অতঃপর! ঘোর চিন্তায় কেন্দ্র, রাজ্যও

জিএসটি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বেঁকে বসার পরে জোড়া উদ্বেগ কেন্দ্র-রাজ্যে। পশ্চিমবঙ্গ নারাজ হলে জুলাই থেকে জিএসটি চালুর প্রক্রিয়া যে বড় ধাক্কা খাবে, তা ভালই জানেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। অর্থ মন্ত্রকের যুক্তি, জিএসটি-তে পণ্য বা পরিষেবার উপরে কেন্দ্র ও রাজ্য একসঙ্গে কর বসাবে।

Advertisement

জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০১৭ ০২:৫০
Share:

প্রতীকী ছবি।

জিএসটি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বেঁকে বসার পরে জোড়া উদ্বেগ কেন্দ্র-রাজ্যে।

Advertisement

পশ্চিমবঙ্গ নারাজ হলে জুলাই থেকে জিএসটি চালুর প্রক্রিয়া যে বড় ধাক্কা খাবে, তা ভালই জানেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। অর্থ মন্ত্রকের যুক্তি, জিএসটি-তে পণ্য বা পরিষেবার উপরে কেন্দ্র ও রাজ্য একসঙ্গে কর বসাবে। এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে পণ্য গেলে তাতে আন্তঃরাজ্য জিএসটি বসবে। সেখানেও কেন্দ্র ও রাজ্যকে একসঙ্গে এগোতে হবে। একটি রাজ্যকে বাদ দিয়ে জিএসটি চালু করা সম্ভব নয়।

আবার নবান্নের আশঙ্কা, রাজনৈতিক ভাবে কেন্দ্রের মোকাবিলা যে ভাবেই করা হোক না কেন সময়ের মধ্যে জিএসটি চালু না হলে রাজস্বের ক্ষতি হবে। কারণ, সংবিধান সংশোধন হয়ে যাওয়ায় এখন সব রাজ্যকেই জিএসটি চালু করতে হবে। অর্থ দফতরের এক কর্তা জানান, সংবিধান সংশোধনের পর সেপ্টেম্বর মাসের পর ভ্যাট আইন এমনিই বিলুপ্ত হয়ে যাবে। ফলে রাজ্যকে সেপ্টেম্বরের পর তা মেনে নিতেই হবে। কিন্তু জুলাইয়ে জিএসটি চালু না হলে মাস দুয়েকের জন্য কর আদায় প্রক্রিয়াটিই বানচাল হতে পারে। তাতে লোকসান হতে পারে প্রায় ৭ থেকে ১০ হাজার কোটি।

Advertisement

কিন্তু একটি রাজ্যকে বাদ দিয়ে কি জিএসটি চালু করা সম্ভব? কর বিশেষজ্ঞ মহেশ জয়সিংহ বলেন, ‘‘একটি রাজ্য জিএসটি-র বাইরে থাকলে আন্তঃরাজ্য লেনদেন কী ভাবে চলবে? কোনও রাজ্য জিএসটি-তে যোগ না দিলে কী হবে, কেন্দ্রের সামনে তার কোনও বিকল্প নেই।’’ জিএসটি-র ক্ষেত্রে রাজ্যের বাণিজ্য কর বিভাগ এবং কেন্দ্রীয় অন্তঃশুল্ক এবং পরিষেবা কর বিভাগ এই দুই পক্ষই কর আদায় করবে। যে সব সংস্থার ব্যবসা বছরে দেড় কোটির কম, তাদের মধ্যে ৯০%-এর করের হিসেব পরীক্ষা করবে রাজ্য। বাকি ১০% সংস্থার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সংস্থা। আর দেড় কোটির বেশি ব্যবসা করে যে সব সংস্থা, তাদের করের হিসেব পরীক্ষার ভাগ হবে আধাআধি। ফলে দু’পক্ষের কর আদায় একসঙ্গেই হওয়া উচিত।

নবান্নের কর্তাদের মতে, যা পরিস্থিতি তাতে আজ হোক বা কাল, জিএসটি চালু করতেই হবে। কিন্তু রাজনীতির টানাপড়েনে বিধানসভায় জিএসটি আইন পাশও পিছিয়ে দিচ্ছে রাজ্য। তাতে আখেরে সমস্যা বাড়বে বলেই মনে করছেন অর্থ দফতরের কর্তারা। তাঁদের বক্তব্য, আইন পাস, বিধি তৈরি, বিজ্ঞপ্তি জারি এবং ট্রেড সার্কুলার দেওয়ার কাজ শেষ করতে বেশ কিছুটা সময় প্রয়োজন। কিন্তু পুরো প্রক্রিয়াটিই এখন বানচাল হওয়ার জোগাড় হয়েছে। অর্থ দফতরের এক কর্তার কথায়, ‘‘আইনত সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময় আছে ঠিকই, কিন্তু প্রশাসনিক ভাবে রাজ্যের পক্ষে আলাদা অবস্থান নেওয়া কঠিন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন