলে সরকারি সুবিধা বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকবে। একই ভাবে মোবাইলের জন্যও আধার জমা দেওয়ার সময়সীমা ৬ ফেব্রুয়ারিই বহাল থাকছে। এই প্রতিটি ক্ষেত্রে আইন অনুযায়ীই আধার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে সুপ্রিম কোর্ট স্থগিতাদেশ দেবে কি না, সে দিকে তাকিয়ে সবাই।

সব ক্ষেত্রে আধার বাধ্যতামূলক করার বিরুদ্ধে একগুচ্ছ মামলা জমে রয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। আজ কয়েক জন মামলাকারীর তরফে আর্জি জানানো হয়, চূড়ান্ত ফয়সালা না হওয়া পর্যন্ত এ বিষয়ে অন্তর্বর্তী সুরাহার বন্দোবস্ত হোক। আধার বাধ্যতামূলক করার উপরে আপাতত স্থগিতাদেশ জারি হোক। শুনানিতে প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র ইঙ্গিত দিয়েছেন, আগামী সপ্তাহে পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চে এ বিষয়ে প্রাথমিক শুনানি হবে। অন্তর্বর্তী সুরাহা দেওয়ার হলে সেই বেঞ্চই দেবে।

আধারের বিরুদ্ধে মামলাকারীদের আইনজীবী শ্যাম দিভানের দাবি ছিল, সরকারকে প্রতিশ্রুতি দিতে হবে সুপ্রিম কোর্টের রায় ঘোষণা পর্যন্ত আধার জমা না দিলে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না। কিন্তু কেন্দ্রের আইনজীবী যুক্তি দেন, সে ক্ষেত্রে কেউই আধার জমা দেবে না। তাঁর যুক্তি, যাঁদের আধার তৈরি হয়ে গিয়েছে, তাঁদের আধার জমা দিতে কোনও সমস্যা নেই।

যদিও মামলাকারীদের বক্তব্য, সব ক্ষেত্রে আধার এ ভাবে জোর করে বাধ্যতামূলক করার অর্থ, ব্যক্তি পরিসরের অধিকারকে খর্ব করা। এই সংক্রান্ত মামলায় এ বছর অগস্টে সুপ্রিম কোর্টের ৯ বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, ব্যক্তি পরিসরের অধিকার দেশের প্রতিটি নাগরিকের মৌলিক অধিকার। তবে কেন্দ্র যে আধার-নীতি থেকে সরতে নারাজ, তা এ দিন কেন্দ্রের আইনজীবীর বক্তব্যেই স্পষ্ট হয়েছে বলে মামলাকারীদের একাংশের অভিযোগ। এখন শীর্ষ আদালতের হাতেই নির্ভর করছে আধারের ভবিষ্যৎ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন