প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সভার ঠিক আগের দিন ফের হামলা চালাল জঙ্গিরা।
পুলওয়ামা জেলার ত্রালে একটি বুথে আজ গ্রেনেড ছোড়ে জঙ্গিরা। মঙ্গলবার ওই এলাকায় ভোট হওয়ার কথা। গ্রেনেডে গুরুতর আহত হন আর কে রাজাক নামে এক সিআইএসএফ জওয়ান। তাঁকে শ্রীনগরের হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। জম্মু-কাশ্মীরে সেনার উপরে সাম্প্রতিক হামলা ওই রাজ্যে নির্বাচন প্রক্রিয়া ভেস্তে দেওয়ার জন্যই করা হয়েছিল বলে ধারণা গোয়েন্দাদের। আজ ত্রালে ভোটের বুথে হামলা সেই ধারণাকেই আরও দৃঢ় করল বলে মনে করা হচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতে আগামী কাল প্রধানমন্ত্রীর সভার নিরাপত্তা নিয়ে কোনও ঝুঁকি নিতে রাজি নয় কেন্দ্র। আগামী কাল শ্রীনগরের শের-ই-কাশ্মীর স্টেডিয়ামে সভা করবেন মোদী। তার আগে গোটা শ্রীনগরকে কার্যত নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলতে চাইছে নিরাপত্তাবাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলি। ডালগেট, সোনওয়ার, গুপকার রোড, টিআরসি মোড়ে হাজির পুলিশ ও আধাসেনা। জম্মু ও দক্ষিণ কাশ্মীর থেকে আসা সব গাড়ি ঘুরিয়ে দিচ্ছে নিরাপত্তাবাহিনী। ফলে, শ্রীনগর আপাতত যানজটে জেরবার।
শের-ই-কাশ্মীর স্টেডিয়ামের আশপাশের বাড়ি ও দোকানপাটে গত কাল বিকেল থেকে তল্লাশি শুরু করেছে এসপিজি, আধাসেনা ও জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের যৌথ বাহিনী। সভাস্থলের আশপাশের উঁচু বাড়িতে বসানো হয়েছে শার্পশুটার। স্টেডিয়ামের উপরে পাক দিচ্ছে হেলিকপ্টার। প্রধানমন্ত্রীর সভা নিয়ে নজরদারির জন্য সেনার চালকহীন বিমান ব্যবহার করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে নিরাপত্তাবাহিনী।
সেনার ১৫ নং কোরের কম্যান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল সুব্রত সাহার কথায়, “রাজ্যে খবর সংগ্রহের জন্য বিভিন্ন বাহিনীর যৌথ ইনটেলিজেন্স গ্রিড চালু রয়েছে। হেলিকপ্টার থেকেও নজরদারি চলছে।”
সুব্রতবাবুর মতে, সেনার উপরে সম্প্রতি যে জঙ্গিরা হামলা চালিয়েছে তাদের আসল নিশানা ছিল অসামরিক এলাকাই। বিভিন্ন এলাকায় হামলা চালিয়ে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে দিতে চেয়েছিল তারা। জঙ্গি মোকাবিলায় তৈরি বিভিন্ন বাহিনীর যৌথ বেড়াজাল ব্যর্থ হয়েছে, এ কথা মানতে রাজি নন সুব্রতবাবু। তাঁর দাবি, বেড়াজাল সফল হয়েছে বলেই সাধারণ মানুষের উপরে হামলা চালাতে পারেনি জঙ্গিরা।
সেনার দাবি, শুক্রবারের হামলাকারী জঙ্গিরা লস্কর-ই-তইবার সদস্য। ঝিলমের উত্তরে পাক-অধিকৃত কাশ্মীরের একটি এলাকা থেকে তারা অনুপ্রবেশের জন্য রওনা হয়। দু’টি দলে ভাগ হয়ে জঙ্গিরা নওগাম সেক্টরের তুৎ মারি গলি ও উরি সেক্টরে নিয়ন্ত্রণরেখা পেরোয়। জঙ্গিদের কাছ থেকে পাওয়া জিপিএসের অবস্থান সূত্রে এই তথ্য জানা গিয়েছে। জঙ্গিদের সঙ্গে আনা শুকনো খাবার, নাইট ভিশন গগ্লস ও অন্যান্য সরঞ্জাম থেকে এই হামলায় পাকিস্তানি সরকারের মদতের স্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে বলে দাবি সেনার। রাতে জম্মু থেকে দিল্লি যাওয়ার পথে পাঠানকোটে রাজধানী এক্সপ্রেস আটকে তল্লাশি করে পঞ্জাব পুলিশ। জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের কাছ থেকে ‘নির্দিষ্ট তথ্য’ পেয়েই এই তল্লাশি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পঞ্জাব পুলিশ।