করিমগঞ্জে আগে কখনও অসমের কোনও রাজ্যপাল রাত কাটাননি। সেই ছবি বদলালেন পদ্মনাভ বালকৃষ্ণ আচার্য। রাজ্যের ‘ফার্স্ট লেডি’ কবিতা আচার্যের সঙ্গে করিমগঞ্জের আবর্ত ভবনে রাত্রিযাপন করলেন তিনি।
গত রাতে তিনি এওলাবাড়ি চা বাগানে শ্রমিকদের সঙ্গে দীর্ঘ ক্ষণ কথা বলেন। নৈশাহার করেন শ্রমিকদের সঙ্গেই। রাজ্যপালকে স্বাগত জানাতে শ্রমিকদের নাচের সময় তালে তালে কাসরও বাজান। এতেই খুশি বাগানের শ্রমিকরা।
রাজ্যপাল তাঁদের বাগানে আসবেন, শ্রমিকদের সঙ্গে নৈশাহারও করবেন— তা স্বপ্নেও ভাবেননি শ্যামলী, লক্ষী, নারায়ণ, দিলীপ ওরাংরা। রাত সাড়ে আটটায় সস্ত্রীক এওলাবাড়ি চা বাগানে পৌঁছান রাজ্যপাল। বাগান কর্তৃপক্ষ, শ্রমিকরা ফুলের তোড়া, গামছা দিয়ে তাঁদের স্বাগত জানান। রাজ্যপাল বলেন, ‘‘সব কাজ সমান। কাজের নিরিখে কেউ ছোটবড় হন না।’’ করিমগঞ্জ থেকে আজ হাইলাকান্দি পৌঁছন রাজ্যপাল। জেলা সংশোধনাগারে গিয়ে বন্দিদের যোগব্যায়াম করান। এ দিন সকালে সংশোধনাগারে প্রবেশপথে তার ফলকে বেসরকারি সংস্থার বিজ্ঞাপন দেখতে পান রাজ্যপাল। তাতে প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হন তিনি।
দুপুরে জেলাশাসকের দফতরে প্রশাসনের কর্তা, জেলার বিশিষ্ট নাগরিক ও বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন। মনাছড়ার জওহর নবোদয় বিদ্যালয়ে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার পর শিলচরে ফিরে যান। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, জেলার বিশিষ্ট নাগরিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে হাইলাকান্দির শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন রাজ্যপাল। বৈঠকে হাইলাকান্দির বিধায়ক আনোয়ার হুসেন লস্কর, এস কে রায় হাসপাতালের চিকিৎসক না থাকার কথা রাজ্যপালকে জানান। জেলার অন্য দুই বিধায়ক— নিজামউদ্দিন চৌধুরী এবং সুজামউদ্দিন লস্কর নানা সমস্যার কথা তুলে ধরেন। বৈঠকে বিজেপি নেতা সুব্রত শর্মা মজুমদার হাইলাকান্দি জেলার উপজাতিদের বিভিন্ন সমস্যার প্রসঙ্গ তোলেন। সে জন্য পাল্টা রাজনৈতিক নেতাদের দায়ী করেন রাজ্যপাল। তিনি বলেন, ‘‘নেতারা ঠিকমতো সমাজসেবা না করার জন্যই এমন হচ্ছে।’’ সাংসদ রাধেশ্যাম বিশ্বাস, কংগ্রেস, বিজেপি, ইউডিএফ, অসম গণ পরিষদ, সিপিএম প্রতিনিধিরাও হাজির ছিলেন।