তাইহোকু বিমান দুর্ঘটনায় সুভাষচন্দ্র বসুর মৃত্যুর অকাট্য প্রমাণ আছে বলে দাবি করলেন তাঁর নাতি আশিস রায়। জাপানের রেনকোজি মন্দির থেকে বিতর্কিত চিতাভস্ম ভারতে আনার দাবিও জানিয়েছেন তিনি।
গবেষক আশিসবাবুর মতে, অন্তত তিনটি রিপোর্ট থেকে স্পষ্ট জানা যায় যে নেতাজি ১৯৪৫ সালের তাইহোকু দুর্ঘটনাতেই মারা গিয়েছেন। তিনি সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নে যাওয়ার সুযোগই পাননি। আশিসবাবুর কথায়, ‘‘এই তিনটি নথির মধ্যে দু’টি জাপান সরকারের। অন্যটি রয়েছে রাশিয়ার মহাফেজখানায়।’’
তাইহোকু দুর্ঘটনার তত্ত্বের বিরোধীদের অনেকেই মনে করেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নে গিয়েছিলেন সুভাষ। তিনি সেখানে বন্দি অবস্থায় মারা যান।
আশিসবাবুর মতে, সুভাষের সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নে বন্দি থাকার কোনও প্রমাণই নেই। তবে জাপানের আত্মসমর্পণের পরে তিনি সোভিয়েত ইউনিয়নে যাওয়ার পরিকল্পনা করে থাকতে পারেন। কারণ, ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে মস্কো তাঁর পাশে থাকবে বলেই বিশ্বাস করতেন সুভাষ।
আশিসবাবুর কথায়, ‘‘তাইহোকুতে সুভাষচন্দ্রের মৃত্যুর পক্ষে প্রচুর প্রমাণ আছে। হবিবুর রহমান-সহ সাত জনের সাক্ষ্য রয়েছে। তা সত্ত্বেও আমরা কত দিন বিষয়টি অস্বীকার করব জানি না।’’ তাঁর দাবি, টোকিওর রেনকোজি মন্দিরে রাখা চিতাভস্মের ডিএনএ পরীক্ষা করানো প্রয়োজন।
বিজেপি নেতা এবং সুভাষচন্দ্রের নাতি চন্দ্র বসুর বক্তব্য, ‘‘আশিস রায়ের কাছে ওঁর মতের সমর্থনে তথ্যপ্রমাণ থাকলে সেটা প্রকাশ করছেন না কেন? কেন্দ্রীয় সরকার নেতাজি সংক্রান্ত সব নথি প্রকাশ করছে। কিন্তু আশিসবাবু তো ওঁর হাতে থাকা তথ্যপ্রমাণ পরিবারের কাছ থেকেও লুকিয়ে রেখেছেন।’’ চন্দ্রবাবুর দাবি, নেতাজিকে নিয়ে শেষ গবেষণামূলক কাজ করেছে মুখার্জি কমিশন। সেই রিপোর্টেই বলা হয়েছে, নেতাজি বিমান দুর্ঘটনায় মারা যাননি। তাইওয়ান সরকার মুখার্জি কমিশনকে লিখিত ভাবে জানিয়েছিল, সেখানে কোনও বিমান দুর্ঘটনাই হয়নি। আর রেনকোজির মন্দিরে রাখা ভস্ম যে হৃদ্রোগে মৃত এক সেনার, সে কথাও মুখার্জি কমিশনের রিপোর্ট থেকে জানা গিয়েছে। সুতরাং আশিসবাবুর দাবি মানা কষ্টকর। চন্দ্রবাবুর কথায়, ‘‘নেতাজির পরিণতি নিয়ে কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছনোর মতো তথ্যপ্রমাণ কেউই দিতে পারছেন না। আশিসবাবু যদি দিতে পারেন, সকলেই সেটা মেনে নেবেন। তবে পুরনো খারিজ হয়ে যাওয়া তত্ত্ব ফের তুলে ধরলে মানা সম্ভব নয়।’’ নেতাজির আর এক নাতি তৃণমূল সাংসদ সুগত বসুর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।