অসমে প্রতি বছর ডায়েরিয়ায় প্রচুর শিশুর মৃত্যু হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সে জন্য দায়ী রোটা-ভাইরাস। তার সঙ্গে লড়তে প্রতিষেধক অভিযান ও দেশের সার্বিক প্রতিষেধক প্রকল্প ‘মিশন ইন্দ্রধনুষ’-এর চতুর্থ পর্যায় আগামী মাসেই শুরু হবে অসমে।
সমীক্ষা অনুযায়ী, প্রতি বছর ভারতে পাঁচ বছরের নীচে থাকা কয়েক লক্ষ শিশুর মৃত্যু হয়। শিশুমৃত্যু ঠেকাতে কেন্দ্র লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে— শিশুমৃত্যুর হার বর্তমানের ৩৭ থেকে কমিয়ে ২০১৯ সালের মধ্যে ২৮ করার চেষ্টা চলবে। সে জন্যই আরও বেশি রাজ্যে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে রোটা-ভাইরাস বিরোধী প্রকল্প। ২০১৬ সালে হিমাচলপ্রদেশ, ওড়িশা, অন্ধ্রপ্রদেশ ও হরিয়ানায় ওই ভাইরাসের প্রতিষেধক দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছিল। এ বছর সেই তালিকায় রাজস্থান, ত্রিপুরা, মধ্যপ্রদেশ ও তামিলনাড়ুর সঙ্গে জুড়ছে অসমও। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, অসমে সদ্যোজাত ও পাঁচ বছরের কমবয়সীদের মৃত্যুর হার জাতীয় গড়ের চেয়ে অনেক বেশি। সমীক্ষা অনুযায়ী, ২০১৪ সালে রাজ্যে প্রতি ১ হাজার সদ্যোজাতের মধ্যে ৬৬টি শিশু মারা গিয়েছিল। জাতীয় গড় যেখানে ৪৫। ২০১৫ সালে পাঁচ বছরের নীচে থাকা বাচ্চাদের মধ্যে প্রতি হাজারে অসমে মারা গিয়েছে ৪৭ জন, যেখানে জাতীয় গড় ৩৭। শিশুমৃত্যুর হার বেশি হলেও রাজ্যে প্রতিষেধকের আওতায় আসা শিশুর হার মাত্র ৪৭.১ শতাংশ। শিশুমৃত্যুর ৪০ শতাংশের পিছনে থাকে মারাত্মক পেটের অসুখ। তার কারণ রোটা। যা বিভিন্ন ভাবে সংক্রমিত হয়। ফেব্রুয়ারিতে রাজ্যে রোটা ভাইরাস প্রতিষেধক অভিযান শুরু হওয়ার কথা থাকলেও, স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, তা শুরু হতে মার্চ হবে। ইতিমধ্যে রোটা-ভাইরাসের প্রতিষেধকের বিষয়ে ওদালগুড়ি ও ডিব্রুগড়ে কর্মশালা হয়েছে। প্রথমে এক বছরের নীচে থাকা সব শিশুকে চার সপ্তাহের ব্যবধানে তিন ‘ডোজ’ করে প্রতিষেধক খাওয়ানো হবে।
পাশাপাশি অসম-সহ উত্তর-পূর্বে শুরু হবে জাতীয় প্রতিষেধক প্রকল্প মিশন ‘ইন্দ্রধনুষ’। তার লক্ষ্য, দেশের সব শিশু ও গর্ভবতীকে প্রতিষেধকের আওতায় নিয়ে আসা। ২০১০ সালের মধ্যে অন্তত ৯০ শতাংশ গর্ভবতী ও শিশুকে নিরাপদ করতে চায় কেন্দ্র। ইতিমধ্যে আগের তিন পর্যায়ে দেশের ৩৫টি রাজ্যের ৪৯৭ জেলার ২ কোটি ৮ লক্ষ শিশু ও ৫৫ লক্ষ চার হাজার গর্ভবতীকে প্রতিষেধক দেওয়া হয়েছে।